কুয়েতি দিনারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্য সর্বোচ্চ হলেও প্রবাসীদের কর্মহীন ও আকামা জটিলতার প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্সের ওপর।
কুয়েতি মুদ্রা এক দিনারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকায় এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া গেছে। চলতি সপ্তাহে এক কুয়েতি দিনারে মিলেছে ৩৬৯ টাকা থেকে ৩৭৬ টাকার মতো। এরপরও কুয়েত থেকে রেমিট্যান্স পাঠানো কমছে।
সম্প্রতি কুয়েতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, স্কুল ও কলেজসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির শ্রমিক সরবরাহের চুক্তি শেষ হয়েছে। ফলে বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি বর্তমানে কর্মহীন। অনেক শ্রমিক আকামা পরিবর্তনের টাকা জোগাড় করতে না পেরে পড়েছেন জটিলতায়।
এ অবস্থার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে মনে করেন প্রবাসীরা। তার মধ্যে রয়েছে– কুয়েতে বর্তমানে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মহীন। আবার অনেকের আগের মতো বাড়তি আয়ের উৎস নেই। এছাড়া আবাসন খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে, যা মেটাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেক প্রবাসীকে।
অন্যদিকে, অনেকে নতুন কাজের খোঁজে অন্য কোম্পানিতে আকামা স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এতে খরচ হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা। অনেকে এই খরচ বহন করতে না পেরে দেশে চলে যাচ্ছেন। তার মধ্যে দেশটিতে অভিবাসী আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ধড়পাকড় চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কয়েক বছর আগেও রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় কুয়েত ছিল। কিন্তু সম্প্রতি কুয়েত থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর গতি কমেছে। এ অবস্থায় উচ্চ রেমিট্যান্সের ধারা অব্যাহত রাখতে কুয়েতে অবস্থানরত বিভিন্ন কাজে দক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাজে লাগানো ও আবাসন খরচ কমিয়ে আনা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জিলিব আল সুয়েখ কেবি.ই এক্সচেঞ্জ, কুয়েতের ব্যবস্থাপক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের অনেক নিয়মিত কাস্টমারের অবস্থাই এখন বেশ শোচনীয়।
রেমিট্যান্স কমার আরেক কারণ জানান তিনি। বলেন, যাদের আয় ভালো তারা দেশে টাকা পাঠাচ্ছে, কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে।
রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি বন্ধের ওপর জোর দেন এই এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থাপক। তিনি বলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে হুন্ডি বন্ধ করা জরুরি। শুধু বিদেশ থেকে নয়, দেশ থেকেও বিদেশে হুন্ডি বন্ধ করার পাশাপাশি ভিসা কেনাবেচার দিকেও নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভিসার ক্রয় মূল্য পরিশোধ করা হয় রেমিট্যান্সের অর্থ দিয়ে। এক্ষেত্রে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা মধ্যস্থতা করে। ফলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স দেশে যাচ্ছে না।