শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

আসল স্বাদ নিয়ে মাচান

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

মাচান নামটি শুনলেই স্মৃতিতে ভেসে আসে গ্রামে বাঁশের তৈরি উঁচু জায়গার কথা। যেখানে বসে দেখা যাবে বিস্তৃত জলরাশি কিংবা সবুজ প্রকৃতি। এই ঢাকা শহরে মাচানের আবহ এবং মজার খাবারের স্বাদ দিতে চালু হয়েছে মাচান রেস্টুরেন্ট।

একের ভেতর অনেক

যখন মাচানে ঢুকলাম, তখন আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। সিঁড়ি দিয়ে রেস্তোরাঁয় উঠতেই আকাশের কালো মেঘ না কাটলেও আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। বাঁশ দিয়ে করা হয়েছে অন্দরের পুরো সজ্জা। নামের সার্থকতা বোঝাতেই যেন সবকিছুতে বাঁশের নান্দনিক ব্যবহার। বৃষ্টির শব্দের মধ্যেই মাচানে স্বাগত জানান মাচান রেস্টুরন্টের স্বত্বাধিকারী তাসমিয়া আহ্‌মেদ।

তাসমিয়া বললেন, ‘ঢাকা শহরে আড্ডা দেওয়ার জায়গা খুব কম। আড্ডাবাজ খাবারপ্রিয় মানুষের জন্য মাচানে আছে সুন্দর পরিবেশ। মাচানে খাওয়ার পাশাপাশি আড্ডা দেওয়ার পরিবেশকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।’

গুলশানের শাহজাদপুরে মাচানের যাত্রা শুরু হয় গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে। এরপরই শুরু হয় করোনাকাল। বন্ধ থাকে মাচানের কার্যক্রম। আবার নতুনভাবে যাত্রা শুরু গত ১০ জুলাই। তাসমিয়া আহ্‌মেদ বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই আমরা বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। মাচানে পরিবারের পাশাপাশি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীরা তো আসছেন। এখন নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা।’

মায়ের হাতের স্বাদ

তাসমিয়া আহ্‌মেদ বাসায় খাবার তৈরির জন্য নিজের হাতে মসলা তৈরি করেন। তাঁর শাশুড়ি শামি কাবাবের মসলা খুব ভালো তৈরি করেন। মাচানে কাবাব তৈরির জন্য আম্মা নিজ হাতে মসলা তৈরি করে দেন। এমনিভাবে সব খাবারেই ঘরোয়া স্বাদ পাওয়া যাবে মাচানে।

গুলাবি যাবে চাঁদে

এটি কোনো বাংলা সিনেমা বা উপন্যাসের নাম নয়। মাচানের একটি খাবারের নাম। এমন নাম আরও আছে—মন মাতানো বাংলা, শাহি ভোজবাজি, ভারতীয় আহা-রে, সবজি ভালোবাসি, চায়না খাওয়ার বায়না, স্বাদের সাথি, প্রয়োজনে পাশে।

‘মনমাতানো বাংলা’য় পাবেন শাকে ঢাকা চিংড়ি, ভাজা-তাজা লইট্টা, মোহনীয় টাকি ভর্তা, ডালে ডুবন্ত টমেটোসহ আরও বেশ কিছু মজাদার পদ। ‘শাহি ভোজবাজি’তে রয়েছে ব্রুকলি পোলাও, রোস্টের দোস্ত, পরানের শামি কাবাব, খাস-ই-রেজালা এবং গুলাবি যাবে চাঁদে। ‘ভারতীয় আহা-রে’ ভাগে রয়েছে ভাত জিরজিরা, ভাঁজখোলা রুটি, মাখামাখি ডালে! কড়াই মুরগি। যাঁরা সবজি ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য ‘সবজি ভালোবাসি’ পদে রয়েছে ভাত জিরজিরাম রাজমা বাহারিসহ বেশ কয়েকটি পদ।

‘চায়না খাওয়ার বায়না’তে রয়েছে চীনা নানা পদ। ‘স্বাদের সাথি’ পদে রয়েছে জিরা রাইতা রগড়, বুন্দিয়া রাইতা রগড়, ব্যাপক বোরহানি। মাচানে সবচেয়ে বেশি পদ রয়েছে ‘প্রয়োজনে পাশে’। এতে পাবেন হাক্কা নুডলসের ধাক্কা, স্যুপ খাপপুণ খা, বিফমাখা সোহাগ, কড়াই মুরগি, আলু ডোবানো বিফ, জাতের বিফ কালো ভালো, মাটন রোগান খুব জোশ! পাঁচফোঁড়নে আলুর দম, আলু জিরায় মাখামাখি, সবজি চীন চীন, মাখামাখি ডালে, কচি লুচি, প্যাচালি পরোটা, সরল পরোটা, ভাঁজখোলা রুটি এবং মোলায়েম পানীয় পাওয়া যাবে। মাচানে কিছুদিনের মধ্যে নিয়ে আসা হবে তন্দুর।

মাচান খোলা থাকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মাচানে শুরুর দিকে একসঙ্গে ৮৪ জন বসার ব্যবস্থা ছিল। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৪৮ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাচানে বিয়ে, গায়েহলুদ, জন্মদিনসহ যেকোনো আয়োজন করার সুযোগ রয়েছে। ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, নিকেতন ও বাড্ডা এলাকায় বিনা মূল্যে বাড়িতে খাবার সরবরাহের (হোম ডেলিভারি) ব্যবস্থা রেখেছে মাচান। ঠিকানা: গুলশান লেক ড্রাইভ রোড, খ-৬৬-৫ শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা। ফোন: ০১৩১১৩৩৯১৪০।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com