শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন

প্রবাসীদের মনে স্বস্তি ও ‘আনন্দ’

  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০২৪

ফ্রান্স-বাংলাদেশের সময়ের ব্যবধান চার ঘন্টা। ফ্রান্সে যখন ভোর গড়িয়ে সকাল। জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল অস্ট্রেলিয়া থাকেন। মেলবোর্ন থেকে বুলবুলের করা ফোনে সকালে ঘুম ভাঙল, ‘দেশের অবস্থা নিয়ে খুব চিন্তিত। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।’

আজ সকালের পর থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছিল বেশ কিছুটা সময়ের জন্য। আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে একাট্টা ছিলেন, অন্য দিকে সরকারও ছিল বদ্ধপরিকর ছিল এই আন্দোলন রুখতে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা ছিলেন চরম শঙ্কায়। কয়েক ঘন্টা পর ইন্টারনেট ফিরে আসে।

ইন্টারনেট ফিরে আসার পর ধীরে ধীরে দেশের খবর পেতে থাকেন প্রবাসীরা। এক পর্যায়ে তারা জানলেন, সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবর্তে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হচ্ছে। রাজপথে সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে স্বস্তি ফেরায় প্রবাসীরা হাফ ছেড়ে বাচলেন।

ইংল্যান্ড, ইতালির পর ফ্রান্সে বাংলাদেশি প্রবাসী সংখ্যা বেশি। প্যারিসে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অনেকের বসবাস লা কর্নোভে। সেখানে আজ অনেকের চোখে-মুখে স্বস্তি দেখা গেল। দিনাজপুরের রয়েল বাবু উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললেন, ‘মনে খুব প্রশান্তি। দেশে অস্থিরতা থেমেছে। আমরা বিদেশের মাটিতে অনেক কষ্ট করি শুধু একটাই কারণে দেশ ও পরিবার যেন ভালো থাকে। প্রধানমন্ত্রী সরে গেছেন, দেশে এখন স্থিতিশীল। আমাদের মনে স্বস্তি-অনেকটা ঈদ আনন্দ লাগছে।’

প্যারিসে বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের মনির মোল্লা। তার প্রতিক্রিয়া, ‘সাধারণ জনগণ বেশ কিছু দিন ধরেই আন্দোলনের মধ্যে ছিল। অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান সরকার পদত্যাগ করায় সাধারণ মানুষের আন্দোলন ও ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটেছে। দেশের মানুষ স্বস্তি আমরাও হাজার মাইল দূর থেকেও খুশি লাগছে।’

প্যারিসে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অনেকে শ্রমজীবী হলেও পেশাজীবী-অ্যাকাডেমিশিয়ানও রয়েছেন। উচ্চ শিক্ষায় প্যারিসে আসা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ইসতিয়াক মানিকের প্রতিক্রিয়া, ‘দেশে বৃদ্ধ বাবা-মা। সহিংসতার মধ্যে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় যোগাযোগহীন ছিলাম মাঝে। প্রবাসীরা ছাড়া এই কষ্ট অন্য সবার বোঝার নয়। উৎকন্ঠা পেরিয়ে দেশ এখন স্বস্তির আবহ। সরকার বা দায়িত্বে যে দল বা গোষ্ঠীই থাকুক আমাদের একটাই চাওয়া আর কোনো রক্তপাত, সহিংসতা না হোক।’

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি প্রবাসী রেমিট্যান্স। সাম্প্রতিক অস্থিরতায় সেই রেমিট্যান্স প্রবাহ খানিকটা ব্যঘাত ছিল। দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা অর্থনীতি ঠিক রাখতে সহায়তা করবেন বলে জানান, ‘আমরা এখন বেশি অর্থ পাঠাব দেশে। দেশকে উন্নয়নে আরো বেশি সহায়তা করব। ’

প্রবাসীদের অনেকেই ফেসবুকে প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করছেন। সেখানে অনেকে একটি বৃত্তের মধ্যে লিখছেন, ‘ নতুন করে স্বাধীন’। আবার অনেকে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট লিখছেন মুক্তির আনন্দ। দেশে অনেকে জায়গায় উল্লাস মিছিল ও মিষ্টিমুখ চলছে। প্রবাসীদের অনেকের মধ্যে এ রকম উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com