দেশটির বর্তমান সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য বলছে ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদনকারী বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আগের বছল ২০২৩ সালের প্রথম চার মাসের তুলনায় ৩০ হাজার কম।
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জোটসংস্থা ইউনিভার্সিসিটিজ ইউকে (ইউইউকে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই সংস্থায় নিবন্ধিত ১৪১ বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটিতে বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় চলতি ২০১৪ সালে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব সেইন্ট অ্যান্ড্রুজের উপাচার্য স্যালি ম্যাপস্টোন সরকারের এই পদক্ষেপে অসন্তোষ জানিয়েছেন। এএফপিকে তিনি বলেন, “আমাদের সম্মানিত এবং বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থায় সবার অংশগ্রহণের যে ব্যাপারটি আগে ছিল, তাকে সংকুচিত করা হয়েছে।”
যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের একটি বড় খাত এই বিদেশি শিক্ষার্থীরা। দেশটির পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২২-’২৩ অর্থবছরে উচ্চশিক্ষা খাত থেকে মোট ৫ হাজার কোটি পাউন্ড উপার্জিত হয়েছিল এবং এই অর্থের বড় অংশই এসেছিল বিদেশি শিক্ষার্থীদের পকেট থেকে।
এদিকে করোনা মহামারির পর থেকে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি শুরু হয়েছে, যা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমণ হ্রাস পেলে অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়া খুব স্বাভাবিক এবং ইতোমধ্যে তা শুরুও হয়েছে।
এই পরিস্থিতে বিদেশি শিক্ষার্থী থেকে প্রাপ্ত আয়ের ঘাটতি মেটাতে ব্রিটেনের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেনের সরকার। এ ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চিঠিও পাঠানো শুরু করেছে সরকার।
যুক্তরাজ্যের প্রধান সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংস কলেজ অব লন্ডনের চ্যান্সেলর শীতিজ কাপুর জানিয়েছেন, বিষয়ভেদে এতদিন ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ শিক্ষার্থীদের প্রতি বছর ৯ হাজার পাউন্ড টিউশন ফি দিতে হতো। আমরা জানতে পেরেছি যে শিগগিরই এই ফি বাড়িয়ে ১২ হাজার কিংবা ১৩ হাজার পাউন্ডে উন্নীত করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ সালে দেশীয় শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার্থী ফি ৯ হাজার পাউন্ড থেকে ৯ হাজার ২৫০ পাউন্ড করার আদেশ দিয়েছিল ব্রিটেনের সরকার, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত আর কার্যকর করা হয়নি।
সূত্র : এএফপি