শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

বৃষ্টিবিঘ্নিত নিউইয়র্ক, বাস, ট্রেন, বিমান চলাচলে বিঘ্ন, জনজীবনে অস্বস্তি, জরুরি অবস্থা ঘোষণা

  • আপডেট সময় শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বলতে গেলে সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টি হলো নিউইয়র্কে। টানা কয়েকদিন দিনভর ঝরঝর নয়তো ট্যাপট্যাপ ঝড়েই যাচ্ছে বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে, কখনো মাঝারি, কখনো হালকা। এতে নিউইয়র্কের পাঁচটি বোরোতেই দেওয়া হয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা। ভারী বৃষ্টিপাতে নগরের সাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বিঘ্নিত হয় জনজীবন। টানা তিন দিন ধরে বৃষ্টির পর শুক্রবার মেয়র এরিক অ্যাডামস জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং নিউইয়র্কারদের সতর্ক থাকতে বলেন, সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেন।

নগরের কোথাও কোথাও ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। শুক্রবার দুপুর নাগাদ জন এফ কেনেডি বিমান বন্দরে রেকর্ড পরিমান ৭.৮৮ ইঞ্চি বৃষ্টি পরিমাপ করা হয়। এর আগে এখানে সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড হয় ২০১১ সালের ১৪ আগস্ট। যার পরিমান ছিলো ৭.৮ ইঞ্চি।

যারা ঘরে আছেন, ঘরেই থাকুন, যারা স্কুলে বা কাজে আছেন তারাও নিরাপদ আশ্রয়েই থাকুন, বলেন মেয়র এরিক।

এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সাবওয়ে স্টেশনে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। সে ব্যাপারেও সতর্ক করেন মেয়র। তিনি বলেন, নগরে চলাচল ভীষণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

আবহাওয়ার পরিস্থিতিকে ‘বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে মেয়র বলেন, বৃষ্টি আরও হবে, ফলে বিপদ বাড়বেই।

এর আগে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল নিউইয়র্ক সিটি, লং আয়ল্যান্ড ও হাডসন ভ্যালিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

হোকুলও নিউইয়র্কারদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বিশেষ করে গাড়ি চালাতে নিষেধ করেন। ‘পথে পথে পানি জমে আছে, বাইরে বের হলে সেটাই দেখতে হবে, বলেন গভর্নর।

নিউইয়র্কের সিটি এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জ্যাক ইসকল যারা বেজমেন্ট ও বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে বাস করছেন তাদের উঁচু কোনো স্থানে সরে যাওযার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।

এমটিএ বলেছে, তাদের পক্ষে অতি সীমিত মাত্রায় সাবওয়ে চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির ফলে অনেক স্থানেই সাবওয়ে পানির নিচে চলে গেছে। পাঁচটি বোরোতেই বাসগুলোকে কোথাও কোথাও রুপ পরিবর্তন করে চলতে হচ্ছে এবং বৃষ্টির কারণে বিলম্বিত হচ্ছে।

এমটিএ’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও জানো লিবার জানিয়েছে, এলআইআরআর এর ট্রেনগুলো শিডিউল মাফিক চলছে, কিন্তু মেট্রো-নর্থ রেলরোড প্রকৃতঅর্থে বন্ধই রাখা হয়েছে। আর অ্যামট্র্যাক জানিয়েছে তাদের ট্রেনগুলো অধিকাংশই বিলম্বিত শিডিউলে চলছে।

স্কুল চ্যান্সেলর ডেভিড ব্যাংকস জানিয়েছেন নগরের ১৪০০ পাবলিক স্কুলের মধ্যে প্রায় ১৫০টিতেই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে সপ্তাহের শেষ দিন পর্যন্ত স্কুল খোলাই রাখা হয়েছে। তবে বাস কোম্পানিগুলোকে আগেভাগেই ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের ঘরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে শিক্ষা বিভাগ।

নগরের এয়ারপোর্টগুলোতে ভ্রমণকারীদের যাত্রা বিঘ্নিত হয়। ভিজিবিলিটি কমে যাওয়ায় বিমান ওঠানামাও ছিলো চ্যালেঞ্জিং। লাগর্ডিয়া এয়ারপোর্টের টার্মিনাল এ শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কিছু বিমানের উড্ডয়ন হয় বাতিল নয়তো বিলম্বিত করা হয়।

বৃষ্টির কারণে অনেক হাইওয়েই বন্ধ করা হয় নিউইযর্ক জুড়ে। বেল্ট পার্কওয়ে, ব্রঙ্কস রিভার পার্কওয়ে, গ্রান্ড সেন্ট্রাল পার্কওয়ে ও মেজর ডিগান এক্সপ্রেসওয়ে দিনে বেশ কয়েক দফা বন্ধ রাখা হয়। তবে কোনো কোনোটি পরে খুলে দেওয়া হয়।

শনিবারেও একই ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে। আর রোববারে সূর্যের দেখা মিলবে নিউইয়র্কে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com