সফলতার কোনো বয়স নেই। উদাহরণ কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন বা কেএফসির প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল হারল্যান্ড ডেভিড স্যান্ডার্স। যে বয়সে মানুষ অবসর গ্রহণ করে সেই বয়সে তিনি নতুন করে শুরু করেছিলেন পথচলা। কেএফসি প্রতিষ্ঠা করার আগ পর্যন্ত তিনি খেতমজুর, রেলের ফায়ারম্যান, সেলসম্যান, ডিঙি নৌকার ববসায়ী, গাড়ির টায়ার বিক্রেতা, ফিলিং স্টেশনের কর্মচারীসহ নানা পেশায় কাজ করেছেন। তবে কোনোটাতে সফলতার মুখ দেখেননি। ব্যর্থতা স্যান্ডার্সের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে এক সময় নিজেই পরাজয়বরণ করেছে। তার দীর্ঘ জীবনে ব্যর্থতা ও সংগ্রামের কাহিনী নিয়ে এবারের আয়োজন। লিখেছেন লায়লা আরজুমান্দ
শৈশবের কঠিন বাস্তবতা
কর্নেল স্যান্ডার্সের জন্ম ১৮৯০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্ডিয়ানা’ স্টেটে। তার বাবার নাম উইলবার ডেভিড ও মায়ের সাম মার্গারেট অ্যান। তিন ভাইবোনের মধ্যে স্যান্ডার্স ছিলেন সবার বড়। এক দুর্ঘটনায় স্যান্ডার্সের বাবার পা ভেঙে গেলে অথৈ সাগরে পড়ে তার পরিবার। দুর্ঘটনার দুই বছর পর ১৮৯৫ সালে মারা যান তার বাবা। তখন তার বয়স মাত্র ৫ বছর। পরিবারের হাল ধরার জন্য তার মা এই সময় কাজ নিলে ছোট ভাইবোনদের দায়িত্ব এসে পড়ে তার ওপর। তাদের জন্য খাবার রান্না, খাওয়ানোসহ সব দায়িত্ব এসে পড়ে স্যান্ডার্সের ওপর। এই কাজ করতে গিয়ে সাত বছর বয়সেই তিনি রান্নায় হয়ে উঠলেন পারদর্শী। স্যান্ডার্সের বাবা মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর ১৯০২ সালে স্যান্ডার্সের মা মার্গারেট অ্যান আবার বিয়ে করেন উইলিয়াম ব্রোডাসকে। সন্তানদের নিয়ে তার মা চলে যান সৎ বাবার বাসায় ইন্ডিয়ানার গ্রিনউডে। তবে সেখানকার পরিবেশ সুখকর হয়নি স্যান্ডার্সের জন্য। বাবার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না মোটেও। নানা কারণে এক সময় তিনি স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন।
ব্যর্থতার বেড়াজাল
কোনো কাজ বেশিদিন করতে পারেননি স্যান্ডার্স। উড়– উড়– মন, কাজ মেলে তো মালিকের সঙ্গে বনিবনা হয় না। মালিক পছন্দ হলে হয়তো সহকর্মীর সঙ্গে হয় দা-কুমড়ো সম্পর্ক। নানা রকম জটিলতায় কোনো কাজ তিনি বেশিদিন চালিয়ে যেতে পারতেন না।
স্কুল ছেড়ে দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন এক খামারে কাজ শুরু করার। কিছুদিন করার পর সেই কাজ আর ভালো লাগল না। খামারের কাজ থেকে এরপর তিনি কাজ নিলেন ইন্ডিয়ানা পুলিশ বাহিনীর ঘোড়ার গাড়ি রং করার। তবে এই কাজেও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কয়েক মাসের মধ্যে তিনি এই কাজ ছেড়ে দিয়ে ১৪ বছর বয়সে আবারও খামারে ক্ষেতমজুরের কাজ শুরু করেন। তবে মাত্র দুই বছর করেছিলেন এই খেতমুজরের কাজ। এরপর ১৯০৬ সালে ১৬ বছর বয়সে তিনি চলে যান তার চাচার কাছে ইন্ডিয়ানার নিউ আলবানিতে। সেখানে তিনি গাড়ির কন্ডাক্টরের চাকরি নেন। ১৯০৭ সালে তিনি চলে যান তার আরেক চাচার কাছে নিউ অ্যালাবামাতে। গিয়ে দেখেন সেখানে সৎ বাবার সঙ্গে থাকতে না পেরে চাচার কাছে আগে থেকেই চলে এসেছে তার আরেক ভাই। যাই হোক চাচা তাকে কামারশালায় কামারের সহকারী হিসেবে একটি কাজ পাইয়ে দেন। কিন্তু দুই মাস পরেই তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দেন। চলে যান অ্যালাবামার জাসপারে। শুরু করেন রেলের ইঞ্জিন থেকে ছাই সাফাইয়ের কাজ। তারপর কাজ নেন রেলের ফায়ারম্যান হিসেবে। এর দুই বছর পর তিনি কাজ করেন নর্থফোক ও ওয়েস্টার্ন রেলস্টেশনে
সুখের হয়নি বিয়েও
১৯০৯ সালে নর্থফোক ও ওয়েস্টার্ন রেলস্টেশনে কাজ করার সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় জোসেফিন কিং-এর সঙ্গে। ওই বছরই বিয়ে করেন তারা। এই দম্পতির তিন সন্তান। দুই মেয়ের নাম মার্গারেট স্যান্ডার্স ও মাইল্ডরেড স্যান্ডার্স। তাদের একমাত্র ছেলে হারল্যান্ড জুনিয়র ১৯৩২ সালে মারা যায় টনসিল ইনফেকশন হয়ে। বিয়ের কয়েক বছর পরই তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে চলে যান। সন্তানদের নিজের কাছে ফিরিয়ে আনতে নিজের মেয়েকে একবার কিডন্যাপও করতে গিয়েছিলেন স্যান্ডার্স। কিন্তু সেখানেও ব্যর্থ হন। ১৯৪৭ সালে স্ত্রী জোসেফিনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। যখন বিচ্ছেদ হয় তখন তিনি প্রেমে মজে ছিলেন তার প্রথম দিককার রেস্টুরেন্টের কর্মী ক্লডিয়ার সঙ্গে। ক্লডিয়াকে বিয়ে করেন ১৯৪৯ সালে।
বদরাগী স্যান্ডার্স
রাগী বলে স্যান্ডার্স অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। রেলস্টেশনে কাজের পাশাপাশি তার আগ্রহ হতে থাকে আইন পেশার দিকে। দিনে রেলে কাজ শেষ করে রাতে তিনি আইনের কোর্স করতে লাগলেন। কিন্তু কোর্স চলাকালীনই তার রেলের কাজটি চলে যায়। সেটাও তার সহকর্মীদের সঙ্গে বিবাদের কারণে। কোর্স শেষ হলে স্যান্ডার্স লিটল রক নামের এক আইন প্রতিষ্ঠানে তিন বছর প্র্যাকটিস করেন। এ সময় তিনি বেশ টাকা-পয়সা উপার্জন করেন। তবে আদালত রুমে তার নিজের মক্কেলের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ার কারণে তার আইনজীবী উপাধি পরে বাতিল হয়ে যায়। এরপর ১৯১৬ সালে তিনি আইন পেশাকে বিদায় জানিয়ে চলে যান জেফারসন ভ্যালিতে। সেখানে কাজ শুরু করেন জীবনবীমা কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে। তবে কিছুদিন পর সেই চাকরিও হারান তিনি। কারণ ছিল তার বদরাগী স্বভাব ও অবাধ্যতা।
ব্যবসাতেও ব্যর্থতা
জীবন সংগ্রামে আরও অনেক কিছু অপেক্ষা করেছিল স্যান্ডার্সের জন্য। ব্যর্থতার ঘেরাটোপ থেকে বের হতে পারছিলেন না কোনোভাবেই। যেখানেই হাত দিয়েছেন, যে কাজই করেছেন সেখানেই একটা সময় থমকে দাঁড়াতে হয়েছে। স্যান্ডার্স প্রথম ১৯২০ সালে ব্যবসা শুরু করেন নৌকার কোম্পানির। এই নৌকা দিয়ে ওহিও নদীর এপার থেকে ওপারে যাওয়া যেত। তিনি তার কোম্পানি থেকে নৌকা সরবরাহ করতেন। তিনি নিজেই উদ্যোক্তা ছিলেন এই ব্যবসার। পাশাপাশি ১৯২২ সালে তিনি ইন্ডিয়ানার চেম্বার অব কমার্সে চাকরিও করতে থাকেন। এই সময়টা ছিল তার জন্য খানিকটা সুসময়। এক বছর ইন্ডিয়ানার চেম্বার অব কমার্সে চাকরি করার পর তিনি এই চাকরিটিও ছেড়ে দেন। আর তার নৌকা সরবরাহের কোম্পানিটি বিক্রি করে দেন।
নৌকা বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি নতুন একটি কোম্পানি খোলেন। যা ছিল অ্যাসিটিলিন বাতির। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসÑ এখানে তিনি ব্যর্থ হন। কারণ সেই বছরেই বাজারে আগমন ঘটে ইলেক্ট্রিক বাতির। তিনি তার সমস্ত টাকা-পয়সা লস করে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন। এরপর তিনি ১৯৩০ সালে কেন্টাকিতে আসেন। নানা ধরনের কাজ করে কোনোটিতেই মনোনিবেশ করতে পারছিলেন না। প্রথমে কাজ শুরু করেন এক টায়ার কোম্পানিতে। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন নয় এখানেও। কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর তিনি চাকরি পান স্ট্যান্ডার্ড অয়েল অব কেন্টাকিতে। কিন্তু এই কোম্পানিও বন্ধ হয়ে গেলে তিনি তীব্র হতাশায় ভুগতে থাকেন।
গ্যাস স্টেশন থেকেই শুরু
১৯৩০ সালের সেই সময়টাতে ভাগ্যদেবী তার প্রতি খানিকটা সুপ্রসন্ন হন। তিনি নতুন চাকরি পান এবং থিতু হন শেল অয়েল গ্যাস স্টেশনে। তাকে গ্যাস স্টেশনের ভেতরেই কিছুটা থাকার জায়গা দেন সেই ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার। বিনিময়ে গ্যাস স্টেশনের কর্মীদের রান্না করে খাওয়াতে হবে। শৈশবে মায়ের অনুপস্থিতিতে যে কাজটি তিনি ভাইবোনের জন্য করতেন সেই কাজটিতে তার ভাগ্য খুলে যায়। তবে সেই সময়ে তিনি চিকেন ফ্রাই করতেন না। কারণ এতে প্রিপারেশনের জন্য অনেক সময় লাগত। তিনি তৈরি করতেন হ্যাম ও স্টেক। সেই সময়ে স্টেশনে যারা গ্যাস ও তেল নিতে আসত তারাই ছিল মূলত তার এই খাবারের কাস্টমার। গ্রাহকদের কাছ থেকে খাবারের বেশ প্রশংসা পাচ্ছিলেন তিনি। তখন পর্যন্ত তার কোনো রেস্টুরেন্ট ছিল না। নিজের থাকার ওই ছোট্ট জায়গায় তিনি রান্নাবান্না করছিলেন। কিছুদিন পরেই তিনি ‘স্যান্ডার্স ক্যাফে’ নামে গ্যাস স্টেশনের খুব কাছেই একটি রেস্টুরেন্ট খোলেন। সেখানেই ১১ রকম হার্বস ও মসলা দিয়ে প্রেসার ফ্রায়ারে প্রথম ফ্রায়েড চিকেনের ব্যবসা শুরু করেন। সেই সঙ্গে অন্যান্য খাবার তো থাকছেই। কিন্তু তখনো তিনি সেই ফ্রায়েড চিকেনের নাম দেননি।
যদি লক্ষ্য থাকে অটুট
১৯৩৯ সালে তার এই চিকেন ফ্রাই টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। এ সময় তিনি নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশেভ্যালিতে একটি মোটেল খোলেন। কিন্তু ভাগ্য এখানেও তার সঙ্গে বিরূপ আচরণ করে। ওই বছরই মোটেলটি আগুন লেগে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিন্তু তিনিও দমে যাওয়ার পাত্র নন। আবারও মোটেলটি পুনর্নির্মাণ করেন এবং মোটেলটিকে ১৪০ আসনের এক রেস্টুরেন্টে পরিণত করেন। সময়টা ছিল ১৯৪১ সাল। সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র পুরোদমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে পর্যটন ব্যবসায় ধস নামে। এ সময় তিনি তার মোটেলটিকে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এক সময়ে তিনি এটি বিক্রি করে দেন। এরপর কিছুদিন তিনি একটি সরকারি ক্যাফেটেরিয়ায় কাজ করেছিলেন। যখন অবসর নেন তখন তিনি ১০৫ ডলারের একটি চেক হাতে পান। নিজেকে সেই সময় মনে করেছিলেন একজন চূড়ান্ত ব্যর্থ মানুষ হিসেবে। সে সময় তিনি আত্মহত্যা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারপর তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন, তার আরও কিছু করার রয়েছে। তিনি একটা জিনিস জানেন যা কেউ জানেন না। তারপর তৈরি করলেন সেই অদ্বিতীয় চিকেন ফ্রাই। প্রথম দিকে প্রতিবেশীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তার তৈরি খাবারটি বিক্রি করার চেষ্টা করেন।
বাকিটা ইতিহাস
৬২ বছর বয়সে তিনি আবারও নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন তার চিকেন ফ্রাইয়ের এই গোপন রেসিপিকে কাজে লাগানোর। ১৯৫২ সালে স্যান্ডার্স এই চিকেন ফ্রাইকে তার আয়ের উৎসে পরিণত করেন। তখন তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন স্যান্ডার্সের বন্ধু পিট হারমান। তার উৎসাহে সল্টলেক সিটিতে নতুন একটি রেস্তোরাঁ খুলেন। সেখানে ছিল শুধু চিকেন ফ্রাই। তার এই গোপন রেসিপির নাম দেন তিনি ‘কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন’। এবার আর ব্যর্থতা তাকে তাড়া করতে পারেনি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেতে থাকে এই চিকেনের রেসিপি। প্রথমবার তিনি তার গোপন রেসিপি প্রেসার ফ্রাইয়িং প্রক্রিয়া কাজে লাগালেন। যা ছিল প্যান ফ্রাইয়িং সিস্টেমের চেয়ে বেশি লাভজনক, সময়সাপেক্ষ এবং সুস্বাদু রান্নার পদ্ধতি। ১৯৫৫ সালে স্যান্ডার্স কেএফসির ব্যবসা আরও সম্প্রসারণ করেন এবং ১০ বছরের মধ্যে কানাডা, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেএফসির ৬০০টি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৬৪ সালে তিনি একে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এক আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন। চুক্তিপত্রে থাকে স্যান্ডার্স সারা জীবনের বেতন হিসেবে ৪০,০০০ ডলার পাবেন, অধিকাংশ শেয়ারের মালিক হবেন এবং কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে কোম্পানির প্রচারে অংশগ্রহণ করবেন। ১৯৮০ সালের তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্যান্ডার্স ছুটে বেড়িয়েছেন মাইলের পর মাইল তার হাতে গড়া রেসিপির কদর আর মান দেখার জন্য। কখনো গুণাগুণের ব্যাপারে সমঝোতা করেননি। সেই কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন বা কেএফসি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও তুমুল জনপ্রিয় এই কেএফসি। শুধু এর ফ্রায়েড চিকেনের জন্যই নয়, পাশে লোগো আকারে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিও সকলের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু সবসময়। আমরা কেএফসিতে যে বৃদ্ধ লোককে দেখি তিনি আর কেউ নন স্বয়ং স্যান্ডার্স নিজে। ৮৮ বছর বয়সে এসে তিনি বনে গেলেন কোটিপতি। বর্তমানে বিশ্বের ১৩৬টি দেশে ২২ হাজার ৬২১টি শাখা রয়েছে। বৃদ্ধ বয়সে এসেও তিনি ব্যর্থতার কাছে হার স্বীকার করেননি বরং ব্যর্থতাই স্যান্ডার্সের কাছে পরাজয় বরণ করেছে। ১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর মারা যান জীবনযুদ্ধে হার না মানা স্যান্ডার্স।
কর্নেল তার উপাধি
অনেকেই মনে করেন কর্নেল স্যান্ডার্স নিশ্চয়ই কোনো এক সময় সেনাবাহিনীর কর্তা ছিলেন। তিনি এক সময় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন বটে কিন্তু পরের বছর সেখান থেকে আবার ফেরত আসেন ভুল তথ্য দেওয়ার দায়ে। আসল ঘটনাটি হলো ক্যান্টাকির সাধারণ মানুষ তো বটেই, বড় বড় আমলা স্যান্ডার্সকে সম্মান দিয়ে কর্নেল বলে সম্বোধন করতেন। তিনি ‘কর্নেল’ উপাধি পান ১৯৩৫ সালে, যখন গ্যাস স্টেশনের ভেতরের জরাজীর্ণ রুমে ‘স্যান্ডার্স ক্যাফে’ খুলে খাবারের ব্যবসা করেন। কিন্তু ১৯৪৯ সালে স্যান্ডার্স সনদপত্র আকারে কর্নেল খেতাব গ্রহণ করেন। এই বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন ক্যান্টাকির তৎকালীন গভর্নর।
ভল্টে সুরক্ষিত রেসিপি
বর্তমানে স্যান্ডার্সের রেসিপিটি সুরক্ষিত রয়েছে একটি ভল্টে। ২০০৯ সালে রেসিপিটি কেন্টাকিতে কেএফসির হেডকোয়ার্টারে সুরক্ষিত এক ভল্টে স্থানান্তরিত করা হয়। যতদিন ভল্টটি বানানো হচ্ছিল, ততদিন সেই রেসিপি এক অজানা জায়গায় লুকিয়ে রাখা ছিল। বর্তমানে চব্বিশ ঘণ্টা ক্যামেরা, মোশন ডিটেক্টর আর নিরাপত্তা প্রহরীদের নজরে থাকে এটি। পুরু কনক্রিটের সøযাব দিয়ে ভল্টটি ঘিরে রাখা। পুরো সিকিউরিটি সিস্টেমটির সঙ্গে সংযোগ আছে ব্যাকআপ জেনারেটরের, যেন বিদ্যুৎ গেলেও নিরাপত্তার কোনো ত্রুটি দেখা না দেয়।