ভারতের রাজস্থান প্রদেশে সপ্তদশ শতাব্দিতে যে শহর গড়ে ওঠে সেই শহরের নাম জয়পুর। শহরটি ভারতের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পিংক সিটি খ্যাত জয়পুর শহরের নকশা করেছেন বিখ্যাত বাঙালি স্থপতি বিদ্যাধর ভট্টাচার্য। ১৭২৭ সালে মুঘলদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলে রাজা জয়সিংহ এই শহরে রাজধানী স্থানান্তর করেন। দিল্লি থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জয়পুর শহর পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয় শহর। জন্তরমন্তর ও অ্যামের বা আম্বর দুর্গ প্রাসাদ নামে জাতিসংঘের ইউনেস্কোর দুটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রয়েছে এখানে।
সিটি প্যালেস
ইতিহাস, স্থাপত্য ও ছবির জন্য সিটি প্যালেস বিখ্যাত। পিংক সিটি জয়পুরে অবস্থিত এই প্যালেসে আসতে ভোলেন না কোনো পর্যটক। এটি ১৭২৯ সাল থেকে ১৭৩২ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় সাওয়াই জাই সিংহ নির্মাণ করেন। প্যালেসে দুটি অংশ রয়েছে- চন্দ্র মহল ও মুবারাক মহল। দিল্লি থেকে এখানে ভ্রমণ করতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা সময় লাগে।
আম্বার দুর্গ
অ্যামার দুর্গ নামেও পরিচিত এটি। ১৫৯২ সালে রাজা মানসিংহ কর্তৃক এটি নির্মিত হয়। জয়পুর শহর থেকে দুর্গটি ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রাজা প্রথম জয়সিংহ কর্তৃক এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। লাল বেলেপাথর ও মার্বেল পাথর হিন্দু-মুসলিম স্থাপত্যের পরিচয় দেয়। দুর্গটির পাশে রয়েছে শিলাদেবীর মন্দির রয়েছে।
নাহারগড় দুর্গ
দুর্গটি থেকে আম্বার বা অ্যামের দুর্গ ও জয়পুর শহর দেখা যায়। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে মানুষ নাহারগড় দুর্গ দেখতে ছুটে আসেন। পরিবারের সঙ্গে বনভোজনের সুযোগ রয়েছে এখানে। জয়পুর ওয়াক্স মিউজিয়াম উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। জয়পুর শহর থেকে ১ থেকে দেড় ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে এখানে আসা যায়।
জয়গড় দুর্গ
স্থানীয়ভাবে বিজয়ের দুর্গ নামে পরিচিত জয়গড় দুর্গ। এতে রাজপুত সৈন্যরা অস্ত্রশস্ত্র জমা করে রাখত এবং সামরিক সমাবেশ করতো। আম্বার ও নাহারগড় দুর্গের কাছাকাছি অঞ্চলে এটি অবস্থিত। এই দুর্গে বহু ঐতিহাসিক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। সামরিক যাদুঘর দেখার জন্য অনেক মানুষ আসেন। দুর্গটিতে সব বয়সের মানুষ ভ্রমণ করেন।
হাওয়ামহল
রাজপুত বীর মহারাজা সাওয়াই প্রতাপ সিংহ ১৭৯৯ সালে হাওয়ামহল নির্মাণ করেন। ভেন্টিলেশনের জন্য ৯৫৩টি জানালা রয়েছে। ৫-তলাবিশিষ্ট ভবন এটি। জয়পুরের ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে ইতিহাসসচেতন মানুষের কাছে জনপ্রিয় এটি। জয়পুর শহর থেকে আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টার মধ্যে এখানে পৌঁছা সম্ভব। প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, পিংক সিটি বাজার প্রণিধানযোগ্য স্থান।