বাংলাদেশ থেকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৪০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতো। ৫ আগস্ট বাংলাদেশে সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে বাংলাদেশিদের ভারত ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো ভারতে ফ্লাইট সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয়েছে, যা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। এতে ঘাটতিতে পড়েছে তাদের রাজস্ব। এ ছাড়া ভারতে থাকা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে ভিসার জন্য যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও শ্রমিকরা।
সূত্রমতে, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ার মতো ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতাবাস বাংলাদেশে নেই। এসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অসংখ্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য যান। এ ছাড়া যারা এসব দেশে শ্রমিক হিসেবে যেতে চান, তাদেরও ভারতে গিয়ে ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার দিতে হয়। ঢাকায় এ দেশগুলোর দূতাবাস না থাকায় ভিসা প্রাপ্তি এবং অন্যান্য সেবা গ্রহণ করতে হয় ভারতে গিয়ে। কিন্তু ভারতের ভিসা সেন্টার বন্ধ থাকার কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ইউরোপগামী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং কর্মপ্রত্যাশীদের।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে কলকাতা, চেন্নাই ও দিল্লি রুটে প্রতিদিন যাত্রীর অপ্রতুলতায় ফ্লাইট পরিচালনা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো। এমনকি একটি ফ্লাইটে মাত্র ১২ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতা উড়াল দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফ্লাইট পরিচালনা কমিয়ে দিলেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে কলকাতা, চেন্নাই ও দিল্লি রুটে ধারণক্ষমতার মাত্র ৪০-৪৮ শতাংশ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। তবে ঢাকায় ফেরার সময় কিছুটা বেশি যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম জানান, জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পর ভারতে ভিসা ইস্যু কমে গেছে, যার ফলে যাত্রী সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমেছে।
নভোএয়ারের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস মেজবাউল ইসলাম জানান, ফ্লাইটগুলোতে ৫০ শতাংশের মতো যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতা রুটের ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট সংখ্যা কমলেও যাত্রী সংকট অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে মেডিকেল ও শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য যাত্রীদের ভিসা প্রাপ্তি অনিশ্চিত। ফলে অনেকেই ভ্রমণ পরিকল্পনা স্থগিত করেছেন।
ফ্লাইট পরিচালনা করা এয়ারলাইন্সগুলোর মুখোমুখি হওয়া এই সংকট সমাধানে ভিসা ইস্যুর প্রক্রিয়া দ্রুত স্বাভাবিক করার দাবি উঠেছে।