সাজেক ইউনিয়ন (ইংরেজি: Sajek Union), বাঘাইছড়ি উপজিলার রাঙামাটি জিলায়। আয়তন: ৪৩,৭৭৬ একর (বর্গ কিলোমিটার)।সাজেক ইউনিয়নর সাক্ষরতার হার-২১.৫%। বাঘাইছড়ি উপজেলার সবচেয়ে বড় ও দূর্গম ইউনিয়ন সাজেক। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে এ ইউনিয়নটির অবস্থান। ৬০৩ বর্গমাইল আয়তনের এ ইউনিয়নে ৪ টি উপজাতীয় সম্প্রদায়ের বসবাস। চাকমা,ত্রিপুড়া,পাংখুয়া ও লুসাই। এদের মধ্যে চাকমা সম্প্রদায় বেশি। এরপর ত্রিপুরা, লুসাই ও পাংখুয়া সম্প্রদায়ের অবস্থান। তাদের সহঅবস্থানে বসবাস হলেও নেই পারস্পরিক বোঝাপারা। এক সম্প্রদায় আরেক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ। এ বিরোধের জের ধরে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষও হয়েছিল। তারা স্ব স্ব সংস্কৃতি ও পেশা নিয়ে স্বাধীন ভাবে থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দবোধ করে । পাংখুয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা এখনও তীর ধনুক ও বর্লম দিয়ে পশু শিকার করে। লুসাই সম্প্রদায়ের লোকেরা লেংটি (ধুতি) পড়ে এখনও। তবে চাকমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকেরা অন্য দু সম্প্রদায় থেকে শিক্ষিত হওয়ায় তাদের মধ্যে একটু আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্ভূক্ত হলেও ঢাকা থেকে যাবার জন্য খাগড়াছড়ি হয়ে যাওয়াই সবচাইতে সহজ। খাগড়াছড়ি হতে সরাসরি চান্দের গাড়ী নিয়ে সাজেক যাওয়া যায়। চান্দের গাড়ী যখন পাহাড়ের পথ ধরে ছুটে চলে তখন শুধু প্রকৃতির একক রূপ আপনার চোখে ধরা পরবে অাপরূপ হয়ে। দু’পাশে গভীর অরণ্য, মাঝে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ। গাড়ি কখনও ওপরের দিকে উঠছে, কখনও নিচের দিকে। মাঝে মধ্যে মনে হবে এই বুঝি আকাশ ছুঁতে চলেছি। কোনো জনমানবের চিহ্ন নেই। কেবলই অবাক হয়ে সাজেকের রূপ দেখা।
এখানকার স্থানীয় আর্মি ক্যাম্প থেকে কিছুটা ভেতরে কমলক নামে একটি এলাকা আছে, খুবই সুন্দর। সেনাবাহিনীর অনুমতি ও সঙ্গ নিয়ে সেখানে যেতে পারেন। সেখানে গিয়ে প্রকৃতির এমন এক রূপ আবিষ্কার করবেন যা আর কোথাও দেখেনি। কমলক রাঙামাটি জেলার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় সিপ্পুতে অবস্থিত। সেখানকার উপজাতিরা পাঙ্কু সম্প্রদায়, অধিকাংশই শিক্ষিত এবং পোশাকে আধুনিক।
রাতে থাকার জায়গাঃ
সাধারণের রাতে থাকার জন্য কোন রেষ্ট হাউজ বা কটেজ গড়ে উঠেনি এখনও। একমাত্র থাকার জায়গা আর্মিদের রেস্ট হাউজ। ইসিবি ১৯ এর নির্মাণ করা দু’রুমের চমৎকার একটি রেস্ট হাউজ! তবে আর্মি রেফারেন্স ছাড়া এখানে জায়গা হবেনা আপনার। আর্মি রেফারেন্স থাকলেও অন্ততঃ ১৫ দিন আগে বুকিং দিতে হবে এখাতে থাকার জন্য।
কংলাক পাড়ায় বাঁশ-কাঠের তৈরী জেলা পরিষদের একটা ডাক বাংলো আছে বটে..তবে সেটা থাকার অযোগ্য। সেক্ষেত্রে আপনি কংলাক পাড়ার কারবারীর/সর্দার/হেড-এর আতিথেয়তা গ্রহণ করতে পারেন। দায়িত্বে ছিলেন কারবারীর সহযোগী জারা পাংখু। কংলাকে রাত্রি যাপনের ইচ্ছে থাকলে জারা পাংখুর সাথে যোগাযোগ করে যেতে পারেন (যোগাযোগের নম্বর-০১৫৫৩২৮৭৪১৮)।
খাগড়াছড়ি:
পর্যটন মোটেলঃ এটি শহরে ঢুকতেই চেঙ্গী নদী পার হলেই পরবে। মোটেলের সব কক্ষই ২ বিছানার। ভাড়াঃ এসি ২১০০ টাকা, নন এসি ১৩০০ টাকা। মোটেলের অভ্যন্তরে মাটিতে বাংলাদেশের মানচিত্র বানানো আছে। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২০৮৪৮৫।
গিরি থেবার : এটি খাগড়াছড়ি শহরের কাছে খাগড়াছড়ি ক্যন্টনমেন্টের ভিতরে অবস্থিত। এখানে সিভিল ব্যক্তিরাও থাকতে পারে। সব রুমই শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত। যার মধ্যে ২ টি ভি আই পি রুম, প্রতিটির ভাড়া ৩০৫০ টাকা। ডাবল রুম ভাড়া ২০৫০ টাকা। একটি সিংগেল রুম যার ভাড়া ১২০০ টাকা। যোগাযোগ : কর্পোরেল রায়হান- ০১৮৫৯০২৫৬৯৪।
হোটেল ইকো ছড়ি ইনঃ খাগড়াপুর ক্যান্টর্মেন্ট এর পাশে পাহাড়ী পরিবেশে অবস্থিত। এটি রিসোর্ট টাইপের হোটেল। যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২৬২৫, ৩৭৪৩২২৫।
হোটেল শৈল সুবর্নঃ ০৩৭১-৬১৪৩৬, ০১১৯০৭৭৬৮১২।
হোটেল জেরিনঃ ০৩৭১-৬১০৭১।
হোটেল লবিয়তঃ ০৩৭১-৬১২২০, ০১৫৫৬৫৭৫৭৪৬, ০১১৯৯২৪৪৭৩০।
হোটেল শিল্পীঃ ০৩৭১-৬১৭৯৫।