বাংলাদেশের প্রায় সকল ট্রাভেল গ্রুপে ইমিগ্রেশন নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়। কয়েকটি দেশ ঘোরার কারণে আমাদের বেশ কয়েকবার ইমিগ্রেশনের অভিজ্ঞতা হয়েছে, এবং আল্লাহর রহমতে কোনদিন ঝামেলা হয়নি। ইমিগ্রেশন নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটি বেসিক টিপ শেয়ার করছি। যেহেতু আমার অভিজ্ঞতা কম, আমি কিছু মিস করে থাকলে আপনাদের তা শেয়ার করার অনুরোধ করছি।
১। এয়ার টিকেট ক্রয় করার সময় চেষ্টা করবেন একই এয়ারলাইন্সের রাউন্ড ট্রিপ টিকেট কাটার জন্য।
২। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে একই PNR – এর টিকেট কাটবেন। PNR আলাদা হলে আপনাকে প্লেনে বোর্ড করতে না দিতে পারে।
হোটেল বা রিসোর্ট এবং এক্টিভিটিজ বুক:
১। আমরা কোথাও ঘুরতে গেলে হোটেল বা রিসোর্ট বুক তো আগে করি-ই, যাবার আগে সব ধরণের পেমেন্ট করে যাই।
২। সব পেমেন্ট রিসিট আমি সাথে রাখি। এর কারণ, ইমিগ্রেশন অফিসার এডিশনাল ডকুমেন্টস দেখতে চাইলে যাতে তাকে প্রেজেন্ট করা যায়।
১। পাসপোর্টের ডলার এনন্ডোর্সমেন্ট সিল খেয়াল রাখুন।
২। ব্যাংক থেকে এন্ডোর্স করলে স্লিপ সাথে রাখুন।
৩। মানি এক্সচেঞ্জ থেকে এন্ডোর্স করলে বাংলাদেশের ব্যাংক-এর অথরাইজেশান লেটার দেয়া হয়। এটি সাথে রাখুন।
১। ব্যাংক থেকে ডলার কিনলে রিসিট সাথে রাখুন।
২। মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনলে সেটার রিসিট রাখতে পারেন।
৩। আমরা আমাদের কার্ড দিয়ে সব পেমেন্টগুলো করার চেষ্টা করি। এতে ভ্যাজাল/স্ক্যামের সম্ভাবনা কমে আসে।
১। আপনার প্রয়োজনীয় সব কাগজের প্রিন্টেড এবং ডিজিটাল কপি সাথে রাখুন। প্রিন্টেড কাগজগুলো একটা ফাইলে রাখতে পারেন। আমি আমার নিজের জন্য এবং আমার বৌ’র জন্য সেপারেট দুইটা ফাইল বানাই। ফাইলে যেগুলো রাখা উচিত:
· পাসপোর্টের বায়োমেট্রিক পেইজের কপি।
· কোনো এরাইভাল ফর্ম (যেমন mDAC/TDAC) থাকলে সেটার প্রিন্টেড কপি।
· হোটেল এবং রিসোর্টের পেমেন্ট রিসিটের কপি।
· লোকাল ট্রাভেল যেমন ফেরি/শিপ/বাস-এর পেমেন্ট রিসিটের কপি এবং টিকেট।
· কোন ইন্টারনাল ট্যুর (যেমন আইল্যান্ড হপিং) থাকলে সেটার পেমেন্টের কপি।
· ই-টিন আর ট্যাক্স একনলেজমেন্ট এর কপি সাথে রাখতে পারেন।
এই সব ডকুমেন্ট গুলো ক্লাউডে/গুগল ড্রাইভেও সেভ করে রাখতে পারেন।
১। কোন ডিসএম্বার্কেশন ফরম থাকলে ফিলাপ করে ফেলুন।
২। কোন কাস্টম ডিক্লারেশন ফরম থাকলে সেটাও কমপ্লিট করে ফেলুন।
১। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক রাখুন। নার্ভাস হবার কোন কারণ নেই। আপনার কাগজ ঠিক থাকলে ইমিগ্রেশন অফিসারের এর ক্ষমতা নেই আপনার সাথে খারাপ কিছু করার।
২। যেই প্রশ্ন করবে শুধু সেই প্রশ্নের উত্তর দিবেন। এক্সট্রা কথা বা কথা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করলে বিপদ।
৩। ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে রিটার্ন টিকেট-টা সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট ফ্যাক্টর। ইমিগ্রেশন অফিসে চাইলেই টিকেট উনাকে দেখান।
৪। আপনি কোথায় যাবেন কই থাকবেন জিজ্ঞাসা করলে সুন্দর করে উত্তর দিন। আপনি আপনার আইটেনারারি ঠিকমতন না বলতে পারলেই ভ্যাজাল করতে পারে। কিন্তু তার মানে এটা না আইটেনারারি মুখস্ত করবেন। ন্যাচারালালি কথা বলুন।
৫। চেষ্টা করবেন ইংলিশে কথা বলতে এবং সাবলীলভাবে বলতে। এই একটা জিনিষ আপনার ঝামেলা ৯৯% কমিয়ে দিবে।
৬। আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে পারে আমি যেই দেশে যাচ্ছেন ওই দেশে কোন কাজ বা ব্যবসা করবেন কিনা। সুন্দর করে সাফ ভাবে বলে দিন যে আপনার এমন কোন উদ্দেশ্য নেই।
বেশ কিছু দেশে ইমিগ্রেশন প্রসেস ডিজিটাল উপায়ে করা হয়। সে ব্যাপারে হালকা খেয়াল রাখতে হবে।
সাধারণত, যেকোন দেশ এক্সপেক্ট করে যে আপনি তাদের দেশে যাবেন, এবং কাড়ি কাড়ি টাকা ঢালবেন। কাজেই ইমিগ্রেশন অফিসাররা চান আমাদের সেই দেশে এন্ট্রি এলাউ করতে। কিন্তু যেহেতু আমাদের পাসপোর্টের মান অত্যন্ত নিম্নস্তরের, এবং অনেক অসৎ মানুষ বিদেশে ব্যাপক কুকর্ম করেছে, তাই আমাদের অনেক সমস্যা পোহাতে হয়। কিন্তু আপনি যদি সঠিক ভাবে পেপারওয়ার্ক করেন এবং স্মার্টলি সব ডিল করেন, ইমিগ্রেশন প্রসেস কোন জটিল বিষয় নয়।
Like this:
Like Loading...