ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দাসত্বের নতুন ধরনসহ মানবাধিকার আইনের আওতায় নিরাপত্তা দেওয়া নিষিদ্ধ করে রাখতে চায়। দেশটির কয়েকজন মন্ত্রী এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন, যা চাপে ফেলছে স্টারমার সরকারকে।
গত বছরের জুলাই মাসে ক্ষমতায় আসে লেবার পার্টি। এর আগের কনজারভেটিভ সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী, তারাও এই বিশেষ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখবে। যে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যুক্তরাজ্য থেকে বের করে দেওয়া হতো, তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে নব্য দাসত্ব আইনের আবহে নিরাপত্তা দাবি করতেন, যাতে তাঁদের যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার না করা যায়।
নতুন নিষেধাজ্ঞাটি এই নিরাপত্তাকে নাকচ করে। এর সঙ্গে অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসনপ্রত্যাশীদেরও ২৮ দিন আটক করে রাখার কথা বলা হয়েছে নিষেধাজ্ঞায়।
প্রতিবছর হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ডিঙিনৌকায় চেপে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে এসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এমন অভিবাসন অনেক ব্রিটিশ ভোটারের চিন্তার কারণ। গত বছর নির্বাচনের আবহে কিয়ার স্টারমার কথা দেন যে তিনি মানব পাচারের সংগঠিত চক্রগুলোকে ‘ভেঙে দেবেন’।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি নতুন বিল পেশ করা হয়, যেটির নাম ‘দ্য বর্ডার সিকিউরিটি, অ্যাসাইলাম অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিল’। এই বিল পাস হলে পুলিশ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মুঠোফোন হাতিয়ে তাঁর সাহায্যে মানব পাচারকারীদের শনাক্ত করবে। এতে সেসব ব্যক্তিকে খোঁজা সম্ভব হবে, যাঁরা ছোট ছোট নৌকা বানিয়ে বা তেমন নৌকার জন্য যন্ত্রাংশ বানিয়ে অবৈধ পন্থায় মানুষকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসেন।
২০২৩ সালে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লেবার পার্টির সংসদ সদস্যরা পার্লামেন্টে ভোট দেন। স্টারমার বলেন, ওই সময় তা না করলে যুক্তরাজ্যে পাচার হয়ে আসা নারীদের বাড়তি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হতো না।
২০২৫ সালের শুরুতে এমন কী বদলে গেল, যাতে স্টারমার এই পদক্ষেপ নিলেন? জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি স্টারমারের অফিস বা তিনি নিজেও।
ইউগভ সংস্থার একটি জরিপের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অভিবাসন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর নৌকায় চেপে ৩৬ হাজার ৮১৬ জন দেশটিতে এসেছেন; যা আগের বছরের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি।