বদলে যাচ্ছে চিরচেনা সাহারা মরুভূমির চেহারা। ক্রমেই সবুজ হয়ে উঠছে বিশ্বের বৃহত্তম এই মরুভূমি। জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে মৌসুমি ঝড়ের গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সাহারায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ব্যাপক বেড়েছে। এমনকি মাঝে মাঝে বন্যাও দেখা দিচ্ছে।
জীবাশ্ম জ্বালানি দূষণের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন ভূভাগের মরুভূমি প্রবণতার পাশাপাশি সবুজায়নের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি স্যাটেলাইট চিত্রেও দক্ষিণ সাহারার কিছু অংশে সবুজের উপস্থিতি দেখা গেছে।
জার্মানির লাইপজিগ ইউনিভার্সিটির জলবায়ু গবেষক কার্স্টেন হাউস্টেইনের মতে, সাহারায় এই অদ্ভুত পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মরুভূমির সবুজ হয়ে যাওয়া এলাকা অন্য অংশের চেয়ে ছয় গুণের বেশি ভেজা থাকে। তাছাড়া এল নিনো (উষ্ণ সামুদ্রিক জলস্রোতের পরিবর্তন) থেকে লা নিনার (বন্যা-খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ) রূপান্তরের প্রভাব তো রয়েছেই।
জলবায়ুর পরিবর্তনে কেবল মরুভূমি সবুজ হচ্ছে তা নয়, এর ফলে আটলান্টিকে ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি প্রভাবিত হয়েছে। ফলে নাইজেরিয়া, ক্যামেরুনসহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশে বৃষ্টিপাত ও বন্যা বেড়ে গেছে।
সাধারণত নাইজার, চাদ, সুদান, লিবিয়া ও দক্ষিণ মিসরের কিছু অংশে প্রতিবছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত দেখা দিচ্ছে। সাধারণ বৃষ্টিপাতের চেয়ে যা ৪০০ শতাংশ বেশি। এতে এ অঞ্চলে প্রতিবছর ভয়াবহ বন্যা দেখা দিচ্ছে।
সাহারার অবস্থান আফ্রিকার উত্তরাংশের বিশাল এলাকাজুড়ে। এর পূর্বে লোহিত সাগর, উত্তরে ভূমধ্যসাগর, পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর, দক্ষিণে শুষ্ক অঞ্চল সাহেল, আলজেরিয়া, চাদ, মিসর, লিবিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, নাইজার, পশ্চিম সাহারা, সুদান এবং তিউনিসিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল। সাহারার আয়তন ৯২ লাখ বর্গকিলোমিটার বা ৩৬ লাখ বর্গমাইল।