শহরের কর্মব্যস্ততা কাটিয়ে যখন সবাই চায় একটু হাফ ছেড়ে বাঁচতে তখন প্রিয় শহরকে বিদায় জানিয়ে দূরে কোথাও ঘুরে আসলে মন্দ কিসের??? কিন্তু জীবনের গতি যখন চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তখন আমরা অনেকেই এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে আনন্দপূর্ণ স্থানগুলো বেঁছে নিতে পারি না। হ্যা, তাই তো প্রকৃতির রাজ্য আজ নিয়ে যাবে আপনাদের প্রকৃতির কাছাকাছি! যেখানে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন আপনি প্রান ভরে। যেখানে কোন বাঁধাই আর বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। কিছুটা সময়ের জন্য মনে হবে আপনি প্রকৃতির রাজা! কি অবাক লাগছে? প্রকৃতির রাজ্যে আজ আমরা আলোচনা করবো গাজীপুর জেলার চিনা শুখানিয়া গ্রামের খুব জনপ্রিয় ও গ্রাম্যময় পরিবেশে বেড়ে ওঠা অসাধারণ একটি রিসোর্ট নক্ষত্রবাড়ি নিয়ে। যেখানে গেলে গন্ধ পাবেন গ্রামবাংলার।
একাধারে নাট্য অভিনেতা ও পরিচালক তৌকির আহমেদ এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুরে ২০১১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর প্রায় পঁচিশ বিঘা জমির উপর নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টটি নির্মাণ করেন। প্রকৃতির এক নিপুন ছোঁয়ায় তৈরি এ রিসোর্টটি তৌকির আহমেদ ও বিপাশা হায়াত যেন তাদের স্বপ্ন দিয়ে গড়ে তুলেছে তাদের নক্ষত্র বাড়ি। এখানে গেলে আপনার সাদাকালো যান্ত্রিক জীবনে বয়ে এনে দেবে প্রশান্তির ছোঁয়া।
ঢাকা থেকে অদূরে যানবাহনের কালোধোঁয়া মুক্ত পরিবেশে গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুর উপজেলার রাজাবাড়ি বাজার ইউনিয়নের চিনা শুখানিয়া গ্রামে সম্পূর্ণ গ্রাম্য পরিবেশে গড়ে উঠেছে এই নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টটি। রিসোর্টটি শ্রীপুরের কাছে অবস্থিত।
প্রায় পঁচিশ বিঘা জমির উপর নির্মিত এই রিসোর্টটিতে আছে অনেক বড় একটি দীঘি, কৃত্রিম ঝর্ণা, কনফারেন্স হল, সুমিংপুল। এছাড়া এখানে আছে শুটিং স্পট, লাইব্রেরি, শিশুদের জন্য খেলার জায়গা, আছে মুভি- থিয়েটার, চাইলেই ঘুরে বেড়াতে পারেন নৌকা করে পুরো দীঘি জুড়ে।
এখানে প্রতি পরিবারের মোট তিন জন সদস্যরা সুইমিংপুলে সম্পূর্ণ ফ্রিতে সাঁতার কাটতে পারবে। এছাড়া বাকি সদস্যদের জন্য আলাদা চার্জ প্রযোজ্য। প্রায় সময় রিসোর্ট এর দেখাশুনায় কর্তব্যরত লোকেরা এখানে দর্শনার্থীদের জন্য মিউজিক এরেঞ্জমেন্ট, পুলসাইট পার্টি , বারবিকিউ পার্টি ও মাছ ধরার ব্যবস্থা করে থাকে। এছারাও রিসোর্ট থেকে করা হয় মিউজিক্যাল নাইট এর ব্যবস্থা। যা দর্শনার্থীরা ভীষণ ভাবে উপভোগ করে।
মূলত যারা শহরের কর্মব্যস্তময় জীবন, যানজটপূর্ণ পরিবেশ, গাড়ির কালো ধোঁয়া, অশুদ্ধ বাতাস, ইত্যাদি থেকে নিজকেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায় তাদের জন্যই গাজীপুরের নক্ষত্র বাড়ি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে নিবিড় ও শান্তপূর্ণ পরিবেশে গড়ে উঠেছে এ রিসোর্টটি। যেখানে গেলে মানুষ মিশে যায় প্রকৃতি ও মাটির সহিতে।
কাঁচা রাস্তা, প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা লতা-পাতায় ঘেরা ঘরবাড়ি। খড় দিয়ে বানানো ছাদ আর কুঁড়ে ঘর! সব মিলিয়ে এক গ্রাম্য পরিবেশের প্রতিফলন পাওয়া যায় এখানে। সারা রিসোর্ট জুড়ে আছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। মুলত এখানকার তরুলতাই জায়গাটিকে বেশি ইকো-ফ্রেন্ডলি করে তুলেছে।
এখানে রয়েছে তিন ধরনের কটেজ বা আবাসন ব্যবস্থা।
২০১১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর নির্মিত হলেও খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টটি আজ আমাদের সকলের কাছেই অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানে আছে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম ছোট -বড় নানা আকারের কটেজ।
উপরে কাঠ ও বাঁশ দ্বারা নির্মিত মোট ১১ টি কটেজ। যার বারান্দায় দাড়িয়ে রাতে ঝিঝি পোকার ডাক, জোনাকির আলো, ছড়ানো টিপটিপ বাতির আলো জ্বলা-নেভা, পুকুরের পশ্চিম পাশে ব্রিটিশ আমলের বিশাল দরজা-জানালা সম্মলিত একটি ঘর রয়েছে।
এখানে রয়েছে মোট চল্লিশ জন কর্মচারী- কর্মকর্তাবৃন্দ। যারা সর্বক্ষণ এখানকার অতিথি সেবায় ব্যস্ত থাকেন। এ রিসোর্টের কর্মকর্তা সর্বদা অতিথিদের সব ধরনের সেবা দেওয়ার চেষ্টায় থাকেন। আগত পর্যটকটা প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারে। স্বচ্ছ পানির উপরের কটেজগুলোতে থাকে সর্বক্ষণ পর্যটকদের আনাগোনা।পানির উপর কটেজগুলোর প্রতিদিনের ভাড়া ১০ হাজার ৭শত ৫২ টাকা।
চলুন তাহলে এক পলকে কটেজ গুলো সম্পর্কে ধারনা নিয়ে নেওয়া যাকঃ
হোটেল কমপ্লেক্সঃ ছোট-বড় কটেজ ও ওয়াটার বাংলোর পাশাপাশি রিসোর্টটিতে মাত্র ৬৩২৫ টাকা থেকে ৮২২২ টাকার মধ্যে পাবেন নজরকারা সব ডেকোরেশন দিয়ে তৈরী থাকার জন্য হোটেল রুম। যেখানে আপনি পাবেন সকল ধরণের আধুনিকের ছোঁয়া।
হোটেল গুলোতে আপনাকে প্রতিদিন সকালের নাস্তা দেওয়া হবে। এখানে আপনি পাবেন একাধারে ফ্রি ওয়াইফাই, এসি, টিভি, খোলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে চা অথবা কফির কাপে চুমুক দেওয়ার শান্তি -অনুভূতি।
হোটেল কমপ্লেক্সে আছে তিন ধরনের আবাসনঃ
1. কাপল রেগুলারঃ
এখানে আছে কাপলদের জন্য একটি বেড রুম যার ভাড়া মাত্র রাত পর্যন্ত ৬৩২৫ টাকা।
2. টুইন রেগুলারঃ
এখানে আছে থাকার জন্য দুইটি আলাদা বেড যার দৈনিক ভাড়া ৬৯৫৭ টাকা মাত্র।
3. ডিলাক্স কাপল রুমঃ
এখানে আছে একটি মাত্র বেড যার ভাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৮২২২ টাটা মাত্র।
ওয়াটার বাংলো: মূলত পানির উপর কটেজ গুলোকেই ওয়াটার বাংলো হিসেবে পরিচিত। পানির উপর থেকে দাঁড়ালে পুরো রিসোর্টটির ভিউ দেখা যায়। ওয়াটার বাংলোর ধরন ভেদে ভাড়া প্রায় ১০৭৫২ থেকে ২২৭৭০ টাকা।
কাপলরাই বেশিরভাগ সময় এ বাংলো ভাড়া নিয়ে তাদের একাকী আনন্দপূর্ণ সময় কাটায়। লেকের পাশ ঘেঁষে সারিবাঁধা ছোট ছোট কটেজগুলো দেখেই চোখ সরানো যায় না। এর বারান্দায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন চারদিকে সবুজে ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্য্য মন্ডিত লেক ভিউ। ওয়াটার বাংলোতে তিন ধরণের আবাসন আছে।
ওয়াটার বাংলোতে তিন ধরণের আবাসন আছে।
1. ডিলাক্স কটেজঃ
এখানে একটি বেড রুম আছে যেখানে একজন থাকা যাবে। এক রাতের ভাড়া ১০৭৫০ টাকা মাত্র।
2. প্রিমিয়াম সুইটঃ
এখানে আপনি পাবেন খুব সুন্দর দুইটি বেড রুম ও একটি লিভিং রুম যেখানে একসাথে চারজন থাকা যাবে। একদিনে মোট ভাড়া লাগবে ২২৭৭০ টাকা।
3. ফ্যামিলি সুইটঃ
এখানে আপনি পাবেন একাধারে দুইটি বেড রুম যেখানে একসাথে চারজন থাকা যাবে। একদিনে মোট ভাড়া লাগবে ২০২৪০ টাকা মাত্র।
ফ্যামিলি বাংলো: নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টে ফ্যামিলি বাংলো নির্মাণ করা হয়েছে সম্পূর্ণ পরিবারকে কেন্দ্র করে। তাই এখানে কটেজ বা রুমের সংখ্যাও একটু বেশি। এখানে আছে দুইটি বেড রুম, একটি চিলড্রেন রুম, দুইটি বাথরুম, একটি ড্রইং রুম, একটি ডাইনিং রুম, একটি বারান্দা।
পরিবারের মোট পাঁচ জন সদস্য থাকা যাবে। এখানে ভাড়া সব মিলিয়ে প্রতিদিন ২৭৮৩০ টাকা। সাথে পাবেন একাধারে ফ্রি ওয়াইফাই, এসি, টিভি, গরম এবং ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা, হেয়ার ড্রাইয়ার, খলা বারান্দা, চা ও কফি খাওয়ার সুবিধা। পরিবারের সকলকে নিয়ে ঘুরতে গেলে এই বাংলোই আদর্শ।
রিসোর্ট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুনঃ
* লেকে নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা আছে। সাথে আছে লেকে মাছ ধরার সুব্যবস্থাও।
* রিসোর্টে আছে সুইমিংপুল যেখানে ইচ্ছা হলেই সাঁতার কাঁটা যাবে। রয়েছে জাকুজি ।
* রয়েছে ব্যাডমিন্ডন খেলার জন্য বানানো কোর্ট।
* আউটডোর এর পাশাপাশি আছে ইনডোর এর খেলার ব্যবস্থা। যেমন: বোর্ড গেমস,টেবিল টেনিস,ফুটবল,পুল ইত্যাদি।
* শিশুদের জন্য আছে সেখানে আলাদা খেলার জায়গা।
* আছে বই পড়ার জন্য লাইব্রেরী এবং অন্যান্য নানা সুবিধা সোহো কনফারেন্স রুম।
* গেস্টের সুবিদার্থে রিসোর্টটিতে ক্যাম্প,বন,ফায়ার,কনসার্ট ইত্যাদির ব্যবস্থা করা যায়।
নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টটিতে টিকেট জন প্রতি ৫০০ টাকা করে।
বহিরাগত ভেনু চার্জ
ডে আউট গেস্ট জন প্রতি ৫০০ টাকা করে।
সুইমিংপুলে সাঁতার
নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টটিতে সুইমিংপুলে সাঁতার কাঁটতে চাইলে জন প্রতি ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু একই পরিবারের তিন জন সদস্যকে ফ্রিতে পুলে ঢুকতে ও সাঁতার কাঁটতে দেওয়া হয়। আর বাকি সদস্যদের জন প্রতি ৫০০ টাকা করে এন্ট্রি ফি দিয়ে পুলে ঢুকতে হয়।
বোট রাইডিং,পুল,টেবিল টেনিস
অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে বোরিং সময়কে কিছুটা বিষাদ মুক্ত করতে পারবেন যদি লেকের পাড়ে বোট রাইড করেন তাহলে। বোট রাইডিং, পুল, টেবিল টেনিস প্রতি ঘন্টায় জন প্রতি মাত্র ২০০ টাকা করে নিবে।
মাছ ধরা
যাদের মাছ ধরার প্রতি ঝোঁক আছে তারাই কেবল বুঝবে যে মাছ ধরে যে কীরকম একটা আনন্দ লাভ করা যায়। আর সে কথা বিবেচনা করেই অভিনেতা তৌকির ও বিপাশা হায়াৎ তাদের এই রিসোর্টে রেখেছে লেকের পাড়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা। রিসোর্টটিতে আছে জন প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ টাকা করে মাছ ধরার সুব্যবস্থা।
সিঙ্গেল টেন্ড: এখানে ২ টি সিঙ্গেল বেড ২৫০০ টাকা করে।
চেক ইন টাইম ও চেক আউট টাইম
এখানে চেক ইন টাইম গণনা শুরু হয় দুপুর ২ টা থেকে। আর্লি চেক ইন টাইমঃ ১২:৩০ পিএম। এখানে চেক আউট টাইম দুপুর ১২ টা থেকে। লেট চেক আউট টাইমঃ ২:১০ পিএম।
কনফারেন্স হল ভাড়া
কনফারেন্স হল প্রতি শিফট অনুযায়ী ভাড়া ৩০,০০০ টাকা। সাথে সকাল, দুপুর, রাতে নিজস্ব খাবার তো থাকছেই!
প্রকৃতির ছোঁয়ার সাথে সাদৃশ্য স্বরূপ নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টে একবার গেলে যেতে ইচ্ছে করবে বহুবার। আর রিসোর্ট ভাড়া করতে হলে হ্যান্ড ক্যাশ ছাড়াও মুটামটি সব ধরনের কার্ডে তারা টাকা লেনদেন করে। তবে বিশেষ করে তারা নিচের এই তিনটি কার্ডে টাকা লেনদেন করে।
খাবার রেস্টুরেন্ট
নক্ষত্র বাড়ি রিসোর্টে খাবার হোটেল থেকে শুরু করে বলতে গেলে সব কিছুই আছে যা দর্শনার্থীদের চোখে পড়ার মতো। রিসোর্টটির ভিতরে খুব সুন্দর ডেকোরেটেড করা একটি খাবার হোটেল আছে। যেখানে বাংলা, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, থাই ও কন্টিনেন্টাল সব ধরণের খাবার পাওয়া যায়।
এতে করে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পর্যটকদের কোনোরকম খাবার নিয়ে কোনো দুঃশ্চিন্তা ও বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় না। এছাড়াও কেউ যদি বাহিরে খেতে চায় তার জন্য আছে সুব্যবস্থা।কেননা বাহিরে রিসোর্টের পাশেই অনেক ভালো ভালো খাবার রেস্টুরেন্ট আছে।
খুব সহজে আপনিও যেতে পারেন গাজীপুরের এই রিসোর্টটিতে। বিভিন্ন উপায়ে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে নক্ষত্র বাড়ি যেতে হয়।
ঢাকার মহাখালী, বিমান বন্দর বাসস্টপ থেকে সরাসরি ময়মনসিংহ রোড এর বাসে করে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা হয়ে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট যাওয়ার বাসে করে রাজাবাড়ি বাজারে নামতে হবে। রাজাবাড়ি বাজার থেকে নেমে তার ডানে মোড় নিলে দেড় কিলোমিটার রাস্তা এগুলেই চিনা শুখানিয়া গ্রামের বাঙালপাড়া এলাকায় গেলে খুব সহজে আপনি পৌঁছে যাবেন এই নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্টটিতে।
যারা গাজীপুর থেকে সরাসরি যেতে চান তাদের জন্য সহজ উপায় হচ্ছে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ রোড হয়ে ঢাকা-কাপাসিয়া মহাসড়কের রাজাবাড়ি বাজারে নেমে আপনাকে রাজবাড়ি বাজারের অগ্রণী ব্যাঙ্ক এর ডানে যেতে হবে। সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার এগুলেই আপনি পেয়ে যাবেন নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট এন্ড কনফারেন্স সেন্টার।