ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকস-বিএলএস থেকে শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দেশের কর্মসংস্থানের বাজারে মন্দা অব্যাহত রয়েছে। টানা তৃতীয় মাসের মতো কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিয়ে পূরণ হয়নি অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা। ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকস-বিএলএস থেকে শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বেকারত্বের হার চার বছরের মধ্যে বেড়ে চার দশমিক তিন শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের জব রিপোর্ট দেখে বিএলএস কমিশনারকে বরখাস্তের মাসখানেক পরও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ার জেরোম পাওয়েলকে দুষেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
লেবার সেক্রেটারি লরি শ্যাভেজ ডেরিমার বলছেন, বিএলএস প্রতিবেদন দেখে পাওয়েলের উচিত লজ্জা পাওয়া। গত জুলাইয়ের কর্মসংস্থান প্রতিবেদন দেখে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এতটাই হতাশ হয়েছিলেন যে, এর পুরো দায় তৎকালীন বিএলএস কমিশনার এরিকা ম্যাক এন্টারফারের ওপর চাপিয়ে তাকে বরখাস্ত করেছিলেন।
ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, এরিকা তথ্য-উপাত্তে কারসাজি করেছেন, কিন্তু আগস্টের জব রিপোর্ট পেয়ে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বার্তায় এর পুরো দায় তিনি চাপিয়েছেন ফেড রিজার্ভ চেয়ার জেরম পাওয়েলের কাঁধে। সুদের হার না কমানোয় এমন অবস্থা হয়েছে বলে মনে করছেন ট্রাম্প।
বিএলএসের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, আগস্টে মাত্র ২২ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যা অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশার তিন ভাগের এক ভাগ। বেকারত্বের হার চার দশমিক দুই শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার দশমিক তিন শতাংশে, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থাৎ চাকরির বাজারের প্রতিটি সূচকেই নেতিবাচক প্রবণতা।
সিএনএন বলছে, টানা তৃতীয় মাসের মতো নতুন চাকরি তৈরি নিয়ে অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তার মানে দেশের কর্মসংস্থানের বাজারে মন্দা অব্যাহত রয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি উভয় খাতের কর্মসংস্থানেই জনবল নিয়োগে অনীহা দেখা যাচ্ছে। যদিও কমার্স সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লাডনিকের আশা, বেশি দিন থাকবে না এমন পরিস্থিতি।
তিনি অবশ্য কর্মসংস্থানের তথ্য-উপাত্তে নিম্নমুখী প্রবণতার জন্য লেবার ডিপার্টমেন্টে ট্রাম্পবিরোধী কারসাজি এবং বিএলএসের কারিগরির ত্রুটি দেখছেন, যা আগামীতে সংশোধন করা হবে।
লেবার সেক্রেটারি লরি শ্যাভেজ ডেরিমার বলছেন, প্রেসিডেন্ট বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন ফেড রিজার্ভ প্রধান। অবশ্য ট্রাম্পের শুল্কনীতি এই ক্ষেত্রে কতটা প্রভাবকের ভূমিকা রেখেছে সেই বিষয়ে কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন শ্যাভেজ। অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিল ডিরেক্টরকেভিন হেসেটো মনে করেন, সুদের হার কমানো নিয়ে টালবাহানা কর্মসংস্থানের সূচকে বড় প্রভাব রেখেছে।
এমন বাস্তবতায় সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়নে চলতি মাসের ১৭ তারিখে ফেড কর্মকর্তাদের যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, তাতে ফেড রিজার্ভ চেয়ার জেরম পাওয়েল সুদের হার কমানোর ঘোষণা দিতে পারেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সুদের হার দশমিক ২৫ থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর ঘোষণা আসতে পারে।