শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৩ অপরাহ্ন

রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থীদের তালিকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। তাই যেসব বাংলাদেশি নাগরিক আশ্রয়প্রার্থনা করে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের ‘দ্রুত প্রত্যাবাসন’ (ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন) ব্যবস্থায় দেশে ফেরত পাঠাবে সে দেশের সরকার। আর তাদের সংখ্যা হতে পারে ১০ হাজারেরও বেশি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাসাইলাম আবেদন করে ব্যর্থ হওয়া আশ্রয় প্রার্থীদের ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। মূলত ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর দেশটির ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন শুধু স্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার প্রয়াসে। আর দেশটিতে প্রবেশের পর আশ্রয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন তারা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অভিবাসীরা গত বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী বা ভিজিটর ভিসায় ব্রিটেনে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেছেন। মূলত ব্রিটেনে প্রবেশের ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে কাজে লাগানোর প্রয়াসে এসব ভিসা ব্যবহার করেছেন তারা।

তবে দেশটিতে বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয় আবেদনের মাত্র ৫ শতাংশই সফল হয়েছে। অর্থাৎ ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে।

এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তির অধীনে কেবল ব্যর্থ আশ্রয় প্রার্থীরাই নয়, বিদেশি নাগরিকদের যারা অপরাধী এবং যেসব ব্যক্তি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশের পর বাড়তি সময় অতিবাহিত করেছেন তাদেরও নির্বাসনের কাজ সহজতর হবে।

এ ছাড়া রিটার্ন চুক্তিটির ফলে বাধ্যতামূলক কোনো সাক্ষাৎকার ছাড়াই অভিযুক্তদের দেশে ফেরত পাঠনো যাবে কারণ এসব অভিবাসীকে দেশ থেকে ফেরত পাঠানোর জন্য সহায়ক প্রমাণ রয়েছে।

দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, চলতি সপ্তাহে লন্ডনে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় পক্ষ রিটার্ন চুক্তিটিতে সম্মত হয়। সেখানে উভয় দেশ তাদের মধ্যকার অংশীদারত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার কথা জানায়।

টমলিনসন বলেছেন: ‘অবৈধভাবে এখানে আসা বা থাকা বন্ধ করার জন্য অবৈধ অভিবাসীদের অপসারণের কাজ ত্বরান্বিত করা আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশ (যুক্তরাজ্যের) একটি মূল্যবান অংশীদার এবং আমরা তাদের সাথে এই ইস্যুর পাশাপাশি অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের চুক্তিগুলো অবৈধ অভিবাসনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে বলে আমরা ইতোমধ্যে স্পষ্ট প্রমাণ দেখতে পেয়েছি। বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন এবং আমি সবার জন্য ন্যায্য ব্যবস্থা তৈরি করতে বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’

দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, ভিসা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (অন্যান্য দেশের মানুষকে) যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেয় – সাধারণত সেটা মাত্র কয়েক মাস হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর কেউ আশ্রয়ের আবেদন বা অ্যাসাইলাম দাবি করলে তার দেশটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারণ কেউ এই ধরনের আবেদন করলে তাদের নির্বাসনে পাঠানোর ক্ষেত্রে দেশটির হোম অফিস মানবাধিকার আইনসহ বিশাল বাধার সম্মুখীন হয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com