সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের (লোটাস কামাল) ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার, সারোয়ারের গাড়িচালক, তার ভাতিজা ও ভাগিনাসহ ঘনিষ্ঠদের লোভে লালমাই পাহাড়ের সর্বনাশ হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। নিজেরা কম দামে জমি কিনে বেশি দামে বিক্রির জন্য পাহাড়ের এই সর্বনাশ করা হয়েছে। স্থানীয়দের আপত্তির পর পাহাড় কাটা ভূমিতে চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নতুন ক্যাম্পাসের কাজ।
সূত্রমতে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে রাজারখোলা এলাকায় ২০০ দশমিক ২২ একর জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সম্প্রসারিত ক্যাম্পাস করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ ও পুরনো ক্যাম্পাস আধুনিকায়নের জন্য ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর ১৬৫৫ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়। যার মধ্যে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয় সম্প্রসারিত ক্যাম্পাসের ভূমি অধিগ্রহণে। ভূমি অধিগ্রহণের কিছু নথিপত্রে দেখা যায়, বেশির ভাগ ভূমিই সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও তার ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারের ঘনিষ্ঠজনদের নামে নিয়ে রেখেছেন।
এতে নাম রয়েছে তার গাড়িচালক, তাদের ভাগিনা, ভাতিজা, ঘনিষ্ঠ কয়েকজন উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা, এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর। নাম আছে কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মকর্তা, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের দুজন নেতা, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টাররোল কর্মচারীরও। ২০০ একর জমির মধ্যে ১০০ একরের বেশি জমি আছে এ কয়েকজনের নামে। বাকি জমি পুরনো মালিকদের নামে। স্থানীয় লোকজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, নতুন সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ায় মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, পাহাড় ও বন ধ্বংস করে অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। তাই যে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সৌন্দর্য তা পাহাড়ের কারণেই হয়েছে। তাই পাহাড়ের ওপর হাত দেওয়া যাবে না।