প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের মুহূর্ত গুলোকে আমরা সবসময় স্মৃতি বন্দী করে রাখতে চাই। কিন্তু এমন এক দেশ যেখানে সৌন্দর্য উপভোগের কোনো কমতি নেই চোখের সার্থকতা আর আত্মার তৃপ্তি একসাথেই। এই সুন্দর জায়গাটি হলো এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ ইন্দোনেশিয়া, যা বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে ১৬তম স্হান দখল করে আছে।
ইন্দোনেশীয়ার একটি দর্শনীয় স্থান। ছবি : সংগৃহীত
প্রতি বছর সর্বাধিক ভ্রমণের দেশ হিসেবে পুরস্কৃত হয়ে আসছে এই দেশ। ইন্দোনেশিয়াকে ভূতাত্ত্বিক আশ্চর্যের দেশ বলা হয়। সতেরো হাজারেরও বেশি দ্বীপ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ হিসেবে পরিচিত এই দেশ। এছাড়াও এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অঞ্চল যা প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ারের অংশ। এই ভয়ংকর সৌন্দর্য উপভোগের জন্যও বিখ্যাত ইন্দোনেশিয়া।
ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা লাভের ইতিহাসও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিন হাজার বছরেরও বেশি উপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৪৯ সালে ডাচদের থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়। এরই প্রেক্ষিতে জাকার্তায় একটি স্তম্ভ তৈরী করা হয় যা জাতীয় স্মৃতিসৌধ ওবলিস্ক নামে পরিচিত।
জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী ও অন্যতম একটি পুরাতন শহর। যা শিক্ষা ও শিল্প এর কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। মুসলমানদের খুবই পবিত্র এই শহর। এখানে মসজিদ, জাদুঘর, শপিংমল রয়েছে।
জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া। ছবি : সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ায় সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো বালি যা পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দ্বীপ। এটিই মূলত ভ্রমণের মূল আকর্ষণ বলাই শ্রেয়। সমুদ্রে সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মানুষ আসে। রাতের বেলা এর সৌন্দর্য বিশেষ করে চোখে পড়ে। এছাড়াও রয়েছে অনেক সুন্দর মন্দির, হোটেল ও দর্শণীয় স্থান।
ইন্দোনেশিয়ায় লাম্বোক, বালির মতোনই একটি দ্বীপ। এর সুন্দর দৃশ্যাবলীতে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। সৈকত কম ভিড়, সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ ভ্রমণের জন্য সেরা। দ্বীপের দেশ হলেও ইন্দোনেশিয়ায় সবুজায়নেরও অভাব নেই। এর মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় কমোডো ন্যাশনাল পার্কটির কথা যেখানে এক সময় ড্রাগনদের বাসস্থান ছিল। সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীরা মূলত এখানে বিচরণ করে।
আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট জলাশয়। ছবি : সংগৃহীত
এছাড়াও রয়েছে ইউবুদ বনভূমি যেখানে মূলত বানরদের বসবাস। বিভিন্ন শিল্পকর্ম, জাদুঘর ও মন্দিরের দেখা পাওয়া যাবে এই জায়গায়। বিশাল জায়গা নিয়ে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন, বেগোড়। নানা ধরনের গাছপালা, পাখিদের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর জন্য এই উদ্যানটি সেরা। হাজার হাজার সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সুম্বা একটি বিশেষ সৈকত। কারণ এটি সাদা বালুর সমুদ্রসৈকত এবং এখানে সুন্দর ঝর্ণার দেখাও পাওয়া যায়।
প্রতিটি দ্বীপ, সমুদ্র সৈকত ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য এর প্রতীক বহন করে। একবার ভ্রমণে সব দেখাও সম্ভব না। বেশ কয়েকবার যাওয়া লাগবে বা দীর্ঘদিন ধরে ইন্দোনেশিয়ায় ভ্রমণের জন্য থাকা লাগবে। তার ভেতর বুনাকেন একটি বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত যা জাতীয় সামুদ্রিক পার্ক নামে পরিচিত। বিখ্যাত প্রাচীন স্থান হিসেবে পরিচিত পালেমব্যাং। মুসি নদীর তীরে অবস্থিত এই স্থান।
প্রায় ১৬৭ টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে এখানে, তাদের এই ভয়ংকর সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মানুষ আসে। দেশের বহু আগ্নেয়গিরি, যেমন মেরাপি মাউন্ট এর বিস্ফোরণ এবং বিপজ্জনক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।
সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, ইন্দোনেশিয়া। ছবি : সংগৃহীত
তবে ভ্রমণের জন্য এপ্রিল ও অক্টোবর মাস বা গ্রীষ্মের সময় বেশি উপযোগী। অনেক অনেক বিলাসবহুল হোটেলে ও রেস্তোরাঁ রয়েছে এই দ্বীপের দেশে। কেনাকাটা করেও তৃপ্তি লাভ করে পর্যটকেরা। এদের সংস্কৃতি ও অতিথি পরায়ণে মুগ্ধ বিশ্বের সকল ভ্রমণপিপাসুরা।