কাতারের রাজধানী দোহা আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের ব্যস্ততম এবং আধুনিক নগরী। যেখানে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় নানা বয়সী কাতারী নাগরিক, অভিবাসী ও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে এই মোহনা। আরব উপসাগরে ভেসে বেড়ানোর জন্য নৌকাভ্রমণের জন্য জড়ো হয় তারা। দোহায় বিকেলের পর কর্নিশে গেলে দেখা মিলবে সারি সারি আরব সাম্পানের। নানা আকারের এসব সাম্পান কাঠের তৈরি। ওপরে ছাদ ও নিচে দুই পাশজুড়ে চেয়ার।
আকৃতি অনুযায়ী ২০-৫০ জন যাত্রী বসতে পারেন একেকটি সাম্পানে। সাগর ভ্রমণের জন্য তৈরি ইঞ্জিনচালিত এসব কাঠের নৌকাকে আরবিতে বলা হয় সাফিনা, কাওয়ারেব অথবা মারকাব। বর্তমানে দোহার কর্নিশে আছে মোট ১২৫টি সাম্পান। এর মধ্যে ১১৫টি পরিচালনা করছেন বাংলাদেশিরা। প্রতিটি সাম্পানে রয়েছেন চালক, সহায়তাকারী ও ব্যবস্থাপক। তাঁদের বেশির ভাগই চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার। নির্ধারিত ভাড়ায় এসব সাম্পান সাগরে ভেসে বেড়ায়। যাত্রীদের কাছ থেকে ঘণ্টাপ্রতি সর্বোচ্চ তিন শ রিয়াল ভাড়া নিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা।
এক বাংলাদেশী মাঝির তথ্যমতে, কাতারের অন্যান্য খাতে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারতীয় বা অন্যান্য দেশীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়, এখানে তেমন নেই। বরং নির্বিঘ্নে ঝামেলা ছাড়া ব্যবসা করা যাচ্ছে। কাতার সরকারের নীতিমালাও অত্যন্ত পর্যটনবান্ধব। ফলে কোনো অতিরিক্ত কর বা আইনি ঝামেলা নেই এখানে। বিকেল চারটা থেকে রাত দুটা পর্যন্ত নৌকাগুলো যাত্রীদের সেবা দিয়ে থাকে।
গরমকালে তাপমাত্রার কারণে যাত্রী ও পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও, অন্য সময় কাজের চাপ বেড়ে যায়। আরব সাগরের বুকে ঐতিহ্যবাহী এসব সাম্পান ভ্রমনে নানা বয়সের নাগরিক, অভিবাসী ও পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে কর্নিশের এই সাম্পান ঘাটে। বাংলাদেশি সাম্পানওয়ালদের ভীনদেশের সাগরে এরকম বিচিত্র ও দুঃসাহসী পেশা মুগ্ধ ও গর্বিত করে আমাদের।
Like this:
Like Loading...