রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০২ পূর্বাহ্ন

পঞ্চগড়ে শোভা ছড়াচ্ছে টিউলিপ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় ফুটেছে টিউলিপ ফুল। মাঘের শীতে বাগানজুড়ে ফুটে থাকা এসব বর্ণিল ফুল জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনের।

গতকাল রোববার বিকেলে দর্জিপাড়ার টিউলিপবাগানে গিয়ে দেখা যায়, সূর্যের আলো আর তাপ নিয়ন্ত্রণ করা বিশেষ ছাউনির নিচে সারি সারি টিউলিপ ফুল ফুটেছে। দর্শনার্থীদের কেউ ফুলগুলো ছুঁয়ে দেখছেন, কেউ ছবি তুলছেন, কেউ–বা মুঠোফোনে ভিডিও কলে দূরে থাকা স্বজনদের দেখাচ্ছেন টিউলিপের সৌন্দর্য। কেউ কেউ আবার ফুল কিনে ফিরছেন বাড়িতে।

টিউলিপবাগানে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দর্শনার্থীদের ভিড়। দর্শনার্থীরা জনপ্রতি ৫০ টাকার টিকিট কেটে বাগানে ঢুকে উপভোগ করছেন টিউলিপের সৌন্দর্য।

তেঁতুলিয়া উপজেলায় এবার চতুর্থবারের মতো ক্ষুদ্র চাষিদের মাধ্যমে প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে খামার পর্যায়ে করা হয়েছে শীতের দেশের ফুল টিউলিপের চাষ। টিউলিপ উৎপাদনের এই উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)। প্রকল্পটিতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।

বাগান থেকে একেকটি ফুলের স্টিক ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে
বাগান থেকে একেকটি ফুলের স্টিক ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছেছবি: প্রথম আলো

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতপ্রধান দেশে টিউলিপ ফুল ভালো হয়। টিউলিপ ফুল চাষের ক্ষেত্রে দিনের বেলা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহনশীল ধরা হয়। এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা হলে ফুল যথাযথভাবে না-ও ফুটতে পারে। স্বাভাবিকভাবে রোপণের ১৮ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কলি আসতে শুরু করে। ২৫ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত টিউলিপ ফুল স্থায়ী হয়।

তেঁতুলিয়া উপজেলায় এবার চতুর্থবারের মতো প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে টিউলিপের চাষ হয়েছে
তেঁতুলিয়া উপজেলায় এবার চতুর্থবারের মতো প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে টিউলিপের চাষ হয়েছেছবি: প্রথম আলো

সানজানা মেরি নামে ঠাকুরগাঁও থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, ‘অনেক ভালো লাগল টিউলিপ দেখে। তবে টিউলিপবাগানে প্রবেশমূল্য যে ৫০ টাকা করা হয়েছে, সেটা আরেকটু কমালে সাধারণ মানুষের জন্য ভালো হতো।’

টিউলিপ চাষি (উদ্যোক্তা) আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ‘পিকেএসএফ ও ইএসডিওর সহযোগিতায় এবার আমরা ১৩ জন নারী উদ্যোক্তা ৯ প্রজাতির টিউলিপ চাষ করেছি। ফুল ফোটার পর থেকে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে ভিড় করছেন। নেদারল্যান্ডস থেকে টিউলিপের একেকটি বাল্ব আনতে আমাদের প্রায় ১০০ টাকা করে খরচ পড়েছে। বর্তমানে বাগান থেকেই একেকটি ফুলের স্টিক ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এসব ফুল ঢাকায়ও পাঠানো হচ্ছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে উৎপাদন করা এই ফুল বিক্রি করতে পারায় আমার আর্থিকভাবে বেশ উপকৃত হচ্ছি।’

চতুর্থবারের মতো ক্ষুদ্র চাষিদের মাধ্যমে প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে খামার পর্যায়ে টিউলিপের চাষ হয়েছে
চতুর্থবারের মতো ক্ষুদ্র চাষিদের মাধ্যমে প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে খামার পর্যায়ে টিউলিপের চাষ হয়েছে

ইএসডিওর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মুহম্মদ শহীদ উজ জামান বলেন, এবার চতুর্থবারের মতো তেঁতুলিয়ায় নারী উদ্যোক্তারা টিউলিপ ফুল ফুটিয়েছেন। গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে সাবলম্বী করে তোলার পাশাপাশি তেঁতুলিয়াকে ইকো ট্যুরিজমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

২০২২ সালে তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো পাইলট প্রকল্প হিসেবে টিউলিপ ফুলের চাষ হয়। সেবার উপজেলার শারিয়ালজোত ও দর্জিপাড়া গ্রামের ৮ জন নারী উদ্যোক্তা ৪০ শতাংশ জমিতে ৬ প্রজাতির ৪০ হাজার টিউলিপ ফুল চাষ করেছিলেন।

প্রথম আলো

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com