সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৫ অপরাহ্ন

যেখানে নিজেদের স্ত্রীর সঙ্গে পর্যটকদের সঙ্গম করতে দেন স্বামীরা

  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

গভীর রহস্যে ভরা মহাদেশ আফ্রিকা। এখানে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট দেশ ও সেখানকার আদিম জনগোষ্ঠী। তাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এশিয়া বা পশ্চিমা দুনিয়ার সংস্কৃতির আকাশ-পাতাল ফারাক। আধুনিক সমাজের কাছে তাদের একাধিক রীতিনীতি এবং নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি অস্বাভাবিক বলে গণ্য হবে। অথচ এগুলোই আদিবাসী যাযাবর আদিম গোষ্ঠীর কাছে একেবারে স্বাভাবিক ও সামাজিকভাবে স্বীকৃত।

সেই রকমই একটি উপজাতি হিম্বা। এদের বাসস্থান নামিবিয়ায়। শেষ আধা-যাযাবর উপজাতি বলে বিশ্বের কাছে পরিচিত এরা। মূলত নামিব মরুভূমিতেই বসবাস করেন এই উপজাতির মানুষেরা। জীবনযাত্রা যেমন বৈচিত্রে ভরা, তেমনই যৌনতা নিয়েও তাদের রীতিনীতি খুবই অদ্ভুত।

উত্তর নামিবিয়ার কুনেনে বাস করা হিম্বা উপজাতির মানুষ অতিথিবৎসল। বরং একটু বেশিই, যা আধুনিক সমাজের মানুষ স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না।

‘ওকুজেপিসা ওমুকাজেন্দু’, যার সহজ অর্থ অতিথির কাছে স্ত্রীকে অর্পণ করে দেওয়া। অতিথিকে তুষ্ট রাখার জন্য সেই গোষ্ঠীর পুরুষেরা নিজের স্ত্রীদের অতিথিদের সঙ্গে যৌন মিলনের জন্য উৎসাহিত করেন। আর এই প্রথা চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে।

স্বামীদের সম্মতিতেই এই উপজাতির বিবাহিত নারীরা পর্যটক বা ঘুরতে আসা অতিথিদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হন। যৌন মিলনের জন্য নিজের স্ত্রীদের পর্যটকদের হাতে তুলে দেওয়াকে আতিথেয়তার পরাকাষ্ঠা হিসাবে বিবেচিত করা হয় হিম্বা সমাজে।

হিম্বাদের মধ্যে নেই কোনো যৌন ঈর্ষা। স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হতে পারেন এই সন্দেহ থেকে পুরোপুরি মুক্তমনা এখানকার প্রত্যেক পুরুষ। নিজেদের প্রাচীন রীতি থেকে পোশাক, আচার-আচরণ সবই চলে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। নামিবিয়ার হিম্বা উপজাতির মানুষ এখনও আঁকড়ে রয়েছেন নিজেদের সংস্কৃতি।

স্ত্রী অদলবদল করার মতো সংস্কৃতি গোটা পৃথিবীতে বাঁকা নজরে দেখা হলেও এই প্রথাটি হিম্বা জনগণের মধ্যে বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান। পুরুষেরা তাদের স্ত্রীদের অচেনা পুরুষদের সঙ্গে রাত কাটাতে দেওয়ার মধ্যে কোনো দোষ খুঁজে পান না।

হিম্বা উপজাতির পুরুষদের একাধিক স্ত্রী থাকাও খুবই সাধারণ ব্যাপার। প্রত্যেক নারীই সতীনের সঙ্গে সংসার করেন। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন বৌ ঘরে আনলে তাকে সাদরে বরণ করে নেন প্রথম স্ত্রী। একই ভাবে পুরুষেরাও অন্য পুরুষের সঙ্গে মিলনে বাধা দেন না স্ত্রীদের।

একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হিম্বা পুরুষদের ৭০ শতাংশেরও বেশি এমন এক সন্তানকে লালন-পালন করেন, যার জন্মদাতা পিতা অন্য পুরুষ। এই উপজাতিতে, বিয়ের বাইরে জন্ম বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ককে খোলা মনেই মেনে নেওয়ার রীতি রয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে কোনও অপরিচিত ব্যক্তি বা অতিথি ঘরে রাত কাটালে ঘরের বাইরে স্বামীর রাত কাটানোও সেখানকার সুপ্রাচীন রীতি।

কোনো নারী অতিথির সঙ্গে মিলনে নাও রাজি হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে স্পর্শ না করে তাকে অতিথির ঘরে রাত কাটাতে হবে। বিবাহবিচ্ছেদ হিম্বা নারীদের জন্য খুব সহজ এবং একেবারেই অস্বাভাবিক নয়।

পানির অভাবে হিম্বা নারীরা গোসল করতে অভ্যস্ত নন। শোনা যায় বিয়ের সময় একবারই গোসল করেন তারা। পরিষ্কার থাকার জন্য আগুনের ধোঁয়ার মধ্যে মোটা পশমের বস্ত্র জড়িয়ে বসে থাকেন নারীরা। এতে ঘামের মাধ্যমে দেহ থেকে ময়লা বেরিয়ে যায়।

বিদেশি পর্যটকদের আগমন, যারা হিম্বাদের সংস্কৃতি দেখতে আসেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ফলে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে হিম্বাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com