রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

২০২৫ সালেই অর্থনীতিতে জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

বিশ্ব অর্থনীতির নতুন মানচিত্র তৈরি করতে চলেছে ভারত (India)। একটি জাপানি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) শীঘ্রই জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির স্থান দখল করতে চলেছে  ভারত (India)। বৃহস্পতিবার জাপান টাইমস-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিষয়টি তুলে ধরা হয়, যেখানে জাপানের অর্থনীতিবিদরা এই সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।

 জাপান টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, আইএমএফ-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৫ সালেই ভারত জাপানকে (India Overtakes Japan 2025) টপকে চতুর্থ স্থানে উঠে আসতে পারে। অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান S&P গ্লোবাল রেটিংসের মতে, এই স্থানবদল ২০৩০ সালের মধ্যেই ঘটবে। তবে ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান মার্সেল থাইলিয়ান্ট বলেছেন যে, সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক ঘটনাবলির প্রভাবের কারণে এই স্থানবদল আরও তাড়াতাড়ি ঘটতে পারে।

“আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী আমরা ২০২৬ সালে ভারতকে জাপানকে টপকে যেতে দেখছিলাম। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর আলোকে এই পূর্বাভাস আপডেট করা হচ্ছে,” বলেছেন থাইলিয়ান্ট।

ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে বৈশ্বিক দৃষ্টিতে অন্যতম দ্রুতগতির অর্থনীতির একটি উদাহরণ। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, এবং শক্তিশালী ভোক্তা চাহিদার কারণে দেশটির জিডিপি ক্রমাগত বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের বিশাল জনসংখ্যা এবং দ্রুতগামী অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে জিডিপি বৃদ্ধির হার আরও ত্বরান্বিত হবে।

ভারতের জিডিপি বর্তমানে প্রায় ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলার। জাপানের জিডিপি ৪.৪ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে ভারতের বর্তমান বৃদ্ধির হার বজায় থাকলে এটি শীঘ্রই জাপানের বর্তমান স্তর ছাড়িয়ে যাবে।

অন্যদিকে, জাপানের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে চলছে। বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, জনসংখ্যা হ্রাস এবং শ্রমশক্তির অভাব জাপানের অর্থনৈতিক গতিকে কমিয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে পারলে উন্নত দেশগুলির স্থান দখল করা সহজ হবে।

ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি খাত বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ। টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS), ইনফোসিস, উইপ্রোর মতো সংস্থাগুলি ভারতের প্রযুক্তি খাতের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে।ভারতে একটি বিশাল মধ্যবিত্ত শ্রেণি রয়েছে যা পণ্য ও সেবার জন্য স্থায়ী চাহিদা তৈরি করে। ভারত সরকার বেশ কিছু উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যেমন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, যা দেশের উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করছে। ভারতের বিশাল জনসংখ্যা, বিশেষত তরুণ জনগোষ্ঠী, অর্থনীতির জন্য একটি বড় পুঁজি হিসেবে কাজ করছে। জাপানের বৃদ্ধ বয়সের জনগোষ্ঠীর তুলনায় এটি ভারতের জন্য একটি বড় সুবিধা।

তবে ভারতের অর্থনৈতিক উত্থানে কিছু বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ভারতের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এখনও অবকাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে, যা প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
শিক্ষার অভাব এবং দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।বৈশ্বিক বাণিজ্য ও কূটনীতিক সম্পর্ক ভারতের অর্থনৈতিক গতিকে প্রভাবিত করতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের অবস্থান প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ভারত ৫ম স্থানে রয়েছে। ভারত জার্মানিকে টপকে তৃতীয় স্থান অর্জন করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অর্থনীতির সঙ্গে ভারত নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলে ভবিষ্যতে আরও বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com