অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আমেরিকা হবে আতঙ্কের এবং সিটিজেনদের জন্য বাড়বে সুযোগ-সুবিধা। উন্নত হবে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার মান। কমবে অপরাধ। – এসব শুনতে অনেকটা খটকা লাগলেও ক্ষমতা গ্রহণের পর সেই পথেই হাঁটছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আমেরিকাকে মহান করবেন।
ট্রাম্পের যেমন কথা তেমন কাজ। নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শুরু হয়েছে ইমিগ্রেশন ক্র্যাকডাউন। এরই অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। ২৬ জানুয়ারি রোববার থেকে শুরু হওয়া এই ক্র্যাকডাউনে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার হচ্ছেন। তাদের বেশিরভাগকে সরাসরি নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ট্রাম্পের শাসনামলে।
ভালো ছিল দেশটির নাগরিক ও বৈধ অভিবাসীরা। সারা বিশ্বে যুদ্ধ বন্ধ ছিল। এত কিছুর পরও ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। কিন্তু গত চার বছর প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভেঙে পড়ে। দেখা দেয় মূদ্রাস্ফিতি। জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে। অপরাধের মাত্রা বাড়তে থাকে হু হু করে। এ অবস্থার মধ্যে ‘মেক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন’ স্লোগান নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন ট্রাম্প। দলমত নির্বিশেষ সবাই ভোট দেন তাকে। বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে হোয়াইট হাউস প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।
২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। প্রথম দিনেই তিনি শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এরপর একের পর এক আদেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসী আছে। তাদের তাড়ালে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তখন বিভিন্ন সেক্টরে ছোট বড় কাজের জন্য লোক লাগবে। তখন বৈধভাবে লোক আসবে এই আমেরিকায়। বৈধভাবে আমেরিকা আসার ফলে সহজে তারা গ্রিনকার্ডও পাবেন। ট্রাম্প সেই ব্যবস্থাই চালু করতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, আমেরিকা ট্রাম্পের আমলে আবার গ্রেট হবেই।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে বহু অভিবাসী প্রবেশ করেছিলেন। তাদের বড় অংশের ঠিকানা হয়েছিল টেক্সাস। তখন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এই অভিবাসীদের বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি শাসিত শহরগুলোয় পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এখন অবৈধ অভিবাসীদের খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বাসা-বাড়ি আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে দেশটির বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার সদস্যরা। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন এফবিআই ও ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ (ডিইএ) বিচার বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। অভিবাসন, মাদক, অস্ত্র আর কাস্টমস বিষয়ক ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের অভিযানে গ্রেফতারের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।