বিমানে ভ্রমণ কেবল আরামদাইয়কই নয়, সময়ও কমিয়ে দেয়। সময় সাশ্রয় করতেই আমাদের বেশিরভাগ ভ্রমণ ফ্লাইটের মাধ্যমে হয়। যেখানে বাসে বা ট্রেনে এক জায়গাতে যেতে আমাদের ৮-১০ ঘন্টা লেগে যায়, সেখানে বিমানে আমরা ৩০-৪০ মিনিটে পৌঁছে যেতে পারে। এই দ্রুতগতির বিশ্বে, কোনো ফ্লাইট না নিয়ে আপনি কি বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের কথা ভাবতে পারেন?
টরবজর্ন ‘থর’ পেডারসন, একটি অকল্পনীয় কৃতিত্বটি অর্জন করেছেন। যিনি তার পরিবার, চাকরি এবং বান্ধবীকে পিছনে ফেলে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি ২০১৩ সালের ১০ ই অক্টোবর এই মহাকাব্যিক ভ্রমণ শুরু করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল বিমান ছাড়াই বিশ্বের প্রতিটি দেশ ভ্রমণ করা।
পেডারসন ভ্রমণের সময় নিজের জন্য তিনটি নিয়ম নির্ধারণ করেছিলেন। প্রতিটি দেশে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা ব্যয় করবেন। দিনে ২০ ডলার উপার্জন করবেন। ভ্রমণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশে ফিরবেন না। অবশেষে, ১০ বছরে পেডারসন সফলভাবে বিশ্বের সমস্ত দেশ ভ্রমণ করতে সক্ষম হন। ২৪ শে মে, ২০২৩ এ তিনি তার দেশ ডেনমার্কে ফিরে যান। সর্বশেষ তিনি মালদ্বীপে সফর করেছিলেন।
মালদ্বীপে নিজের সাফল্য উদযাপন করেছেন ৪৪ বছর বয়সী পেডারসন। সেখান থেকে ১৩০০ ফুট লম্বা কন্টেইনার জাহাজ ‘এমভি মিলান মার্স্ক’-এ চড়ে শ্রীলংকা যান তিনি। সেখান থেকে মালয়েশিয়া যান । প্রায় ৩৩ দিন পথ পাড়ি দিয়ে নিজের দেশ ডেনমার্কে পৌঁছান তিনি।
ডেনমার্কে পৌঁছানোর পরে, পেডারসন ২৬ জুলাই, ২০২৩-এ আরহুস বন্দরের গ্যাংওয়েতে হাঁটছিলেন। যেখানে তার ভাই-বোন, বাবা, সমর্থক সহ প্রায় ১৫০ জন মানুষ তাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন। তার প্রত্যাবর্তন উদযাপনের জন্য অপেক্ষা করছিল।
পেডারসন তার এই ভ্রমণ সম্পর্কে জানান যে, তার এই বিশ্ব ভ্রমণ মোটেও মসৃণ ছিল না। তিনি আইসল্যান্ড থেকে কানাডা যাওয়ার সময় আটলান্টিক অতিক্রম করেন। এ সময় চার দিনের তীব্র ঝড়ের কবলে পড়েছিলেন। সেই ঝড় থেকে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। ঘানায় ভ্রমণকালে ম্যালেরিয়ার একটি মারাত্মক লড়াই কাটিয়ে ওঠেছিলেন। ভাঙা জাহাজ বা ক্লান্তিকর আমলাতন্ত্রের কারণে অনেক নৌযানের সময়সূচীও তার পরিবর্তন করতে হয়েছিল।
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া