পাহাড়ের পাদদেশ ছুঁয়ে ডাউকি নদী। স্বচ্ছ, শীতল, নীল জলরাশি নাড়া দেয় প্রকৃতিপ্রেমীদের। ডাউকি পাহাড়ের জলপ্রপাতে হিমালয়ের বরফের মতো ঠাণ্ডা ডাউকি নদীর পানি। নদীর বেলাভূমিতে বিছানো সাদা-কালো পাথর। পাহাড়, সবুজ প্রকৃতি, পাথর, নদীর এ অদ্ভুত রঙের মিশেলে অপরূপ হয়ে উঠেছে সিলেটের প্রকৃতিকন্যাখ্যাত জাফলং জিরো পয়েন্ট। এ যেন স্বর্গরাজ্য।
বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। নদীর তীরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আরো দৃষ্টিনন্দন।
যা দেখবেন
সীমান্তের ওপারে ভারতীয় পাহাড়-টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, ডাউকি নদীর স্বচ্ছ হিমেল জলরাশি, উঁচু পাহাড়ে গহীন অরণ্য ও সুনসান নীরবতা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দারুণভাবে কাছে টানে।
পাহাড়ের সঙ্গে লেগে থাকা বিশাল পাথরখণ্ড যেন অদ্ভুত এক দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে জাফলংয়ে। খুব কাছ থেকেই দেখা যায় পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন কিছু ঘর। উত্তর পাশের দৃশ্যটা এমন হলেও পূর্ব পাশের দৃশ্য আরো চমকপ্রদ। ডাউকি ঝুলন্ত ব্রিজ যেন জাফলংয়ের প্রকৃতির আরেকটি বৈচিত্র্যময় রূপ। প্রকৃতির এ মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই এখানে ঢল নামে হাজারো পর্যটকের।
বাংলাদেশের পাহাড় থেকে দেখা যায়, ভারতের পাহাড়ের উঁচু-নিচু স্থানে কী যে অদ্ভুতভাবে ঘরগুলো দাঁড়িয়ে আছে। তারপর নীল আকাশ, পাহাড়ের চূড়ার প্রকৃতি যেন মিলেমিশে একাকার। এ দৃশ্য যেন মনে অন্যরকম এক আবেশের সৃষ্টি করে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস অথবা ট্রেনে আপনাকে প্রথমে সিলেট যেতে হবে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়বে সিলেটের উদ্দেশে। বিমানবন্দর বা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকেও ট্রেনযোগে আপনি সিলেট যেতে পারেন। সিলেটে পৌঁছে আপনাকে এবার জাফলংয়ের বাসস্টেশনে যেতে হবে। সেখান থেকে জাফলংয়ের উদ্দেশে প্রতি ঘণ্টায় গেটলক সার্ভিসের বাস চলাচল করে। এ ক্ষেত্রে আসা-যাওয়ায় আপনাকে খরচ গুনতে হবে এক হাজার টাকা।
থাকার জায়গা
রাত্রিযাপন বা বিশ্রামের জন্য জাফলংয়ে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন দামে জাফলংয়ে হোটেলে সিট ভাড়া নিয়ে থাকা যায়।
সতর্কতা
জাফলং জিরো পয়েন্ট বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী একটি স্থান। যেহেতু এটি একটি স্পর্শকাতর এলাকা, সেজন্য আপনাকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোনোভাবেই সীমান্ত অতিক্রম করা যাবে না। আর জাফলংয়ের পাহাড়ে ওঠার জন্য আপনাকে সেভাবে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। শারীরিক শক্তিও থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সব সময় দৃঢ় মনোবল রাখতে হবে আপনাকে। সব মিলিয়ে আপনার ভ্রমণ হোক আনন্দময়।