জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের ইতি টানতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার এই উদ্যোগে বার বার বাধ সেধেছে বিভিন্ন নিম্ন আদালত। তাই এবার ট্রাম্প তার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
গত জানুয়ারিতে একটি ফেডারেল আদালতের বিচারক ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের নির্বাহী আদেশকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিলেন।
এর কয়েকদিন পরই মেরিল্যান্ডের একটি আদালতের বিচারক ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে দেশের ২৫০ বছরের পুরোনো জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের ইতিহাসের সম্পূর্ণ-বিরোধী বলে রায় দেন।
নিম্ন আদালতগুলোর রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়ার ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধ আপিল আদালতগুলো বারবারই নাকচ করে দিয়েছে।
কেবল মেরিল্যান্ডের ফেডারেল আদালত নয়, ওয়াশিংটন এবং ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল আদালতও ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ কার্যকরের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
নিম্ন আদালতে বার বার ধাক্কা খেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প আর্জি জানিয়েছেন এই নিম্ন আদালতগুলোর নির্দেশ বা নিষেধাজ্ঞার পরিধি সীমিত করার।
নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে জরুরি ভিত্তিতে মামলা শোনার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পরই ট্রাম্প সে দেশের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বহু বছরের পুরনো আইন বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। হোয়াইট হাউজে প্রবেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি।
গত ২১ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশও সই করেন ট্রাম্প। কিন্তু তার এই উদ্যোগ ধাক্কা খায় একাধিক মামলার কারণে। ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে অভিবাসীদের সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন।
এরপরে মামলা করেন এক নারী এবং তারপর ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন ২২টি প্রদেশ এক হয়ে মামলা করে। এসব মামলাতেই বিচারকরা ট্রাম্পের উদ্যোগের বিপক্ষে রায় দেন এবং ট্রাম্পের আদেশ কার্যকর স্থগিত করেন।
এবার সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের আবেদন সবুজ সঙ্কেত দিলে আইন বদলাতে পারে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ১৪তম সংশোধনীতে বলা আছে, সেদেশে কেউ জন্মালেই সেখানকার নাগরিকত্ব মিলবে।
এরই বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। তার আদেশে বলা হয়েছে, যারা অবৈধভাবে বা শিক্ষা-পর্যটনসহ সাময়িক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সন্তান জন্ম দেবেন, তাদের সন্তান আর মার্কিন নাগরিকত্ব পাবেন না।
এমনকি বাবা-মায়ের মধ্যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কিংবা স্থায়ী বাসিন্দা না হলে তাদের সন্তানও নাগরিকত্ব পাবেন না।