মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার একই নীতি গ্রহণ করতে যাচ্ছে কানাডা। ঘোষণা দেবে না, তবে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের ভিসা দেবে না দেশটি। কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নিজ দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কাউকে ভিসা দেয় না কানাডা। কেউ কানাডার ভিসার জন্য আবেদন করলে তাঁকে বিস্তারিত তথ্য দিতে হয় আবেদনের সঙ্গে। সেই আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই করেই ভিসা দিয়ে থাকে দেশটি। দেশটি যদি মনে করে, তাদের দেশের নাগরিকত্ব নেই এমন কেউ কানাডা গিয়ে থেকে যাবে বা কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত; ব্যাংকে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে থাকে দেশটি।
ঢাকার হাইকমিশনের একজন বলেন, আমাদের অবস্থান হচ্ছে– মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের আমরা ভিসা দিই না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো আমরা ঘোষণা দিয়ে করি না।
তাহলে সংশ্লিষ্টরা কীভাবে বুঝবে বিষয়টি– জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএসের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আমরা ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।
এ সময় কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি আবেদন খতিয়ে দেখা হয়, সেই ব্যক্তি কোনো রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা। এর পরই ভিসা দেওয়া হয়। কানাডা আগে থেকেই একটি অবস্থান নিয়ে রেখেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত এবং চিহ্নিত অপরাধীদের ভিসা দেবে না।
কানাডার মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংজ্ঞার মধ্যে নির্বাচনে ভয়ভীতি দেখানো, সহিংসতার সঙ্গে জড়িত বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা বা ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো বিষয়গুলো রয়েছে কিনা– জানতে চাইলে এর বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি হাইকমিশনের সূত্র। তিনি বলেন, বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা নিয়ে যা জানানো হয়, তা হলো কীভাবে ভিসা পাওয়া যাবে। কানাডার সরকারি ওয়েবসাইটেও ঠিক এমনটিই দেওয়া রয়েছে, কারা কানাডার সীমানার ভেতর কী শর্তে প্রবেশ করতে পারবেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বা কারা কারা ভিসা পাবেন না, তা বিশ্বের কোনো দেশই সহজে প্রকাশ করে না। বিষয়গুলো গোপনীয়।
গত ২৪ মে বাংলাদেশ নিয়ে ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে দেশটি। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।