শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে রবিবার আশুরা উপলক্ষ্যে ছুটি যোগ হওয়ায় কর্মজীবীরা টানা ৩ দিনের ছুটি পেয়ছেন। এই ছুটিতে উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে কক্সবাজারে।
আজ শনিবার (৫ জুলাই)সকাল নয়টায় সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, শত শত পর্যটক সমুদ্রের পানিতে নেমে সাঁতার কাটছেন। বেশির ভাগ পর্যটক বালুচরে দাঁড়িয়ে বা চেয়ার-ছাতার (কিটকট) নিচে বসে আড্ডায় মেতে আছেন। সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, ঝিরিঝিরি বৃষ্টিও।
সি-সেফ লাইফ গার্ডের কয়েকজন কর্মী চৌকিতে বসে পর্যটকদের নজরদারি করছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের নিযুক্ত বিচ কর্মীরাও পর্যটকদের গোসলসহ বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক করছেন।
কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ী আবু শামা স্ত্রী ও ৬ বছরের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘বছরে অন্তত একবার পরিবারের সঙ্গে দূরে কোথাও ঘুরতে যাই। সেই তালিকার শীর্ষেই কক্সবাজার থাকে। এখানে ডুবসাঁতার, বিকেলে পশ্চিম আকাশে সূর্যাস্ত উপভোগ—এই দুটিই প্রধান আকর্ষণ।’
কলাতলী সৈকতেও কয়েক শ পর্যটকের সমাগম ছিল। সৈকতের এক কিলোমিটারজুড়ে বসানো হয়েছে পাঁচ শতাধিক চেয়ার।
ঢাকার রমনার আনোয়ার সাদিক স্ত্রীকে নিয়ে ছবি তুলছিলেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভটাও সুন্দর। পুরো মেরিন ড্রাইভটায় ঘুরে এলেই ভ্রমণটা সার্থক মনে হয়।’
হোটেলমালিকেরা জানান, ভ্রমণে আসা পর্যটকের অন্তত ৯০ শতাংশই মেরিন ড্রাইভে ঘুরতে যান। বিশেষ করে বেলা ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই সড়ক পর্যটকে ভরে ওঠে। কলাতলীর হাঙর ভাস্কর্য মোড়, কলাতলী সড়ক ও রেজুখাল সেতু এলাকায় যানজটও লেগে থাকে।
সকালে সৈকতে গোসল, বিচ বাইকে চড়া, স্পিডবোটে ঘোরার পর পর্যটকেরা দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেলে মেরিন ড্রাইভে যান। কক্সবাজার শহর থেকে মাইক্রোবাসে ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভের শেষ প্রান্ত টেকনাফ পর্যন্ত যেতে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।
মেরিন ড্রাইভের ইনানী ও পাটোয়ারটেক সৈকতেও ভিড় থাকে। যাঁরা জাহাজ বন্ধ থাকায় সেন্ট মার্টিন যেতে পারছেন না, তাঁদের বিকল্প গন্তব্য এই সৈকতগুলো। ভাটার সময় বড় বড় পাথর ভেসে উঠলে সেগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন অনেকে।
সিলেটের সাইফুল-নাজমা দম্পতি পাটোয়ারটেকে এসেছেন। নাজমা বলেন, ‘সুগন্ধায় এত ভিড় যে গোসল করা কঠিন। তাই এখানে চলে এলাম। এখানে তুলনামূলক কম ভিড়।’
টেকনাফ সৈকতের বালুচরে কয়েক শ রঙিন নৌকা। নৌকায় উঠে বা পাশে দাঁড়িয়ে পর্যটকেরা ছবি তোলেন। অনেকে সেখান থেকে নেটং পাহাড়ে যান। সেখান থেকে নাফ নদী, জালিয়ার দ্বীপ ও ওপারের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দেখা যায়।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা সবসময়ই নিয়ে থাকে। ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে।