ইউরোপের দেশ গ্রিসে শ্রমবাজারে চাহিদা মেটাতে অভিবাসীদের জন্য একটি বড় নিয়মিতকরণ কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে। এতে প্রায় তিন লাখ অভিবাসী বৈধতার সুযোগ পাবেন, যারা অনথিভুক্ত বা যাদের বসবাসের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কৃষি, নির্মাণ এবং পর্যটনে শ্রমবাজারের ঘাটতি পূরণে এসব অনিয়মিত অভিবাসীদের নিয়মিত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে দেশটি।
গত মঙ্গলবার গ্রিসের রাষ্ট্রীয় বেতারে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিবাসনমন্ত্রী দিমিত্রিস কাইরিদিস এ কথা জানান। তিনি বলেন, কৃষি, নির্মাণ ও পর্যটন শিল্পে কর্মী সংকট দূর করতে অন্তত তিন লাখ অনথিভুক্ত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ রেসিডেন্স পারমিটধারীদের বৈধতা দেওয়া হতে পারে।
ইনফোমাইগ্রেন্টসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ইতালির নেওয়া সিদ্ধান্তের আলোকেই গ্রিসের বর্তমান সরকার অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধতা দিতে চায়। গ্রিসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন দেশটির মধ্য ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস। আলোচনায় অংশ নেন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা। বৈঠকে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
অভিবাসনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আরও বেশিসংখ্যক অনিয়মিত (অভিবাসী) প্রবাহের জন্য নতুন প্রণোদনা তৈরি করতে চাই না। কারণ এটি বিপজ্জনক। অন্যদিকে, আমরা কালো থেকে সাদাতে যেতে চাই। অঘোষিত থেকে ঘোষিত শ্রমে যেতে চাই। কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে শ্রম ঘাটতি মেটাতে চাই।’
কাইরিদিস বলেছেন, কর্মী সংকটের কারণে গ্রিসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর থেসালোনিকিতে একটি পাতাল রেল নির্মাণ এবং ক্রিটে দ্বীপে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণসহ কয়েকটি জনসংশ্লিষ্ট প্রকল্প ধীর গতিতে এগোচ্ছে।
যখন তুরস্ক হয়ে গ্রিসে অভিবাসী আসার হার যখন বেড়ে গেলো, তখনই এমন পরিকল্পনার কথা জানাল গ্রিস সরকার। এমনকি, মঙ্গলবারও গ্রিসের পূর্বাঞ্চলীয় দুটি দ্বীপ থেকে শখানেক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামোস দ্বীপের কাছে ৪৫ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে গ্রিক উপকূলরক্ষীরা। এই ৪৫ জনের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ, নয়জন নারী, ১৪ জন কিশোর ও আটজন কিশোরী রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ নিখোঁজ হয়নি বলে জানা গেছে।
গ্রিক কোস্ট গার্ড আরও জানিয়েছে, লেসবোসে অপর একটি নৌকা থেকে আরও ৫৪ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে। একইদিনে, কোস দ্বীপ থেকেও উদ্ধার করা হয়েছে দুই অভিবাসনপ্রত্যাশীকে। সাম্প্রতিককালে অভিবাসী আগমনের হার বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে জরুরি আর্থিক সহায়তা চেয়েছে গ্রিস।