কাশ্মীরে হামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভারতীয় এয়ারলাইনসগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। এতে ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া এরই মধ্যে যাত্রী পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে। এক্স–এ দেওয়া পোস্টে এই দুই বিমান সংস্থা জানিয়েছে, পরিবর্তিত রুটের কারণে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সময়সূচি প্রভাবিত হতে পারে, যার ফলে ‘বিকল্প দীর্ঘ পথ’ বেছে নিতে হবে।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আমেরিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু ফ্লাইট এতে প্রভাবিত হতে পারে।
উভয় বিমান সংস্থাই এই অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং যাত্রীদের বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে ফ্লাইটের সময় এবং সূচি পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ করেছে।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে পাকিস্তান সমস্ত ভারতীয় মালিকানাধীন বা পরিচালিত এয়ারলাইনসের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।
পাহালগাম হামলার প্রাথমিক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ভারত ভিসা স্থগিত এবং সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ একগুচ্ছ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরেই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
চুক্তি স্থগিতের বিষয়ে—যার অধীনে পাকিস্তান তার নদীর পানির সরবরাহের আনুমানিক ৮০ শতাংশ পায়—ইসলামাবাদ বলেছে যে তাদের অধিকার ‘কেড়ে নেওয়ার’ যে কোনো প্রচেষ্টাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ হিসেবে দেখা হবে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে জম্মু–কাশ্মীরে হামলায় পাহালগামে বেসামরিক নাগরিক ও পর্যটকসহ ২৬ জন নিহত হন। গত কয়েক বছরের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু–কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হওয়ার পর এটি ভারতে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সন্ত্রাসী এবং তাদের মদদদাতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তাঁর প্রশাসন ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের ‘শনাক্ত এবং শাস্তি’ দেবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী গত বুধবার ভোরে সৌদি আরবে সফর সংক্ষিপ্ত করে ফেরার সময় পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে যান।
এদিকে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে অজানা একটি সংগঠন কাশ্মীরে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কয়েকজন বন্দুকধারীর স্কেচ প্রকাশ করেছে এবং তাদের ধরতে অভিযান চলছে। তবে হামলার ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।