গ্রিসে রাতের আঁধারে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বাংলাদেশি এক নারী উদ্যোক্তার স্বপ্ন। দীর্ঘ ১৬ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিল তিল করে গড়ে তোলা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেলো মাত্র কয়েক মিনিটে।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের আখারনুন রোডে গত মঙ্গলবার রাতে নারী উদ্যোক্তা ও গ্রিস আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা মৌসুমী পারভীনের মিনি মার্কেটে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
অগ্নিকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানে থাকা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানান মৌসুমী পারভিন।
জানা যায়, মধ্যরাত হওয়ার কারণে দোকানের ভেতরে কেউ ছিল না এবং রাস্তায়ও লোকজনের তেমন চলাচল ছিল না। হঠাৎ দোকানে আগুন দেখে আশপাশের প্রবাসী বাংলাদেশিরা মৌসুমীকে খবর দিলে দৌড়ে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে পরিস্থিতি নিরূপায়। জ্বলে-পুড়ে সারাজীবনের সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তার মধ্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রবাসী নারী ব্যবসায়ী মৌসুমীপারভীন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছানোর আগেই আগুন তিনতলার বারান্দায় পৌঁছে যায়। ফায়ার সার্ভিস একসময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও মৌসুমী দোকানের একটি সুতাও বাঁচাতে পারেননি।
মৌসুমীর ভাষ্য অনুযায়ী দীর্ঘ ষোলোটি বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিল তিল করে গড়ে তোলেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। তার পরিবারের সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। খবর পেয়ে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তার সঙ্গে দূতাবাসের মিনিস্টার মোহাম্মাদ খালেদ, দ্বিতীয় সচিব রাবেয়া বেগম ও দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মৌসুমী পারভীন আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বাংলাদেশ সরকার, দূতাবাস এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির কাছে তার পাশে থেকে পুনরায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে সহায়তার অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ শান্তনা বক্তব্যে বাংলাদেশ দূতাবাস সবসময় তার পাশে আছে উল্লেখ করে আরও বলেন, আপনারমতো একজন নারী উদ্যোক্তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি, আপনার পাশে থেকে সহায়তার হাত বাড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশ দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশ কমিউনিটিকে সঙ্গে নিয়ে আপনার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবে।
এছাড়াও বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সাবেক সভাপতি হাজি আব্দুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গ্রিস শাখার সভাপতি মান্নান মাতুব্বর, সহ-সভাপতি মিয়া মিজান, সাবেক সাধারণ-সম্পাদক আল্ফ়া মিজান, কমিউনিটি নেতা আহসানউল্লাহ হাসানসহ ব্যবসায়ী ও প্রবাসীরা দূতাবাসের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সাংবাদিকের প্রশ্নে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ বলতে পারেননি ক্ষতিগ্রস্ত নারী প্রবাসী ব্যবসায়ী মৌসুমী পারভীন। গ্রিক ফায়ার সার্ভিসের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হবে বলে তিনি আশাবাদী।