লাইনে মালদোভা থেকে আসা দুই বয়োজ্যেষ্ঠ নারী ছিলেন৷ তাদের পাশেই বেঞ্চে বসে ছিলেন সোমালিয়া থেকে আসা এক ব্যক্তি৷ কাছেই পাকিস্তান থেকে আসা পাঁচ তরুণ উচ্চস্বরে আড্ডা দিচ্ছেলেন৷ তাদের পেছনে ছিলেন ভিয়েতনাম থেকে আসা দুই অন্তঃসত্ত্বা নারী৷
এরা সবাই সেই নতুন আসা দশ হাজারের বেশি অভিবাসীদের কয়েকজন যারা চলতি বছর জার্মানির রাজধানী বার্লিনে এসেছেন আশ্রয় পাওয়ার আশায়৷ এমন এক সময় তাদের এই আগমন যখন শহরটিতে আবাসন সংকট সৃষ্টি হয়েছে৷
আমরা গতবছর যা প্রত্যাশা করেছিলাম তারচেয়ে অনেকে বড় সংখ্যা এটি,’’ বলেন বার্লিনের শরণার্থী কার্যালয়ের মুখপাত্র জাসা লাগেনবাখ্৷
একসময় মানসিক হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা রাইনিকেনডর্ফের এই ভবনটি ২০১৯ সাল থেকে শরণার্থীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এখানে এক হাজারের মতো অভিবাসীকে আশ্রয় দেয়া যায়৷ কেন্দ্রটি বর্তমানে পূর্ণ হয়ে আছে৷
কর্তৃপক্ষ সেখানকার গির্জায় আরো ৮০টি বিছানা যোগ করেছে৷ বার্লিনে এই ভবন ছাড়াও আরো ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে৷ কিন্তু সেগুলোও পূর্ণ হয়ে আছে৷
২০১৫ সালে দশ লাখের বেশি মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আলোচনায় আসে জার্মানি৷ গতবছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর অনেক ইউক্রেনীয়কে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি৷
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপের কেন্দ্রের দেশটিতে৷ জার্মানির উগ্র ডানপন্থি দিল এএফডি এই ইস্যুর রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাচ্ছে৷ তাদের প্রতি জনসমর্থনও বাড়ছে৷ অন্যদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে ক্ষমতাসীন জোট সরকারকে৷
লাগেনবাখ্ বলেন, ‘‘দুই বছর করোনা সংকটের পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বলতে গেলে ঘর গরম রাখার জ্বালানি, গ্যাস, এবং খাবারসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে৷ এরকম পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে নতুন আগতদের আশ্রয় দিতে রাজি করানো বেশ কঠিন ব্যাপার৷’’
তবে, অভিবাসীদের প্রতি ক্রমশ বিরূপ মনোভাব বাড়ার লক্ষণ দেখা গেলেও যারা এদেশে আশ্রয় চাচ্ছেন তারা বিষয়টিকে তেমন একটা আমলে নিচ্ছেন না৷ বরং জার্মানিতে আশ্রয় পাওয়াটাই তাদের কাছে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে৷