শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৬ অপরাহ্ন

বিমানের টিকিটের চড়া দাম, ক্ষোভ মালয়েশিয়া প্রবাসীদের

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ প্রবাসী বসবাস করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ছুটিতে নাড়ির টানে দেশে ফিরতে চান। কিন্তু এই স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিমান টিকিটের উচ্চমূল্য। কয়েক বছর ধরে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে বিমান ভাড়ার দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

অনেক প্রবাসী দেশে ফিরতে চাইলেও টিকিটের চড়া মূল্যের কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাদের অভিযোগ, কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রয়েছে। তারা মনে করেন, সিন্ডিকেট প্রথা বন্ধ না হলে প্রবাসীদের জন্য কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে না।

এয়ারলাইন্স কর্তৃক টিকিট সিন্ডিকেট নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা বলেন, ছাত্র জনতার জুলাই বিপ্লবের সময় শেখ হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে তারা দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করেছিলেন। প্রয়োজনে টিকিট সিন্ডিকেট বন্ধ না হলে আবারও রেমিট্যান্স শাটডাউনের আন্দোলনে যাবেন তারা।

রাজধানী কুয়ালালামপুরের বিভিন্ন ট্র্যাভেল এজেন্সি ঘুরে জানা গেছে, অনেকেই বিমানের টিকিটের উচ্চমূল্য শুনে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। প্রবাসীদের শুধু বিমান ভাড়ার চিন্তাই করতে হয় না, বরং দেশে ফেরার জন্য অন্যান্য খরচও মাথায় রাখতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক খরচ ও বেড়ানোর ব্যয়।

বিমান ভাড়া আকাশছোঁয়া হলে একজন প্রবাসীর জন্য দেশে ফেরা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে পরিবারকে জানিয়ে দিচ্ছেন, এবার আর বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়।

বর্তমানে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে পাঁচটি এয়ারলাইনস সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা, মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস, এয়ার এশিয়া ও বাতিক (মালিন্দো) এয়ার। এরা সপ্তাহে অর্ধশতাধিক ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এছাড়া, থাই এয়ারওয়েজ, শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, হিমালয়া এয়ারলাইনস, ইন্ডিগো এয়ারলাইনস ও ক্যাথে প্যাসিফিক বিভিন্ন জায়গায় বিরতি দিয়ে এই রুটে যাত্রী পরিবহন করে।

সম্প্রতি এই রুটে টিকিটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, এ সুযোগে টিকিটিং কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটভিত্তিক গ্রুপ টিকিট ব্যবসা ও এয়ারলাইনসগুলোর নানা অজুহাতে টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে।

মাত্র তিন মাস আগেও এই রুটের বিমানভাড়া সবার নাগালের মধ্যেই ছিল। গত বছরের জুন-জুলাইয়ে ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো ২০-২৫ হাজার টাকায় টিকিট বিক্রি করেছে। বর্তমানে রিটার্ন (আসা যাওয়া) টিকিট দুই হাজার থেকে তিন হাজার রিঙ্গিত ও ওয়ানওয়ে টিকিট ১৫ শ থেকে ১৮ শ রিঙ্গিতে কিনতে হচ্ছে।

দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ জানায়, টিকিটের দাম বাড়লে তাদের কিছু করার থাকে না।

কয়েকটি ট্র্যাভেল এজেন্সি জানিয়েছে, তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ এয়ারলাইনসের সঙ্গে জড়িত। তারা নির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে কাজ করে। সাধারণ গ্রাহকরা অনলাইনের চেয়ে এজেন্সির মাধ্যমেই টিকিট কেনেন, ফলে এয়ারলাইনসগুলো বি-টু-বি এজেন্সিগুলোকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে একটি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানভাড়া বৃদ্ধির মূল কারণ হলো চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্যহীনতা। চাহিদা বেশি থাকলে ও সরবরাহ কম থাকলে টিকিটের দাম বাড়ে।

অন্যদিকে, যাত্রীদের চাপ বাড়ায় ভাড়াও বেড়েছে বলে স্বীকার করেছেন এয়ারলাইনস কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে, তারা ডলার ও জেট ফুয়েলের মূল্যবৃদ্ধিকেও দায়ী করছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com