1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
চলো যাই ভূটান ঘুরে আসি
মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

চলো যাই ভূটান ঘুরে আসি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১

সরকারি কাজকর্ম, ধর্ম আর বানিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী থিম্বু ভূটানের বৃহত্তম শহর। এখানে আধুনিকতার সাথে প্রাচীন ঐহিহ্যের মেলবন্ধন ঘটেছে। থিম্বু নদীর তীরে আকাবাকা পাহাড়ি রাস্তা ঘেরা এমন প্রানবন্ত শহরের শোভা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। অসাধারন স্থাপত্য শৈলীতে সাজানো রাজধানীতে রয়েছে প্রচুর দর্শনীয় স্থান। বলা যায় নান্দনিক সৌন্দর্যের আতুরঘর থিম্বু।

থিম্বুর প্রানকেন্দ্র থিম্বু জং। এখানে রয়েছে দ্যা ন্যাশনাল এসেমবিøসহ অনেক রাষ্ট্রীয় দফতর। ওয়াংচু নদীর তীরে সবুজের সমারোহ সত্যি নয়নাভিরাম। রাজধানীর পাশে পাহাড়ের উপরে সোনালী রঙের বিশালাকার এক বৌদ্ধমূর্তি। জায়গাটি গ্রেট বুদ্ধ পয়েন্ট নামেও পরিচিত। এখান থেকে থিম্বু শহরের এক অপরূপ পেনারোমিক ভিউ পাওয়া যায়। প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের মতো এই মূর্তিটি। থিম্বু শহরের সবজায়গা থেকে দেখা যায়। মূর্তিটি ১৬৯ ফুট উচু আর প্রায় ১৭ তলা বাড়ীর সমান এই মূর্তিটি ঘিরে রয়েছে শত সহ¯্র ক্ষুদ্র মূর্তি।

থিম্বু শহরের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত ন্যাশনাল মেমোরিয়াল বিল্ডিং। এটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের একটি প্রার্থনাস্থল।হিমালয়ের কোলে বৌদ্ধ রাজতন্ত্রের দেশ ভূটান। এই ভূটানের প্রবেশদ্বার ফ্রন্ট শোলিং। ভূটানের প্রধান শহর পারো দেখার আগে ফ্রন্ট শোলিং ঘূরে দেখতে পারেন। রাত্রে ফ্রুন্টশেলিং এ কাটিয়ো পরদিন সকালে বাসে পারো রওনা দিন। চারিপাশে রাস্তার দৃশ্যাবলী অসাধারন প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘন্টা সময় লাগে। ৫ কি.মি দূরে ঘরবন্দী পাহাড়ে চেকপোষ্ট। এরপর তাকাতি কোটি, ভি,আই, পি জাম, চুখা পাওয়ার প্রজেক্ট সে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য পার হয়ে পারোর পথে। পথে যেতে যেতে দেখতে পাবেন অনেক উপরে আচোদ্রপাচি জং। কাজ করা সাদা রংয়ের বাড়ী। বাপাশে বয়ে চলেছে নীলাভ সবুজ ধারার নীল ওয়াংচু নদী। লাল, সবুজ, হলুদ, কমলা, রংয়ের রডোডেন্ড্রন বন, পেছনে পাহাড় আর পাহাড়। দূর থেকে পারো শহরটি দেখা যায়। পারো ওয়াংচু একেবেকে এগিয়ে চলেছে পাহাড়ের কোলে ঘেষে। আর দূরে পাহাড়ের আড়াল থেকে উকি মারছে বরফ।

হোটেলে লাঞ্চ সেরে যেতে পারেন তাকমাং মনাট্রি। ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ভূটানের পবিত্রতম একটি তীর্থস্থান। ৩০০ বছর পুরানো এই স্থাপত্য সেকালের স্থপতিদের এক অসাধারন নির্মান। বনের মধ্যে পাহাড়ি রাস্তার পাশে তামসাং মনাট্রি। এরপর যেতে পারেন ড্রুক গিয়ল জং (দুর্গ)। এই জং ভূটানের শৌর্যের প্রতীক। এখান থেকে আর কিছুদূর গেলেই তিব্বত সিমান্ত। লাসায় এক ধরনের কমলা লেবু পাওয়া যায় যা সারাবছর উৎপাদিত হয়। ভূটান থেকে সবচেয়ে বেশি কমলালেবু রপ্তানী হয় বাংলাদেশে।

পরের দিন যেতে পারেন চেললা টপ। পারো থেকে ৫২ কি.মি. দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৯৮৮ মিটার উচুতে এর অবস্থান। চারিদিকে পাহাড় আর পাহাড়। এখানে সারাবছর বিস্তৃত পর্বতের অপার নৈসর্গের সঙ্গে চারিদিকের তৃপ্তিদায়ক স্বর্গীয় দৃশ্যের অনুভূতি আপনাকে মুগ্ধ করবে। ফেরার পথে অ্যানিমোতালাং মনাট্টি দেখে ফিরতে ফিরতে বিকাল।

পারের মূল আকর্ষন পারো জং ঘুরে দেখতে পারেন। পাচঁতলা জং এর পশ্চিম দিক দিয়ে ঢুকতে হয়। প্রতিবছর বসন্তকালে এখানে কোকো নৃত্য উৎসব হয়। নানা অনুষ্ঠান হয় এসময় সারা ভূটান জুড়ে মুখোশ পরে শিল্পীরা নাচ গান করে।দূর দূরান্ত থেকে দেশি বিদেশি পর্যটক ও নানা সম্প্রদায়ের মানুষ যোগ দেয় এই অনুষ্ঠানে। সূর্যাস্তের দুঘন্টা আগ থেকে এই প্রদর্শন চলে।

এরপর যেতে পারেন ন্যাশনাল মিউজিয়াম। এখানে ভূটানের কৃষ্টি, শিল্প ও সংস্কৃতি সংরক্ষিত আছে। সাত তলা বিশিষ্ট এই মিউজিয়ামের নীচ তলায় ব্রোঞ্চ, তামা, ও বাশের তৈরী জিনিসপত্র, প্রথম তলায় বাস ও বেতের তৈরী জিনিসপত্র ও অস্ত্র সস্ত্র, দ্বিতীয় তলায় জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং বৌদ্ধ ধর্মের নিদর্শন, তৃতীয় তলায় পুরান বাসনপত্র, গহনা, পুরাতন মুদ্রা, জামা কাপড়, চতুর্থ তলায় পঞ্চাশ শতকের নিওলিথিক শিল্প ধর্ম, পঞ্চাশ তলায় স্তাপত্য এবং ছষ্ঠ তলায় ঐতিহাসিক ছবি ও ডাকটিকেট সংগ্রহশালা।

লাঞ্চের পর পারোতে আজ শেষ বিকেল। বিকেলে যেতে পারেন পারোর ম্যালে। এটি পারোর প্রধান মার্কেটিং এরিয়া। রাস্তার দুপাশে সাজানো সুন্দর দোতলা তিনতলা বাড়ী, বিভিন্ন রকম জিনিসপত্রের সুন্দর সাজানো দোকানপাট। দোকানগুলোর নির্মানশেলি চমৎকার। কারুকাজ দেখে মুগ্ধ হতে হয়। নানা ধরনের ডেকোরেশন পিস, মূর্তি, কয়েন, ছবি সবই পাওয়া যায় এখানে তবে দাম আকাশ ছোয়া।

একটু এগিয়ে গেলে একটি দোতালা বাড়ীতে রয়েছে আর্ট গ্যালারি। একটি আসামান্য শিল্প সংগ্রহশালা সূর্য ডুবছে, চারিদিকে লাল আলোয় ভরে গেছে। সে এক মনোরম পরিবেশ। দূরের পাহাড়গুলো লাল মনে হবে। এমন মনোরম দৃশ্যের ছবি আপনার স্মৃতিপটে সারাটা জীবন মনে থাকবে।

ড্রুক এয়ারে ভূটান যেতে পারেন বাই-এয়ার। পারোতে সাধারন হোটেল থেকে হোমষ্টে, বাজেট হোটেল পাবেন সর্বত্র। খাওয়া দাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের রেষ্টুরেন্ট পাবেন। বছরের সব সময়ই ভূটান যেতে পারেন। তবে বর্ষার দু,তিন মাস না যাওয়াই ভাল। গ্রীষ্ম, শরৎ আর বসন্ত ভূটান জেসে ওঠে এক অন্যরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে। তাই এই সময়ই বেড়াতে যাওয়া ভাল।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com