শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন

কীভাবে তুরস্ক চুলের ট্রিটমেন্টের রাজধানী হয়ে উঠল

  • আপডেট সময় শনিবার, ২২ জুন, ২০২৪

চল্লিশে চালশে কথাটা দিন দিন যেন অর্থহীন হয়ে পড়ছে। বরং চল্লিশেই অনেকে হয়ে উঠছেন আরও আকর্ষণীয়। চাইলেই এখন প্লাস্টিক সার্জারি, ইমপ্লান্টেশন, ফিলআপ, বোটক্স—চিকিৎসাবিজ্ঞানের আধুনিক প্রযুক্তি আর পদ্ধতির মাধ্যমে চেহারা বা যেকোনো অঙ্গ অনেকটাই পরিবর্তন করে ফেলা সম্ভব।

কপালের বলিরেখা দূর করা থেকে শুরু করে মাথায় চুল গজানো—টাকা ঢাললে সবই এখন সম্ভব। এমনকি কিছু কিছু জায়গা বিউটি ট্রিটমেন্টের জন্য জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে তুরস্ক। টাক মাথার চুল গজানোর জন্য তারা এখন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। মাথায় চুলের পরিমাণ কমতে থাকলেই লোকজন দাঁড়িয়ে পড়ছেন তুরস্কের ভিসার লাইনে।

এত দেশ থাকতে কেন তুরস্ক?

হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি, সময় এবং খরচ—সবই চুলের ধরনের ওপর নির্ভর করে। যে কারণে ছোট্ট একটি অস্ত্রোপচারও হয়ে উঠতে পারে জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। সব মিলিয়ে হেয়ার ট্রিটমেন্ট করতে চাইলে ব্যাংকে যেমন বড় অঙ্ক থাকতে হয়, তেমনই হাতে থাকতে হয় অঢেল সময়।

আর ঠিক এই জায়গায়ই বাজিমাত করেছে তুরস্ক। অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও আধুনিক ট্রিটমেন্টের সমন্বয়ে সময় ও খরচ দুটোই কমিয়ে এনেছে তারা। সঙ্গে রয়েছে তুরস্কের সরকারের সহায়তা। বিশেষায়িত ক্লিনিক তৈরি থেকে শুরু করে হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্টের সরঞ্জাম—সবকিছুতেই সরকার থেকে রয়েছে ভর্তুকি। রয়েছে আলাদা মেডিকেল ভিসা। যার সুবাদে যেকোনো চিকিৎসাতেই বিশেষ সুবিধা পান রোগীরা। সহজলভ্য চিকিৎসা, কম খরচ—সব মিলিয়ে খুব দ্রুতই হেয়ার ট্রিটমেন্টের রাজধানী হয়ে উঠেছে তুরস্ক।

কপালের বলিরেখা দূর করা থেকে শুরু করে মাথায় চুল গজানো—টাকা ঢাললে সবই এখন সম্ভব (প্রতীকী ছবি)
কপালের বলিরেখা দূর করা থেকে শুরু করে মাথায় চুল গজানো—টাকা ঢাললে সবই এখন সম্ভব

একটি সাধারণ হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করতে যুক্তরাষ্ট্রে খরচ হয় প্রায় ৭ থেকে ১৫ হাজার ডলার। টাকার মূল্যে যা প্রায় ৮ থেকে ১৭ লাখ টাকা। একই ট্রিটমেন্ট তুরস্কে করা যায় প্রায় অর্ধেক খরচে। ট্রিটমেন্টভেদে হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করতে খরচ হয় ৪ থেকে ১০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৫ থেকে ১২ লাখ। এ ছাড়া থাকা-খাওয়া, আসা-যাওয়ার খরচ তো রয়েছেই।

যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে পদে পদে সামলাতে হয় খরচের ধাক্কা, সেখানে তুরস্কে মেডিকেল ভিসায় পাওয়া যায় বিশেষ ছাড়। সব মিলিয়ে খোদ যুক্তরাষ্ট্র থেকেও লোকজন তুরস্কে ছোটে শুধু হেয়ার ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য।

তুরস্কে মূলত দুই ধরনের হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। ফলিকুলার ইউনিট ট্র্যান্সপ্ল্যান্টেশন (এফইউটি) ও ফলিকুলার ইউনিট এক্সট্রাকশন (এফইউই)। এফইউটি পদ্ধতিতে শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ থেকে স্কাল্প তুলে এনে সেখান থেকে চুলের স্যাম্পল ও ফলিকুলার ইউনিটগুলো মাথায় ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। যেখান থেকে আবার নতুন করে চুল গজায়।

ঝলমলে চুল কে না চায়!
ঝলমলে চুল কে না চায়!ছবি: প্রথম আলো

অন্যদিকে এফইউই পদ্ধতিতে স্কাল্প তুলে আনা হয় না। বরং শরীরের অন্য কোনো জায়গা থেকে মাইক্রো পাঞ্চ দিয়ে সরাসরি ফলিকুলার ইউনিটগুলো তুলে আনা হয়। এরপর তা মাথায় ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করা হয়।

দুটি পদ্ধতিতেই লোকাল অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হয়। ৪ থেকে ৮ ঘণ্টার এই অস্ত্রোপচারে সাধারণত রোগীরা কোনো ব্যথা অনুভব করেন না। তবে অস্ত্রোপচার শেষে সামান্য ব্যথা থাকে। এই সার্জারি শেষে সার্জনের কথামতো সূর্যালোক থেকে দূরে থাকতে হয়, স্কাল্প পরিষ্কার করতে হয় আর কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়।

অস্ত্রোপচারের ছাড়াও আরও কয়েকটি হেয়ার ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি প্রচলিত আছে তুরস্কে। লেজার থেরাপি, প্লাজমা থেরাপি থেকে শুরু করে মাইক্রো পিগমেন্টেশন পদ্ধতিতে চুলের বিভিন্ন চিকিৎসা করা হয় সেখানে।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com