সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি ও মন্ত্রী থাকাকালীন গড়েছিলেন নিজস্ব বাহিনী। নামে-বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। নিজ জেলা মানিকগঞ্জে তার বিরুদ্ধে জমি দখলসহ নির্যাতনের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। নিজের গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল খুবই কম।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এমপি ও মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে এলাকায় নিজস্ব বাহিনী তৈরি করে গড়েন সম্পদের পাহাড়। গ্রামে তৈরি করেছেন অভিজাত বাড়ি, বিশাল শুভ্র সেন্টার ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের বাস স্ট্যান্ডের কাছে বহুতল ভবন। কর্নেল মালিক মেডিকেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন নিয়োগ, বদলি, সরঞ্জামাদি, ওষুধ বাণিজ্য করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। নিজস্ব বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সাটুরিয়ার বাসিন্দা মো. আব্দুল মালেক জানান, মন্ত্রী থাকাকালীন সময় জাহিদ মালেক তার বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করতেন। মানুষের জায়গা দখল করে কথায় কথায় পুলিশ দিয়ে মানুষকে হয়রানি করেছেন। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে লুটপাটসহ নিয়োগ বাণিজ্য ছিল সাধারণ ঘটনা।
কালাম চৌধুরী বলেন, কথায় কথায় পুলিশ আর দলীয় লোকজন দিয়ে হয়রানি করা হতো। এলাকা ছাড়া ছিলাম ১৫ বছর। বিএনপি হলে কথাই ছিল না। কথাই বলা যেত না। তারপর পেটুয়া বাহিনী দিয়ে নির্যাতন মারধরের ঘটনা তো ঘটেছে। শহরের তাসের রাজত্ব করতেন তিনি। তার হাতিয়ার ছিল আপেল সাহেব। তার নিজস্ব লোক দিয়ে চাঁদাবাজি চলতো।
তিনি জানান, জেলা শহর থেকে সাটুরিয়া উপজেলা ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায়, তার বাহিনীর সক্রিয় ছিল। নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একই সঙ্গে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌরসভার সদস্য সবাইকে নিজের মতো করে তৈরি করেন তিনি।
জেলা সুশাসনের জন্য নাগরিকের সুজনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস জানান, ইতোমধ্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যাংক হিসাব লেনদেন বন্ধ করা হলেও সুশীল সমাজের দাবি তার অবৈধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করা হোক। এছাড়া অপকর্মসহ বিভিন্ন মানুষের হয়রানি করেছে সে বিষয়টা সঠিক শাস্তি পাওয়া দরকার।
২০০৮ সালে প্রথম তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর দুই দুইবার তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। দুর্নীতির টাকায় নামে বেনামে প্রায় ১২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন তিনি। প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত তার সম্পদের হিসাব বেড়েছে ১১ গুণ।
Like this:
Like Loading...