বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স- বাংলাদেশ (আইসিসিবি) উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছে, উন্নয়ন অংশীদার ও বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিবাদন! বাংলাদেশের পক্ষে এটি একটি দুর্দান্ত অর্জন, বাংলাদেশ যে নিজস্ব সম্পদ দিয়ে এ-জাতীয় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষম, তা প্রমাণ করেছে।
গতকাল প্রকাশিত আইসিসিবির ত্রৈমাসিক বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, পদ্মা সেতুটি সমাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের সঙ্গে যুক্ত হবে। এ সেতু যোগাযোগ, বাণিজ্য, শিল্প, পর্যটন এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। বিশেষত এটি ভুটান, ভারত এবং নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য ও পর্যটনের জন্য আরো দ্রুত সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে।
আইসিসিবির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর মূল কাঠামোটি ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। রাস্তা ও রেলপথসহ দ্বিতলা সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০০৭ সালে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ১ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ মূল প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে তিন গুণেরও বেশি। নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং সময়মতো বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ ধরনের বৃহৎ প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ হ্রাস করা যেতে পারে। পদ্মা সেতুর রেললাইন সংযোগটি আশা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে। এ সংযোগ দেশের মধ্য ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগকে উন্নত করবে। রেল সংযোগ প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার, এর ৮৫ শতাংশ একটি চুক্তির আওতায় চীনের এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে চীন সরকার সরবরাহ করবে।
এতে আরো বলা হয়, বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে বার্ষিক জিডিপিতে এটি প্রায় ১ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখবে, দারিদ্র্য হ্রাস করবে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াবে। এটি দক্ষিণ এবং দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলে বিনিয়োগের দরজা খুলে দেবে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানতম স্থলবন্দর বেনাপোলের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
জিডিপিতে প্রভাব নিয়ে লেখা হয়, জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সমীক্ষায় দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকার যাতায়াত সময় ১০ শতাংশ হ্রাস পেলে অর্থনৈতিক আয় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ২০১১ সালে বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প মূল্যায়ন দলিল অনুসারে, দক্ষিণ- পশ্চিম অঞ্চলের জিডিপির বার্ষিক বৃদ্ধি ১ দশমিক ৭ শতাংশ হবে এবং এতে জাতীয় জিডিপির বার্ষিক বৃদ্ধি হবে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।