1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
সাশ্রয়ী টিকিটের দিকে ঝুঁকেছে এশিয়া-ইউরোপের উড়োজাহাজযাত্রীরা
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০২:৩৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ভারতের যেসব জায়গায় গ্রীষ্মেও দেখা মেলে তুষারপাত আবুধাবি বিমানবন্দর হয়ে ভ্রমণ? দেরি ও বাতিলের আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষের সতর্কবার্তা ট্রানজিট যাত্রীরাও ক্ষতিগ্রস্ত? আঞ্চলিক উত্তেজনায় এমিরেটস ফ্লাইট বাতিলের মেয়াদ বাড়াল এয়ার ইন্ডিয়া ট্র্যাজেডি : স্ত্রীর শেষ বিদায়ের পর নিজেই হারিয়ে গেলেন দূর আকাশে নাগরিকত্ব পেতে ৫ মিলিয়ন ডলারের ‘গোল্ড কার্ড’, ওয়েবসাইট চালু করলেন ট্রাম্প সিলেটে প্রত্যাশার চেয়ে পর্যটক কম, ৫০ শতাংশ হোটেল-মোটেলই খালি ভিয়েতনামের জনপ্রিয় দ্বীপ ফুঁককে এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৭ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি বিদেশি পর্যটক আহমেদাবাদে ২৪২ জন আরোহীসহ দুর্ঘটনার পর বোয়িংয়ের শেয়ারে ৮% দরপতন টানা ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস মালয়েশিয়ায় ক্রুজ পর্যটন

সাশ্রয়ী টিকিটের দিকে ঝুঁকেছে এশিয়া-ইউরোপের উড়োজাহাজযাত্রীরা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪

কভিড-১৯ মহামারীর বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর সারা বিশ্বে রাতারাতি উড়োজাহাজে ভ্রমণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে দীর্ঘদিন বাড়ির বাইরে থাকা মানুষ আকাশপথে যাত্রাকে বেছে নেয়। ওই সময় চাহিদা ও জোগানের নিরিখে ইউরোপ ও এশিয়ায় টিকিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে যাত্রীরা এ খাতে কম খরচ করতে চাইছে। এর পেছনে রয়েছে অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার মতো কারণ।

ফ্লাইটের আসন চাহিদা ও প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে টিকিটের মূল্য ওঠানামা করে। আসনের চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকলে এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ লাভবান হয়। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অন্যান্য কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় টিকিটের দাম নিয়ে আগের চেয়ে বেশি সচেতন ক্রেতারা। তারা উড়োজাহাজ ভ্রমণের জন্য বেশি মূল্য দিতে অনিচ্ছুক। এ কারণে অনেক রুটের এয়ারলাইনসের ভাড়া এখন প্রাক-মহামারীর বৃদ্ধির তুলনায় অনেক কম বা প্রায় আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।

কম খরচে উড়োজাহাজ পরিষেবা দেয়ার জন্য পরিচিত সংস্থা রায়ানএয়ার। প্রতিষ্ঠানটির সিইও মাইকেল ও’লেরি সম্প্রতি সতর্ক করে জানান, টিকিটের মূল্য প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম হারে বাড়ছে। এ কারণে ইউরোপের এয়ারলাইনসগুলোর আয় কমছে।

তিনি বলেন, ‘অবাক করা বিষয় হলো টিকিটের মূল্য শক্তিশালী হয়নি। আমরা নিশ্চিত নই যে এটি শুধু ভোক্তাদের মনোভাব নাকি ইউরোপজুড়ে থাকা অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব।’

ভ্রমণবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ফরোয়ার্ডকিসের তথ্য থেকে দেখা যায়, ইউরোপজুড়ে গত জানুয়ারিতে ২০২৩ সালের একই সময়ের মতোই ছিল উড়োজাহাজের ভাড়া। তবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভাড়া সবচেয়ে বেশি কমেছে। জানুয়ারি-এপ্রিলে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ কমেছে।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস সম্প্রতি ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে রেকর্ড মুনাফার খবর দেয় সংস্থাটি। কিন্তু সর্বশেষ তিন প্রান্তিকের হিসাবে দেখা যায়, নিট মুনাফা কমে গেছে।

মূলত করোনার বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও বিদেশী গন্তব্যে ফ্লাইট বাড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এশিয়া ছিল শ্লথ।

চীন থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে ভ্রমণ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। চীনের অর্থনৈতিক সংকট এতে প্রভাবকের ভূমিকা রেখেছে। এ অঞ্চল থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট প্রাক-মহামারী স্তরের প্রায় ৭০ শতাংশে রয়ে গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রুটে মাত্র ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুনরুদ্ধার হয়েছে।

ফ্লাইট সেন্টার ট্রাভেল গ্রুপের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমে প্রান্তিকে অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের টিকিট মূল্য ১২ দশমিক ৮ শতাংশ হারে কমেছে। অন্যদিকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টিকিটের মূল্য ২০১৯ সালের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি রয়েছে। তবে ২০২১ সালে টিকিটের মূল্য ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল।

অবশ্য এভিয়েশন খাতের এ অবস্থা নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও বিনিয়োগকারীরা এখনই হতাশ হতে রাজি নন। বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ ভোক্তার কাছে উড়োজাহাজ ভ্রমণ এখনো অগ্রাধিকারে আছে বলে জানান অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইউরোপে উড়োজাহাজ ভাড়া নিয়ে অস্বস্তির কারণ হলো মহাদেশজুড়ে কম আয় ও সঞ্চয় হার বেড়ে যাওয়া। বিশেষত হোটেল ও গাড়ি ভাড়া আরো ব্যয়বহুল হয়ে ওঠায় ভোক্তারা সাশ্রয়ী পরিষেবার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। মাস্টারকার্ডের কর্মকর্তা নাটালিয়া লেচমানভা এ বিষয়ে বলেন, ‘ভোক্তারা এখনো ভ্রমণে আগ্রহী হলেও ইউরোপীয় ভোক্তারা খুব মূল্যসংবেদনশীল।’

তিনি জানান, এ কারণে ফ্রান্স বা ইতালির তুলনায় তুরস্ক, রোমানিয়া ও বলকান অঞ্চলের মতো তুলনামূলক সাশ্রয়ী গন্তব্যের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ইউরোপে।

ইউরোপিয়ান ট্রাভেল কমিশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরে ইউরোপজুড়ে উড়োজাহাজ ভ্রমণে খরচ হতে পারে ৮০ হাজার ৩০০ কোটি ডলার, যা গত বছরের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এ খরচের বড় একটি অংশজুড়ে থাকবে সম্পদশালী, আমেরিকান পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের ভ্রমণ।

অন্যদিকে ইউরোপের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ খরচের ভ্রমণ বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১ কোটি ৬০ লাখ আমেরিকান বিদেশে ভ্রমণ করেছে, যা একটি নতুন রেকর্ড ও প্রাক-মহামারী স্তরকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউট। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দৈনন্দিন উচ্চ ব্যয় সত্ত্বেও মার্কিন শ্রমবাজার শক্তিশালী থাকায় ভোক্তারা পর্যাপ্ত খরচ করছে। যদিও এতে তাদের সঞ্চয়ের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে বার্ষিক হিসাবে মার্কিন খানাপ্রতি ভ্রমণ খরচ ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গেছে। কিন্তু ২০১৯ সালের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। ব্যাংক অব আমেরিকার ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ডাটা থেকে এ চিত্র দেখা যায়।

গ্লোবাল এয়ারলাইনস নির্বাহীরা বলছেন, গ্রাহকরা এখনো ভ্রমণ ব্যয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আর্টেমিস ফান্ডের এয়ারলাইনস খাতে বিনিয়োগকারী জেমি লিন্ডসে জানান, উড়োজাহাজ পরিষেবার চাহিদায় ইউরোপ ও এশিয়ায় বেশ পতন ঘটেছে। তবে এটি পুরো খাতকে মন্দার দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করেন না তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com