শরতের হালকা হাওয়া আর ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ির কাশফুলের সাদা গালিচা যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে একাকার। কনক্রিটের শহর থেকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনকে প্রকৃতির কাছে সমর্পণ করার এ এক অনন্য সুযোগ।
এক বৃহস্পতিবার বিকেলে, আমরা ১২ জন বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, শরতের শুভ্র কাশফুল দেখতে দিয়াবাড়ি যাবো। দিয়াবাড়িতে পৌঁছানোর পর প্রথমেই চোখে পড়ে বিশাল মাঠজুড়ে মাথা উঁচু করে দোল খাওয়া কাশফুল।
সাদা ফুলগুলো যেন একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কে বেশি মুগ্ধ করবে আমাদের। আকাশে তখন সাদা মেঘের আনাগোনা আর নিচে কাশফুলের মেলা। মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি যেন আমাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
দিয়াবাড়ির কাশফুলের নাচন শহরের বুকে কিছুটা হলেও শৈশবকে ফিরিয়ে দিল। শহরের জীবনযাত্রায় এই ধরনের সময় আর মেলে না, কিন্তু সেই বিকেলটা যেন আমাদেরকে শৈশবের কথা মনে করিয়ে দিল।
শুধু কাশফুল নয়, দিয়াবাড়ির পরিবেশ ভ্রমণপিপাসুদের জন্যও উপযুক্ত। ঢাকার ভেতরেই কাশফুলের এই রাজ্য সত্যিই মনোরম। একই সঙ্গে আশপাশের খাবারের দোকান পর্যটকদের সেখানে বেশি সময় কাটাতে বাধ্য করবে!
এই ভ্রমণ কেবল একটি ছোট্ট সফর ছিল না, এটি আমাদের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করেছে। ঢাকার মতো যান্ত্রিক শহরে দিয়াবাড়ির মতো একটি স্থান সত্যিই একখণ্ড প্রশান্তি, যেখানে শরতের নরম বাতাসে কাশফুলের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো মনে থাকবে অনেকদিন।
এই সফর আমাদেরকে শহরের ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করার একটি দুর্লভ সুযোগ দিয়েছে। দিনের শেষে সূর্যের সোনালি আলো যখন কাশফুলের শুভ্রতার সঙ্গে মিশে যায়, তখন চারপাশের দৃশ্যটা যেন আরও মোহনীয় হয়ে ওঠে।
সন্ধ্যার পর যখন হালকা অন্ধকার নামছিল, তখন কাশফুলের সাদা রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। এই গোধূলি মুহূর্তগুলো আমাদের বন্ধুত্বকে আরও স্মৃতিময় করে তুললো। আমরা সবাই মিলে কাশফুলের মাঝে বসে গল্প করতে করতে অনুভব করলাম, কত সহজে সময় কেটে যায় প্রকৃতির সান্নিধ্যে।
দিয়াবাড়িতে এই শরতের বিকেল আমাদের জীবনে এক আনন্দের দিন হয়ে থাকবে, যেখানে বন্ধুত্ব, দুষ্টামি, এবং প্রকৃতির স্নিগ্ধতা একসাথে মিশে ছিল।