ব্রিসবেন-ভিত্তিক একটি অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন এজেন্সিতে কাজ করেন মাইগ্রেশন এজেন্ট রুবি ফৌদার। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হতে হলে প্রথমে পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট হতে হবে। অন্তত চার বছর অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করলে এবং এর মধ্যে এক বছর পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট হিসেবে বাস করলে নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে।
অনলাইনে আবেদন করার পরামর্শ দেয় ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স। এতে আবেদন প্রক্রিয়াকরণ দ্রুত হয়।ডিপার্টমেন্টের ফ্যামিলি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ প্রোগ্রামের ডেমিয়েন কিলনার বলেন, বেশিরভাগ আবেদনকারীর ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াকরণে প্রায় ১৪ মাস সময় লাগে।আবেদনকারীকে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ টেস্ট পাশ করতে হবে। অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে তার জ্ঞান ও নাগরিক হিসেবে প্রাপ্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও দায়িত্বাবলী সম্পর্কে তার উপলব্ধি যাচাই করা হয় এই টেস্টে।সিটিজেনশিপ টেস্টে ২০টি মাল্টিপল-চয়েস-কোশ্চেন-এর উত্তর দিতে হয়। প্রশ্নগুলো করা হয় “
” বই থেকে। এটি একটি ছোট বই। অনলাইনে পাওয়া যায়। এতে অস্ট্রেলিয়ার গণতন্ত্র, সরকার ও আইন এবং বিভিন্ন অধিকার সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে।
এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে শতকরা ৭৫ ভাগ নম্বর পেতে হবে। এতে বেশিরভাগ আবেদনকারীই পাশ করেন।
দুই শতাধিক দেশের ১২৫ হাজারেরও বেশি লোক অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হন।
আপনি এই পরীক্ষায় ফেইল করলে সেদিনই আবার পরীক্ষায় বসতে পারবেন, যদি সুযোগ থাকে। না হলে ভিন্ন সময়ের জন্য পুনরায় টেস্ট বুক করতে পারবেন। পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কোনো অর্থ প্রদান করতে হবে না।ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের এ পরীক্ষা দেওয়ার দরকার হয় না। একইভাবে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের যাদের কথা শোনা, বলা কিংবা দৃষ্টি-প্রতিবন্ধকতা আছে এবং যে-সব লোকের শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা আছে, তাদেরকেও এ পরীক্ষা দেওয়ার দরকার হয় না।
আবেদনকারীকে অবশ্যই বৈধ ভিসা নিয়ে অন্তত চার বছর অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করতে হবে। সেই সময়ে সব মিলিয়ে ১২ মাসের অধিক সময় অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থাকা যাবে না।
নাগরিকত্বের আবেদন মঞ্জুর হলে আইন অনুসারে আবেদনকারীদেরকে একটি সিটিজেনশিপ সিরিমনি বা নাগরিকত্ব অনুষ্ঠানে যোগদান করতে হবে এবং সেখানে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্বের শপথ গ্রহণ করতে হবে।
দু’ভাবে শপথ করা যায়, যেমন, সৃষ্টিকর্তার নামে এবং সৃষ্টিকর্তার নাম ছাড়া।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবছর প্রায় এক লাখ (১০০ হাজার) লোক সিটিজেনশিপ সিরিমনিতে অংশ নিয়ে থাকেন। বেশিরভাগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় সিটি কাউন্সিলগুলো। এক থেকে দু’ঘণ্টা ধরে এসব অনুষ্ঠান চলে।
আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর তিন থেকে ছয় মাস পরে সিটিজেনশিপ সিরিমনিতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এই অনুষ্ঠানে নাগরিকত্বের শপথ নিতে যাওয়া ব্যক্তিদেরকে তাদের পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়।