কানাডায় ভাইবোন বা আত্মীয় স্বজনকে স্পন্সর করে আনা যায় না। এর মধ্যে কোনো ভুল নেই। ভাইবোন বা ফার্স্ট ব্লাড রিলেটেড কেউ ইমিগ্রেশনের আবেদন করলে একটা পয়েন্ট পাওয়া যাবে।
তবে স্পন্সর করা যাবে যাদের তারা হলো:
আপনারা কানাডিয়ান ওয়েবসাইটে গিলে সব জানতে পারবেন। ফ্যামিলি ভিসায় কানাডায় আসা বর্তমানে অনেক দ্রুত ও সহজ হয়েছে।
ভাইবোনকে স্পন্সর করা যাবে না। তবে একটা অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। অনেক বছর আগে একটা নিয়ম ছিল ভাইবোনদের স্পন্সর করে আনা যেত। শুধু ভাইবোন নয়, এমনও নাকি নিয়ম ছিল একজন তার নিকট আত্মীয়সহ মোট বিশজন বা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে সরাসরি স্পন্সর করে আনতে পারত। নিয়মটা ছিল যারা কানাডার প্রভিন্স Saskatchewan এ গিয়ে একাধারে কয়েক বছর বসবাস করবে ও সেখানে পার্মানেন্ট চাকরি করবে তারা তাদের ভাইবোন এমনকি আত্মীয়দেরও আনতে পারবে। যারা এনেছে তাদের কাছ থেকেই এসব শুনেছি। তবে সেসব পথ এখন আর নেই। সব বন্ধ। বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। কারণ এই নিয়মকে যতভাবে কচলিয়ে তিতা করে ফেলা যায় তার একটা কঠিন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
বাঙালিসহ এশিয়ার মানে ইন্ডিয়া, পাকিস্তানের সব গুণধররা এই নিয়মের বহির্ভূত নিয়ম সৃষ্টি করে ফেলে প্রচণ্ডভাবে দুর্নীতি করা শুরু করে। সেটা কীভাবে?
এই যে ধরুন সরকার আপনাকে কিছু শর্ত দিয়েছিল যে তোমার এই-এই অবস্থা থাকলে তুমি এই-এই বা এতজন মানুষকে স্পন্সর করে আনতে পারবা।
এই ঘোষণার ওপর মাথা রেখে অসৎ মানুষেরা করেছে কী ব্যবসা শুরু করে দিয়েছিল। সে কেমন? মানে সহজ। তারা যে কাউকে নিজের ভাইবোন ও আত্মীয় বানিয়ে স্পন্সর করে কানাডায় এনে ফেলত। তারা কি এসব মাগনা করত? জি না। একেক জনের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা নিয়ে তাদেরকে আনত। সে তাদের গ্রামের রহিম-করিম-জামাল-চাঁনমিয়া যেই হোক। টাকার সঙ্গে চুক্তি হবে। আর যিনি Saskatchewan এ স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি এসব কাজ করতেন দেদারসে।
সে আমলে আমি কানাডায় নতুন ছিলাম। এসব নিয়মকানুন জানতাম না। তবে শুনেছিলাম যারা Saskatchewan গিয়ে থাকবে তারা ভাইবোন, আত্মীয় আনতে পারবে। সে সময় দেখেছি অনেক বাঙালি ব্যাগ-ব্যাগেজ গুছিয়ে টরন্টো ছেড়ে Saskatchewan এ গিয়ে ঘাঁটি করেছিলেন। তারপর তো কথা নেই ঐভাবে মানুষ এনে কতো পরিমাণ যে টাকা ইনকাম করে নিয়েছেন তার হিসেব নেই এমনটাই প্রত্যক্ষদর্শীরা জানালেন।
আমিও চিনি কয়েকজন বাঙালি তারা সেই 2008 সালে Saskatchewan পাড়ি জমিয়েছিলেন মানুষ আনতে। তারা গত বছর টরন্টোতে আবার ফিরে এসেছেন।
মূল মেসেজ যেটা সেটা হলো এই যে, কোনো একটা নিয়ম, নিয়মের মধ্যে থাকে না। সরাসরি অপব্যবহার করা হয়। সে পৃথিবীর যে দেশই হোক না কেন। অপব্যবহারকারীরা ভালো করেই জানে অপব্যবহার কীভাবে করে টাকা ইনকাম করা যায়।
যাই হোক, সরকার হয়তো এসব বুঝতে পেরে ঐসব নিয়মের সদরঘাটের লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছেন। কোনো নিয়মই আর ঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না এমনই অভিযোগ অনেকের। এভাবে অপব্যবহার হতে থাকলে বাকি নিয়মও কঠিন হয়ে যাবে, না হলে বন্ধ হয়ে যাবে।
আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।