বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জন্য অন্যতম বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার হয়ে উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ভালো বেতনের পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে দেশটিতে কাজের জন্য যেতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই। এবার দক্ষ কর্মীদের জন্য নতুন এক ধরনের ভিসা চালু করেছে সিউল, যা পেতে পারেন বাংলাদেশিরাও।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ফোর্বস জানিয়েছে, ‘ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা’ নামে একটি নতুন ভিসা চালু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ‘ওয়ার্কেশন’ ভিসা নামেও পরিচিত এই ভিসার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে।
মূলত বিদেশিদেরকে দক্ষিণ কোরিয়া এসে রিমোটলি বা দূর থেকেই কাজ করতে উৎসাহী করতে এই ভিসার প্রচলন করা হয়েছে।
‘ওয়ার্কেশন’ ট্রেন্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠছে উল্লেখ করে দক্ষিণ কোরিয়ার বিচার মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘কোরিয়ায় রিমোট ওয়ার্ক বা দূরে বসে কাজ করা এবং বিদেশিদের ছুটি আরও মসৃণ করতে আমরা একটি নতুন ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এতে আরও বলা হয়, এখন পর্যন্ত বিদেশিদের ‘ওয়ার্কেশন’-এর জন্য ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন করতে হতো বা কোরিয়ায় ভিসা ছাড়াই ৯০ দিনেরও কম সময় থাকতে হতো। নতুন ব্যবস্থার অধীনে বিদেশি সংস্থার কর্মী এবং নিয়োগকর্তাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য কোরিয়ায় ভ্রমণ এবং রিমোটলি কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।
নতুন এই ভিসা পেতে আগ্রহীদের নিজ নিজ দেশে কোরিয়ান দূতাবাসে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র জমা দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম জানায়নি দক্ষিণ কোরিয়া।
এই ভিসা পেতে ইচ্ছুক কর্মজীবীর বয়স ন্যূনতম ১৮ হতে হবে এবং সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে অন্তত এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছেন—এমন কেউ এই ভিসা পাবেন না। শুধু ভিন্ন কোনো দেশে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই এই ভিসা পাবেন; যাতে তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় বসে ‘রিমোটলি’ সেসব প্রতিষ্ঠানের কাজ করতে পারেন।
এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক যোগ্যতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। আবেদনকারীকে ২০২৩ সালে ৮৫ মিলিয়ন ওন বা ৬৬ হাজার মার্কিন ডলার উপার্জন করতে হবে।
ফোর্বস বলছে, নতুন ভিসা ব্যবস্থাকে একটি ‘পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এটি স্থায়ী করা হবে কি না, তা মূল্যায়ন করবে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার।