বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

এক আশ্চর্য নগরী কোপেনহেগেন

  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৪

বিকেলের সোনা রোদে নীল সাগরের তীরের ক্যাস্ট্রুপ বিমানবন্দরের রানওয়েতে যেদিন প্রথম নেমেছিলাম, তখনই মনে হয় ভালবেসে ফেলেছিলাম দিনেমারদের ওই দেশটাকে। প্লেনটা রানওয়ের পথে সাবধানে এগোচ্ছিল তার গন্তব্যের দিকে। সূর্যের পড়ন্ত আলো এসে পড়ছিল রানওয়েতে রাখা অন্য প্লেনের পাখনায়। সেখানে দেখি বিজ্ঞানী নীলস বোরের ছবির স্কেচ আঁকা। ওদেশের আরও কিছু বড় মানুষদের ছবি আঁকা রয়েছে অন্য বিমানের পাখায়। সংস্কৃতি ও সৌন্দর্যে মোড়া ইউরোপের মাটিতে পা দিয়েই ভাল লাগে। ভাল লাগে ড্যানিশদের দেশে এসে।

সেই আনন্দ শতধা হয়ে ধরা দেয় যখন রওনা দিই ক্যাস্ট্রুপ বিমানবন্দর থেকে আমার গন্তব্যস্থল সুইডেনের লুন্ডের উদ্দেশে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্যাক্সি এসে ওঠে ওরেসুন্ড সেতুতে। নর্থ সি আর বাল্টিক সি’কে যুক্ত করা সাগরের খাঁড়ি, যার একদিকে সুইডেন তো অপরদিকে ডেনমার্ক। হৃদয়ের আর্টারির মতো এই সেতু মেলবন্ধন করিয়েছে তাদের। সেই খোলা সেতুর উপর দিয়ে ছুটে চলে গাড়ি আর মুহূর্তে খুলে যায় এক অপরূপ দিগন্ত। ঘন নীল সাগর জলের উপর ষোলো কিলোমিটার লম্বা এই সেতুপথে তীরের ফলার মতো ছুটে চলে আমাদের যানবাহন। দুদিকে অনন্ত জলরাশি। জানলা ফাঁক করা যায় না। উন্মত্ত হওয়ায় আঘাত হানে। অদূরে দেখা যায় সারিবদ্ধ এক ঝাঁক সাদা উইন্ডমিলদের। নিখুঁত পংক্তিতে দাঁড়িয়ে দলবদ্ধভাবে মাথা নাড়ছে। সেতুর নীচ দিয়ে চলে গিয়েছে রেলপথ। অবাক বিস্ময়ে এদিক ওদিক চেয়ে থাকি। ধরে রাখতে চাই এই দমবন্ধ-করা অনন্য অনুভূতিটাকে! কিন্তু সে আশায় ছেদ পড়ে। দূরে দেখা যায় তটরেখা। কিছুক্ষণের মধ্যেই গাড়ি সেতু ছেড়ে ভিনদেশের ভূমি স্পর্শ করে। আমরা এসে ঢুকি সুইডেনে।

সুইডেনের লুন্ড শহরে এসে উঠি বটে, কিন্তু সাগরতীরের দিনেমারদের ওই অদেখা দেশটা ক্রমাগত আকর্ষণ করতে থাকে। এক সপ্তাহান্তে ট্রেনের টিকিট কেটে রওনা দিই প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন অভিমুখে। এবার রেলপথে পার করি ওরেসুন্ড সেতুকে। এসে ঢুকি প্রাচীন ঐতিহ্যমণ্ডিত নগরী কোপেনহেগেনে। স্টেশনে ঢুকেই একটু চমক লাগে। বিরাট বড় স্টেশন, সাবেকি স্থাপত্যশৈলীর ধাঁচে গড়া, কিন্তু ঘেরা আধুনিক সুখ-সুবিধা দিয়ে। কোনও বাহুল্য নেই, শুধু সংস্কৃতি ও রুচির ছাপ রয়েছে চারিদিকে। স্টেশন চত্বরে কয়েকটি সাজানো কিউরিওর দোকান নজর কাড়ে, যেখানের ছোট ছোট আকর্ষণীয় জিনিসের মধ্যে দিয়ে ধরা দেয় ড্যানিশ সাহিত্য-সংস্কৃতি ও তার পিছনে ফেলে আসা ইতিহাসের ছবিটি। এছাড়া রয়েছে বড় টুরিস্ট অফিস, ছোট-বড় নানা ধাঁচের কিছু বাছাই করা দোকান। স্টেশনের বাইরে এসে দাঁড়াই। উলটো দিকেই নজরে পড়ে টিভলিকোর্ট নামের কোপেনহেগেনের পুরনো ও বিশাল বড় বিনোদন পার্কের গেটটা। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীন বিনোদন পার্ক রূপে বিখ্যাত। দিনে কিছুটা ম্রিয়মাণ দেখালেও রাতে আলোর সাজে ঝলমল করে তার রূপ। মুখরিত হয়ে ওঠে ছোট-বড় মানুষের আনন্দে কলরবে! অবশেষে ট্যাক্সি ধরি আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাই কোপেনহেগেনের হৃদস্পন্দন নিহাভেনে।

আমরা যখন নিহাভেনে এসে পৌঁছই তখন শীতের দেশের ঝকঝকে আকাশের কাঁচামিঠে রোদে গমগম করছে নিহাভেন। সেদিন শনিবার। তাই পর্যটকদের আগমনে আরও প্রাণবহুল হয়ে উঠেছে তার চত্বর। এক বিস্তৃত চৌকো বাঁধানো উঠোনের একপাশে আমাদের নামিয়ে দিয়ে চলে যায় ট্যাক্সিটা। পর্তুগিজ ভাষায় ‘প্রাসা’ নামের এই ধরনের পাথর বসানো উঠোন চত্বর ইউরোপের সাবেকি সংস্কৃতির বিশেষত্ব। ইউরোপের প্রায় প্রতিটি শহরের প্রাচীন ধাঁচে সাজানো ওল্ড টাউন স্কোয়ারে দেখতে পাওয়া যায়। সে অংশে গাড়ি চলে না, শুধু মানুষে হাঁটে। তাই প্রতি সপ্তাহান্তে এই পায়ে হাঁটা পেডেস্ট্রিয়ান অংশগুলি সেজে ওঠে নানা ধরনের উইকএন্ড ফেয়ার ও স্ট্রিট শো দিয়ে। আমরা প্রাসার একপাশে এসে দাঁড়াই। ততক্ষণে ছোট ছোট হস্তশিল্প ও কিউরিওর দোকানে সেজে উঠেছে প্রাসা। গড়ে উঠেছে এক রঙিন পরিবেশ। ওদিকে আয়ত চত্বরের চারিপাশের রাজপথ দিয়ে অবাধ গতিতে ছুটে যাচ্ছে গাড়িগুলো। কিছুক্ষণ এ-দোকান, সে-দোকান ঘুরে কৌতূহল ও মনের সাধ মিটিয়ে এগিয়ে যাই খাঁড়ি অভিমুখে, বোট-স্টেশন থেকে নৌকা ধরব বলে।

‘নিহাভেন’ অর্থাৎ নিউ হার্বার বা পত্তন। এমনই নামকরণ করেছিল দিনেমাররা তাদের এই প্রিয় পত্তনের আজ থেকে বহু যুগ আগে, মধ্যযুগের প্রাক্কালে। সেসময় এ খাঁড়ি ছিল জলদস্যুদের আখড়া। মাছ চাষ হত এখানে। জমা হত লুটের মাল। লুটসমগ্রী বোঝাই জাহাজ এসে ভিড়লে আসত বারবনিতারা। ছুটত সুরার ফোয়ারা। খানা-পিনায়, নাচে-গানে গমগম করে উঠত নিহাভেন বন্দর। ধীরে ধীরে সময়ের দৃশ্যপটে পরিবর্তন ঘটে। পনেরো শতাব্দীতে কোপেনহেগেন ডেনমার্কের রাজধানী ঘোষিত হলে পালটে যায় অনেককিছু। তবে পরিবর্তন যেমনধারাই হোক না কেন নিহাভেন তার প্রাচীন জৌলুস হারায় না, শুধু পালটে যায় তার সাজ-সজ্জাগুলো।

বোট-স্টেশনে গিয়ে টিকিট কাটি, জলপথে শহর ঘুরে দেখব বলে। বোটের জন্য অপেক্ষা করি জেটির ধারে। চেয়ে চেয়ে দেখি জেটি-ধারের চক মিলিয়ে সাজানো প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর বাড়িগুলোকে। প্রাচীন, কারণ ঠিক তেমনই সাবেকি ড্যানিশ বাড়ির মডেল দেখেছি কিউরিওর দোকানগুলোতে, নানা রঙের খোপকাটা শিল্প-শৈলী দিয়ে সাজানো। আমরা প্রায় পঞ্চাশজন যাত্রী উঠলে ছেড়ে দেয় আমাদের নাও। বেশ শক্তপোক্ত বড়সড় নৌকায় পাতা চেয়ারে বসে আমরা যাত্রা আরম্ভ করি। দুদিকে চেয়ার, মাঝখানে টেবল আর হাত বাড়ালেই স্পর্শ করা যায় অথৈ সাগরের নীল জল। এমনই রোমাঞ্চের মাঝে আরম্ভ হয় আমাদের অভিযান, সাগরের বুকে! একটি তরুণী গাইড সঙ্গ দেয় আমাদের। বলে যেতে থাকে অনেক কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। হুস হুস করে বোট এগিয়ে যায় নিহাভেনের খাঁড়ি ছেড়ে আর গাইড মেয়েটি একে একে চেনাতে থাকে শহরের পুরনো ঐতিহাসিক বাড়িগুলোকে, যেগুলো তাদের পুরনো বর্ম ফেলে সেজেছে আজ নতুন সাজে। দেখায় বিখ্যাত রূপকথাকার হ্যান্‌স আন্ডারসনের তিনটি বাড়ির আস্তানা, যেখানে পালাপালি করে থেকে তিনি লিপিবদ্ধ করেছিলেন তাঁর বিশ্ববিখ্যাত গল্পগুলোকে আর জোগাড় করেছিলেন তার খোরাক, নিহাভেনের অদ্ভুত জীবনযাপন থেকে।

খাঁড়িপথ ছেড়ে বোট এগিয়ে চলে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে মিশে যায় সাগরে। মুহূর্তে খুলে যায় জলে ভরা দিগন্ত! ঝকঝকে আকাশের নীচে ঘন নীল জলরাশির ঢেউগুলো যেন ছলাৎ ছলাৎ করে বুকের কাছে এসে লাগে। আঙুলে স্পর্শ করি তাকে। চারিদিকে চেয়ে যেন কুলহারা বলে মনে হয়। যেন ভেলার ভরে ভেসে চলেছি অনন্ত মহাসাগরে! মাঝে মাঝে কাছে দূরে চোখে পড়ে দু’একটা ইমারত। একটি নিওক্লাসিক্যাল শৈলীর লাইব্রেরি দেখায় গাইড। অপরূপ পরিবেশে, একদম সমুদ্রের ধারে। দেখে ঈর্ষা হয় মনে!

এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর আবার নৌকা এসে অন্য খাঁড়ির মধ্যে ঢোকে। গাইড দেখায় প্রাচীন কোপেনহেগেনকে। এপথে একটি পুরনো গির্জা দৃষ্টি আকর্ষণ করে। চোখে পড়ে জলের ধারের ছোট ছোট হাউজ়বোটগুলো। তাদের একটাতে দেখি এক মধ্যবয়স্ক দম্পতি বসে কফি খাচ্ছে। অজস্র ছোট বড় দ্বীপ ও জলঢোকা খাঁড়ি দিয়ে পরিবেষ্টিত দিনেমারদের দেশ কোপেনহেগেনের এক বিরাট অংশকে জলপথে ঘুরে দেখতে ভাল লাগে। পার করে যাই খাঁড়িপথ পারাপার করা আগুনতি সেতুকে। একজায়গায় বোটের গতি মন্দ হয়। গাইড দেখায় সাগরতীরে বসে থাকা লিটল মারমেডের পাথরের প্রতিমূর্তিটাকে। একটি গোলপাথরের উপর আধামানবী অর্ধেক মৎস্যরূপী অ্যান্ডারসনের রূপকথার দুঃখিনী মৎস্যকন্যা বসে আছে। পর্যটকেরা নানাভাবে ঘিরে রেখেছে তাকে।

বোটট্রিপ সাঙ্গ হয়। নিহাভেন ছাড়ি। সুন্দর ঝলমলে রোদে হাতে সিটিম্যাপ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এসে পৌঁছে যাই কোপেনহেগেনের অন্য এক বিস্ময়-ভান্ডার, রোজ়েনবর্গ ক্যাসেলে। সেখান আর-এক দৃশ্য। ক্যাসেলে ঢোকার মুখেই বাধা, কড়া প্রহরা! টিকিট কাটি, ব্যাগ রাখি। আর তার সঙ্গে পাই ক্যাসেলের ভিতর ঘুরে দেখার সময়সীমা বা স্লট। এই সময়ের মধ্যেই সেখানে ঢুকে বেরিয়ে আসতে হবে।

টিকিট হাতে দুর্গের সেন্ট্রি পয়েন্টে বানানো কাউন্টারের ঘেরাটোপ থেকে ছাড়া পেয়ে মূল দুর্গ চত্বরে ঢুকে বেশ অবাক হই। অপরূপ পরিখা কাটা জলাশয় ও মেডস ঘেরা নিখুঁত বাগান দিয়ে সাজানো এক নান্দনিক খোলা আঙিনার মাঝে দাঁড়ানো বিশাল প্রাসাদগৃহটি মন ভোলায়। উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা তার সীমানা। বাইরের সামান্য আওয়াজও এসে ঢোকে না ভিতরে। বোঝাই যায় না বাইরে দুর্দমনীয় বেগে ছুটছে জীবন, ক্লান্তিহীন ভাবে ছুটে চলেছে মানুষ ওই আধুনিকা ড্যানিশ রাজধানীতে।

প্রাসাদের বাগান এলাকায় যাই, কিন্তু তখনই ঢুকতে পারি না প্রাসাদের ভিতরে। কারণ, তখনও আমাদের ঢোকার সময় হয়নি। প্রাসাদের মুখে ও চারিপাশে উর্দি পরা ও বড় বড় রাইফেলধারী সেন্ট্রিরা ঘুরছে। চারিদিকে হানছে তীক্ষ্ণ সতর্ক দৃষ্টি। কেমন যেন ভয়  ভয় লাগে। দেখে মনে হয় যেন রাজা আছেন ভিতরে। চলছে তাঁর দরবার, সভাসদদের নিয়ে। সময় হয়নি তাই তাদের দৃষ্টির বাইরে সরে যাই। ঘুরে ঘুরে দেখি মলমলি ঘাসের পরত দিয়ে সাজানো পুকুর, বাগান, ‘মোট’ ও প্রস্তরমূর্তিগুলোকে। প্রাসাদের পিছনের অংশটিতে এক-একটি স্তম্ভের উপর দাঁড় করানো রয়েছে এক-একটি পাথরের মূর্তি, সম্ভবত রাজবংশের বিভিন্ন রাজাদের।

সময় হয়েছে দেখে রাজদ্বারের সামনে আসি, রাইফেলধারী সেন্ট্রিকে স্লিপ দেখাই ও ভিতরে প্রবেশ করি। ভিতরে এক অন্য দুনিয়া। কয়েকতলা উঁচু বিশাল রাজপ্রাসাদ, পরতে পরতে সাজানো রাজমহলের ঐশ্বর্যবহুল সজ্জায়। চোখধাঁধানো তার ঝলমলে ঝকঝকে রূপ। অপরূপ কারুকাজ করা চিনামাটির ক্রকারির সারি সারি গুচ্ছ থেকে আরম্ভ করে ব্রাস মেটালে সোনার পালিশে উজ্জ্বল আসবাব ও কারুকাজ করা রাজা-রানির রুপোর সিংহাসন, সমস্ত সাজানো রয়েছে নিখুঁতভাবে। জীবন্ত সে সজ্জার মাঝে ঘুরতে ঘুরতে বিশাল হল ঘরের মাপের রাজসভাঘরে ঢুকে ভয়েভয়ে সিংহাসনের দিকে চাই। নাহ্‌, রাজারানি কেউ নেই সেখানে। শূন্য রাজদণ্ড!

কিন্তু তখনও জানি না যে নাটিকার চরম দৃশ্যপট দর্শনটি বাকি আছে। রাজমহলের মূল দরজা থেকে বেরিয়ে আসি। দেখি সকলেই ছুটছে বিশেষ একদিকে। অনুসরণ করি পর্যটক সাহেব-মেমদের। প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে তারা এক গহ্বরগৃহে গিয়ে ঢোকে। একাধিক সশস্ত্র প্রহরীর পাশ দিয়ে আমরাও যাই সেই পথে। দরজায় এক মহিলা স্লিপ দেখে জানান যে আমাদের হাতে সময় খুবই কম আছে। তারই মধ্যে বেরিয়ে যেতে হবে এখান থেকে। আমি জানতে চাইলে মহিলা জানান যে এটি রাজমহলের কোষাগার-ঘর!

এবার প্রাসাদের সেই দিকটাতে এসে পড়ি। বিশাল প্রাসাদের মাটির নীচের শুধুই ‘সেলার’ ঘর নয়, রয়েছে এক যথেষ্ট বড় এলাকা জুড়ে সুড়ঙ্গ-কাটা বারান্দা বা বলা চলে সরু আলো-আঁধারির করিডোর। যার গায়ে গায়ে লাগানো রয়েছে কিছু ছোট ছোট মাপের ঘর। টুরিস্টদের ভিড়ে তার সঠিক অস্তিত্ব ঠাহর হয় না। গোটা প্রাসাদচত্বর দেখতে যত না লোকের ভিড় তার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় এই কোষাগারের গর্ভগৃহে। হাতে সময় কম। অতঃপর তাড়াতাড়ি এসে ঢুকি একটা ঘরে। ঢুকেই চমকে যাই। সমস্ত দেওয়ালগুলো কাচের শো-কেস দিয়ে মোড়া আর তাতে থরে থরে ঝলমল করছে অজস্র স্বর্ণালংকার! কৃত্রিম আলোয় ঠিকরে পড়ছে তাদের জৌলুস। ঘরের পর ঘর সাজানো এমনই সোনা হিরে জহরত দিয়ে।

বিদেশিরা আর বলাই বাহুল্য যে বিশেষ করে বিদেশিনীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে তার উপরে। উঠছে অজস্র ছবি, অল্প ক্যামেরায় ও বেশিটাই মোবাইলে। ফ্ল্যাশের বাতিতে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। দেখছি মেয়েগুলো ফোন-ক্যামেরাকে জ়ুম করে করে তুলছে ডিজ়াইনের ছবি। দেখাচ্ছে পাশে দাঁড়ানো মাকে। রাজপরিবারের অলংকারের ডিজ়াইনে হয়তো গয়না বানাবে! এরপর রাজারানির মুকুট-ঘরে ঢুকে কথা হারাই। হিরের কারুকাজে ঠিকরে ঝলমল করে ওঠে হাজার বাতির রোশনাই। সত্যিই দেখে মনে হয় তাদের ভালবাসার রাজপ্রাসাদে আজ শুধু মুকুটটাই পড়ে আছে, রাজা আর নেই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com