শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

ডিপসিকের মূল কারিগর চীনের এআই কন্যা লুও ফুলি

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

চীনের নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই মডেল ডিপসিক বিশ্বে আলোড়ন তুলেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি ওপেনএআই–এর চ্যাটজিপিটি, গুগলের জেমিনি ও ক্লডের মতো শক্তিশালী এআই প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে গেছে। ডিপসিকের এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে রয়েছে চীনের তরুণ কিছু উদ্ভাবকের মেধা ও শ্রম। যারা চীনের সীমিত সম্পদ ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নিজেদের মেধা দিয়ে অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তি তৈরি করেছেন।

চীনের এই মেধাবী উদ্ভাবকদের একজন লুও ফুলি। ২৯ বছর বয়সী এই এআই গবেষক ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (এনএলপি)–এ অসাধারণ অবদান রেখেছেন।

লুও ফুলি প্রথমে বেইজিং নরমাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন। ফুলির কাছে শুরুতে এই বিষয়টি কঠিন মনে হলেও ধীরে ধীরে তিনি এ বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে পিকিং ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব কম্পিউটেশনাল লিঙ্গুইস্টিকে পড়ার সুযোগ পান।

২০১৯ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটেশনাল লিঙ্গুইস্টিক্স কনফারেন্সে আটটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লুও ফুলি। তখনই তিনি প্রযুক্তি জগতের বড় বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নজর কাড়েন।

ফুলি আলিবাবার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ড্যামো (ডিএএমও) একাডেমিতে গবেষক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি ভেকো (ভিইসিও) নামে একটি মাল্টিলিঙ্গুয়াল প্রি–ট্রেইনিং মডেল তৈরি করেন এবং আলিবাবার ওপেনসোর্স এলিস–মাইন্ড প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

২০২২ সালে ফুলি ডিপসিকে যোগ দেন এবং ডিপসিক (ভি–২) মডেল তৈরিতে মূল ভূমিকা রাখেন।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডিপসিকে কাজ করার সময় লুও ফুলির কাজের দক্ষতায় মুগ্ধ হন শাওমির প্রতিষ্ঠাতা লেই জুন। তিনি ফুলিকে বার্ষিক ১০ মিলিয়ন ইউয়ান বেতনে শাওমিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে এই প্রস্তাবে সাড়া দেননি ফুলি। তিনি ২০২২ সাল থেকে ডিপসিকের সঙ্গেই কাজ করছেন।

২০২৩ সালে চীনের হাংজুতে ডিপসিক প্রতিষ্ঠা করেন ৪০ বছর বয়সী লিয়াং ওয়েনফেং। স্বল্প খরচে তৈরি চীনা এআই চ্যাটবটটি বর্তমানে উন্নত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) নিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সবার চেয়ে এগিয়ে গেছে।

লুও ফুলি ডিপসিক (ভি-২) মডেল তৈরিতে মূল ভূমিকা রাখেন। ছবি: উইচ্যাট

লুও ফুলি ডিপসিক (ভি-২) মডেল তৈরিতে মূল ভূমিকা রাখেন। ছবি: উইচ্যাট

এআই বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিপসিক ৩–এর পারফরম্যান্স চ্যাটবট মেটার লামা ৩.১ ও আলিবাবার কুয়েন ২.৫–এর সমতুল্য। এটি চ্যাটজিপিটি–৪ও ও ক্লড ৩.৫ সনেটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম।

এ ছাড়া ডিপসিকের আর–১ মডেল, ওপেনএআই–এর মিনি মডেলকেও ছাড়িয়ে গেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্টিফিশিয়াল অ্যানালাইসিসের তথ্য অনুযায়ী, ডিপসিকের এআই মডেল গুগল, মেটা ও অ্যানথ্রপিকের তৈরি মডেলগুলোর তুলনায় অনেক উন্নত।

ডিপসিক মাত্র এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে চ্যাটজিপিটিকে পেছনে ফেলে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের শীর্ষ স্থান দখল করেছে। এর ফলে এনভিডিয়া, মাইক্রোসফট ও মেটার মতো মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি যারা এআই শিল্পের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে তাদের শেয়ারমূল্য কমতে শুরু করেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com