শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

কক্সবাজারে হানিমুন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৩

বিয়ের অভিজ্ঞতাটা একেকজনের একেক রকম। বিয়ের আগে শুনেছি মানুষ দুই রকম, জীবিত এবং বিবাহিত। তবুও দিল্লীকা লাড্ডু না খেয়ে পস্তানোর চেয়ে খেয়ে পস্তানোই ভালো মনে করে গত মাসে বিয়ে করেই ফেললাম।

বিয়ের পরের অভিজ্ঞতা সবারই ভালো হয় তাই এ নিয়ে কথা বাড়াবো না। আজকে বরং আমার হানিমুনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। অফিস থেকে ছুটি ম্যানেজ করতে না পারায় অগত্যা দেশেই হানিমুন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আর দেশে হানিমুন করতে গেলে কক্সবাজার এর উপর তো কিছু নাই।

নেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে হোটেল বুক করলাম ওশেন প্যারাডাইসে। দেখলাম আমার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে পিক সিজনেও ওই হোটেলে ৩৫% ডিসকাউন্ট! আর দেরি না করে একদিন চলে গেলাম নতুন বউকে নিয়ে কক্সবাজার।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে নতুন বউকে নিয়ে ঘোরার যে আনন্দ তা অবিবাহিতরা বুঝবে না

বিচে ঝাপাঝাপি করে গেলাম হোটেলের সুইমিং পুলে। পুলটা এককথায় অসাধারণ। এরপর লাঞ্চ করে সোজা হোটেল রুমে। এরপরের কথাগুলো না হয় বাদ দেই

বিকেলে হোটেলের ছাদে বসে কিংবা বারান্দায় বসে সমুদ্রের গর্জন শোনার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। হোটেলের আতিথেয়তা ছিল অসাধারণ। আর লাঞ্চ, ডিনার কিংবা পুলে সবজায়গায় এত এত ডিসকাউন্ট যে বউয়ের সামনে ভালই পার্ট নিলাম!

পরেরদিন গেলাম হিমছড়ি। ব্যাটারি চালিত ইজি বাইকে করে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের ধার ঘেঁষে যাওয়ার কোন তুলনা হতে পারে না। এর প্রাকৃতিক দৃশ্য এত মন-মুগ্ধ যে দেশের বাইরে যেতে না পারার আফসোস আর থাকল না। হিমছড়ির ঝরনা দেখলাম ঘুরে ঘুরে। মনে হল যেন ঠিক বাংলাদেশ না, অন্য কোন দেশে চলে এসেছি। পাহাড়, ঝরনা সবকিছু মিলিয়ে এমন নৈসর্গিক দৃশ্য নিয়ে যায় আদিম কোন পৃথিবীতে। ঘোরাঘুরি শেষে বিকেলে ফিরে এলাম।

সন্ধ্যায় গেলাম বার্মিজ মার্কেট। আঁচার যে এত রকম হতে পারে আমার ধারণা ছিল না। এতদিন শুধু শুনেছি কিন্তু সেদিন দেখলাম। শুধু আঁচারেরই অনেক গুলো বিশাল বিশাল দোকান, আর ছোট ছোট দোকান তো অগুনতি। এরপর টুকটাক হরেক রকম পণ্য। শো-পিজ থেকে শুরু করে জামাকাপড়, কি নেই! আর দামও খুব সস্তা। ইচ্ছে ছিল একটা বার্মিজ পাতার সিগারেট কিনে খাব কিন্তু বউয়ের জন্য পারলাম না। যাইহোক বাসার সবার জন্যে টুকটাক শপিং করে শহরটা একটু ঘুরে দেখলাম। খুব ছিমছাম পরিচ্ছন্ন শহর। ভ্রমনপিপাশু পর্যটকদের জন্যে আদর্শ যায়গা নিঃসন্দেহে। ঘুরাঘুরি শেষে ফিরে গেলাম হোটেলে।

এর পরেরদিন খুব ভোরে গেলাম ইনানি বিচ। ইনানি যাওয়ার পুরোটা পথই প্রচণ্ড মনোমুগ্ধকর। খুব ভোরে গেলে নাকি প্রবাল প্রাচীর দেখা যায় তবে পথে আমাদের দেরি হয়ে যাওয়ায় আর সেগুলো দেখা হল না। তবে সেন্ট মারটিন না যেতে পারার আক্ষেপ কিছুটা হলেও ঘুচল। ফিরতি পথে ইজি বাইকে করে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতে হোটেলে ফিরলাম। পরের দিন আবার ফিরে যেতে হবে ব্যস্ত ঢাকায়, মাথায় তখন শুধু এই আক্ষেপ।

সময় থাকলে কিংবা নতুন বিয়ে করলে ঘুরে আসুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমি থেকে। সঞ্চয় করে আসুন কিছু আদিম সৌন্দর্যের অভিজ্ঞতা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com