সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কাঞ্চনজঙ্ঘার কত রূপ ‘জামদানি ও কাঁথা পশ্চিমবঙ্গের’, এবার দাবি এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ইউরোপের প্রথম এআই গায়ক বেন গায়া মালদ্বীপ: স্বপ্নময় এক স্বর্গ যেখানে প্রকৃতি ও বিলাসিতা হাত ধরাধরি করে হিট অফিসারের ‘সুপারহিট’ স্বামী, সিন্ডিকেট করেন ডিবি হারুনের সঙ্গে আশ্রয়ণ প্রকল্প: বাংলাদেশি গৃহহীনদের জন্য এক মিথ্যে প্রতিশ্রুতির নাম মহানবীর হাতে গড়া মসজিদে প্রায় ২ কোটি মুসল্লির নামাজ আদায় শেষ হয়ে আসছে স্মার্টফোনের দিন, কবে আর কেন জানালেন জাকারবার্গ গিলগিট বাল্টিস্তানের হুঞ্জা জাপানে অদ্ভুত এক রেস্টুরেন্ট, যেখানে আপনি যেকোনো খাবারের অর্ডার করুন না কেন পাতে আসবে সম্পূর্ণ অন্য এক খাবার

খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ৫০০ বানর, অসহায় ৭ গ্রামের মানুষ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪

গাজীপুরের কাপাসিয়া সদর ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাত গ্রামের বাসিন্দারা বানরের উপদ্রবে  অসহায় জীবনযাপন করছেন। প্রায় পাঁচ শতাধিক বানর বন থেকে লোকালয়ে এসে খাবারের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছে। ওই বিশাল এলাকায় ফল ও ফসল রক্ষা করতে বানরগুলোকে তাড়াতে গিয়ে গত এক মাসে প্রায় ২০ জন মানুষ আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

 

 

এই সাত গ্রামে ফসলের মাঠে বানরের কারণে কোনো ধরনের ফল, ফসল ও শাকসবজি উৎপাদন করতে পারছেন না কৃষকরা। অন্যদিকে খাদ্য সংকটের কারণে বিপুলসংখ্যক বানর মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। এলাকাবাসী এ সমস্যার সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের বরাইদ, দড়িমেরুন, পানবরাইদ, রাওনাট ও দুর্গাপুর গ্রামে এবং কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের নাকাসিনি ও পাঁচরুখি গ্রামে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক বানর দলবদ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একসময় এসব বানর ওই এলাকার বনে অবস্থান করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খাদ্য সংকটের কারণে এরা লোকালয়ে চলে এসেছে।

রাওনাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম আঙ্গুর জানান, জঙ্গলে খাদ্য সংকটের কারণে বানরগুলো বাড়িতে এসে মূহূর্তের মাঝেই রান্না করা ভাত তরকারি, ধান, চাল, মুড়ি, ফলমূল, শাকসবজিসহ যে কোনো খাদ্য সামগ্রী নিয়ে চম্পট দিচ্ছে। এমনকি রান্নার সময় গৃহিণীরা রান্নাঘর থেকে এদিক-সেদিক গেলে অথবা একটু অন্যমনস্ক হলেও নিমিষেই খাবার নিয়ে উধাও হয়ে যায় তারা।

তিনি বলেন, ঘরের দরজা খোলা থাকলে বানর খাবার নিয়ে চলে যায় এবং গাছে কিংবা ঘরের চালে বসে সে খাবার খেয়ে পাতিল ফেলে দেয়। গত এক মাসে রাওনাট গ্রামের দুইজন শিশু ও দুইজন নারীসহ অন্তত ১১ জন ব্যক্তিকে বানরের দল আক্রমণ করেছিল। এদের মাঝে দুইজন শিশু ও একজন নারীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। এছাড়া একজন নারী বানরের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে দৌড় দিলে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে যায়।

বরাইদ গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য দিলীপ কুমার ধর (৬৫) বলেন, এলাকার উর্বর জমিতে চাষাবাদ করলে সব ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয়। অথচ বানরের কারণে বেল, চালতা ও সিম ছাড়া অন্য কোনো ফল ও ফসল উৎপাদন করে সেগুলো পরিপক্ক করে ঘরে তোলা যায় না। এ কারণে সব ধরনের ফল, ফসল ও শাকসবজি বাজার থেকে কিনে খেতে হয়।

একই গ্রামের মুদি দোকানি বিপুল জানান, তাদের এলাকায় মুদি দোকান কিংবা টঙ দোকানের সামনের অংশে মালামাল ঝুলিয়ে রাখা যায় না। বানরের উপদ্রবের কারণে লোহার নেট কিংবা প্লাস্টিকের নেট দিয়ে মালামাল আটকে রাখতে হয়। দোকান বন্ধ করে কোথাও গেলে বানরেরা হাত ঢুকিয়ে মালামাল বের করে খেয়ে ফেলে।

একই গ্রামের চাকরিজীবী যুবক শোভন চৌধুরী বলেন, কেনাকাটা করে বাড়ি যাবার পথে অনেক সময় ক্ষুধার্ত বানর জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। বানরের কারণে গোসল করে বাড়ির উঠানে জামা শুকানো যায় না। তাছাড়া এলাকার অধিকাংশ টিনের চালে বানরের ছোটাছুটির কারণে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তিনি জানান, নানা সময় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে এলাকাবাসী আবেদন জানালে হয়ত সাময়িক খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এতে পরবর্তী সময়ে বানর আরো বেশি হিংস্র হয়ে ওঠে। যদি এদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা হয় তবে তারা যেমন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারত, গ্রামের মানুষও স্বাভাবিক জীবনযাপন করার সুযোগ পেত।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বিপুলসংখ্যক বানরের পুনবার্সনের ব্যবস্থার মাধ্যমে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাগবে চেষ্টা করব।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com