সাইপ্রাসে বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ যারা নিয়েছেন, তাদের একটি বড় অংশই রুশ নাগরিক। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক অনুসন্ধানী দলের হাতে দেশটির ১,৪৭১টি আনুষ্ঠানিক দলিলপত্র আসে। ওই সূত্রে ২,৫৪৪ ব্যক্তির কথা জানা যায় যাদের, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এদের অর্থের বিনিময়ে সাইপ্রিয়ট জাতীয়তার পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১,০০০ জন আবার ছিলেন- ইইউ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার ধনী নাগরিক।
এমনকি আল জাজিরার হাতে আসা নথিসূত্রে দেখা গেছে, আলোচিত সময়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের অর্ধেকই ছিলেন রুশ নাগরিক। এ ঘটনা প্রমাণ করে কিভাবে রাশিয়ার অভিজাত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, এবং অপরাধীরা ইউরোপীয় সাইপ্রাসকে ব্যবহার করে সমগ্র ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবাধে চলাচল, বসবাস এবং ব্যাংকিং করার সুযোগ পাচ্ছে।
আবেদনকারীর বিনিয়োগকেই প্রাধান্য দিয়ে; অপরাধের রেকর্ড, দুর্নীতির অভিযোগ কিছুই গ্রাহ্য করেনা সাইপ্রাস। ধনীরা তাই দেশটির আবাসনখাতে মাত্র ২৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করলেই পায়- ইইউ প্রবেশের সোনালী ছাড়পত্র।
রাশিয়ার প্রভাবশালীদের জন্য সাইপ্রাস কতটা সুযোগ করে দিয়েছে- তার প্রমাণ মিলবে দেশটির প্রধান বিমান বন্দর লারনাকা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে বাইরে আসা মাত্রই। সেখানে বড় বড় সব বিলবোর্ডে বিলাসবহুল সম্পত্তি, বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে রুশ ভাষায় । আরো আছে সাইপ্রিয়ট নাগরিকত্ব পেতে স্থানীয় যেসব এজেন্সি সাহায্য করে তাদের প্রচারণা। সাইপ্রাসের অর্থনীতির জন্য রাশিয়া যে বড় উৎস হয়ে উঠেছে, তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ যেন সবকিছু।
যারা পাসপোর্ট কিনতে পেরেছেন- তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন; রাশিয়ার সাবেক উপমন্ত্রী ইগর রেভা এবং রুশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ভাদিম মস্খোভিচ।
অন্য প্রভাবশালীদের মধ্যে আছেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত রেলওয়ে কোম্পানির একটি অঙ্গ:প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান; ভিটালি এভদোকিমেঙ্কো। আরও আছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য ভ্লাদিমির ক্রিসতেঙ্কো। তার সৎমা বর্তমানে রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।