1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় কেন আকর্ষণীয় গন্তব্য
মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১২ অপরাহ্ন

ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় কেন আকর্ষণীয় গন্তব্য

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে শরতের শুরু মানেই শুধু ঠাণ্ডা হাওয়া বা পাতা ঝরা নয়, বরং লাখো শিক্ষার্থীর কলেজে ফেরার মৌসুমও বটে। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত, যা ভ্রমণকারীদের জন্যও এক অনন্য অভিজ্ঞতার উৎস।

বিশ্বের অনেক দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মানে শুধু পাঠদানকেন্দ্র, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ক্যাম্পাসগুলো নিজস্ব শহরের মতো—রেস্টুরেন্ট, জাদুঘর, ঐতিহাসিক স্থাপনা আর পার্কে ঘেরা। এসব ক্যাম্পাসে এমন সব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, যা থেকে জন্ম নিয়েছে অগণিত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।

অনেকের ধারণা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল খেলা বা বিশাল আউটডোর পার্টির দৃশ্য কেবল সিনেমার কল্পনা। কিন্তু বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্রের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত। ফলে বিদেশি পর্যটকরাও এসব ‘শুধু আমেরিকায় দেখা যায়’ এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারেন।

কলেজ ফুটবলের উন্মাদনা

আগস্ট থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে লাখো দর্শক জড়ো হয় কলেজ ফুটবল উপভোগে। দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে এই খেলাই যেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতীক। খেলার আগে বিশাল পার্কিং লটে চলে ‘টেইলগেট পার্টি’—যেখানে সমর্থকেরা আড্ডা, খাবার ও পানীয় নিয়ে উৎসব করে।

Getty Images The University of Michigan campus is home to one of the largest football stadiums in the world (Credit: Getty Images)
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুটবল ম্যাচে দর্শকরা

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম ‘দ্য বিগ হাউস’ মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের। এখানে ১ লাখ ৭ হাজার দর্শক একসঙ্গে খেলা উপভোগ করেন।

পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে প্রতি মৌসুমে হয় বিখ্যাত ‘হোয়াইট আউট’ ইভেন্ট, যেখানে ১ লাখেরও বেশি দর্শক সাদা পোশাকে গ্যালারি ভরে তোলেন। অন্যদিকে লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির টেইলগেট পার্টিতে দেখা মেলে স্থানীয় খাবার—গাম্বো, ক্রেফিশ আর সঙ্গীতের মিশেলে উৎসবের আমেজ।

এছাড়া নামকরা যেগুলো উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোও নজর কাড়বে যে কারও। যেমন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ১৬৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে আছে ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম, যেখানে হাজারও জীবাশ্ম ও রত্ন প্রদর্শিত হয়। কাছেই আর্নল্ড আর্বোরেটাম—২৮১ একর সবুজ বনভূমি।

Getty Images Harvard University is a fascinating destination for those interested in history or education (Credit: Getty Images)
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক পাথরের ভবন ও সবুজ ক্যাম্পাস চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। ১৭৮৩ সালে এটি এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী রাজধানীও ছিল। এর ফায়ারস্টোন লাইব্রেরিতে রয়েছে দীর্ঘ বইয়ের তাক।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় তার গথিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। বিনামূল্যে ঘুরে দেখা যায় বাইনেকি রেয়ার বুক লাইব্রেরি ও পিবডি মিউজিয়াম, যেখানে রয়েছে ডাইনোসর কঙ্কাল।

কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাসের সাক্ষ্য

যুক্তরাষ্ট্রের ‘হিস্টোরিক্যালি ব্ল্যাক কলেজেস এন্ড ইউনিভার্সিটিস’ কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর শিক্ষার ইতিহাস বহন করে। যে যুগে দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল, তখন শিক্ষার অধিকারহীন মানুষদের জন্য ১৮৩৭ সালে শুরু হয় এই ধারার বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা।

আটলান্টার মোরহাউস কলেজ থেকে পড়েছেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রসহ বহু প্রভাবশালী নেতা। এখানে কিং মেমোরিয়াল চ্যাপেল ও মানবাধিকারভিত্তিক চলচ্চিত্র উৎসব দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

আলাবামা টাসকিগি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন বুকার টি ওয়াশিংটন। এখানে আছে জর্জ ওয়াশিংটন কার্ভার মিউজিয়াম ও ঐতিহাসিক কবরস্থান, যা জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত।

ওয়াশিংটন ডিসির হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হোমকামিং উৎসবের জন্য বিখ্যাত—যেখানে নাচ, প্যারেড ও স্টেপ শো দর্শকদের মুগ্ধ করে।

আটলান্টার স্পেলম্যান কলেজ একমাত্র নারীকেন্দ্রিক কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। এর আর্ট মিউজিয়ামে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের সৃষ্টিশীল শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুধু শিক্ষার কেন্দ্র নয়—সংস্কৃতি, ইতিহাস ও বিনোদনের এক সমৃদ্ধ ভ্রমণগন্তব্যও বটে। যেকোনো পর্যটকের জন্য এগুলো হতে পারে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com