ব্যাংকক শহরের আশপাশে চলাচলের জন্য জনপ্রিয় বাহন ‘টুকটুক’। স্থানীয় ও পর্যটকদের মধ্যে টুকটুকের বেশ চাহিদা রয়েছে। শহরের প্রায় সব সড়কে চোখে পড়ার মতো চলাচল করে এই বাহন। প্রতিদির প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ বাত আয় করে থাকেন টুকটুকের চালকেরা। বিভিন্ন শপিংমল, সড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা হয়। সেখান থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী লোকজন রিজার্ভ নেয়।
বাংলাদেশে সাধারণত রিকশা আর অটোরিকশার কিছু পার্থক্য রয়েছে। রিকশা বলতে পায়ের প্যাডেলচালিত তিন চাকার বাহন বোঝায়। আবার অটোরিকশা বলতে আমাদের দেশে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যানবাহন বোঝায়। এখন কিছু রিকশাও বের হয়েছে যেগুলো প্যাডেলের বদলে ব্যাটারিতে চলে। কাছাকাছি এবং কম খরচে যাওয়া আসা করার মাধ্যম হিসেবে রিকশা বা অটোরিকশার কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশি পর্যটক মো. ওমর শরীফ বলেন, আমি প্রায় সময় ব্যবসার কাজে থাইল্যান্ডে আসি। খুব বেশি দূরে না যাওয়া হলে ব্যাংকক শহরের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে টুকটুক ব্যবহার করে থাকি। ভাড়া সাশ্রয়, চড়তে আরামদায়ক। খোলামেলা হওয়ায় শহরটাকে ভালো করে দেখতে পারি। বেশি দূরে কোথাও গেলে ভাড়ায়চালিত টেক্সি ক্যাব ব্যবহার করে থাকি।
থাইল্যান্ড হচ্ছে পর্যটকদের একটি অন্যতম পছন্দের জায়গা। প্রত্যেক বছর হাজারো মানুষ দেশটিতে ভ্রমণের জন্য আসে। পর্যটকরা বেশিরভাগ এই অটোরিকশা বা টুকটুক ব্যবহার করেন। এগুলো চলার সময় অনেক দেখতে রংবেরঙর বাহারি এবং তিন চাকা বিশিষ্ট। টুকটুক অটোরিকশাগুলো সাধারণত সরু রাস্তায় চলাচলের জন্য খুবই উপযোগী।
থাইল্যান্ডের টুকটুক অটোরিকশা চলে অটো ইঞ্জিনের মাধ্যমে। এখন বাংলাদেশেও অনেক অটোরিকশা আছে যেগুলো এমন ব্যাটারিচালিত ইঞ্জিন দিয়ে তৈরি। থাইল্যান্ডে টুকটুক অটোরিকশা বেশি জনপ্রিয় কারণ, এগুলো দামে সস্তা এবং ওখানকার উষ্ণ আবহাওয়ায় এই রিকশায় চড়তে খুবই আরামদায়ক।
থাইল্যান্ডে বসবাস করা বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা মাসুদ চৌধুরী বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে ব্যাংককে বসবাস করছি। টুকটুক আমার চলার পথের নিত্যসঙ্গী। টুকটুক চলেও খুব দ্রুত গতিতে। অনেক সময় মালামাল আনা-নেওয়ার জন্য এটি ব্যবহার করে থাকি। এখানকার শত শত মানুষ এই টুকটুক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
ব্যাংককের ইসরাফাত এলাকার বাসিন্দা টুকটুকচালক আব্দুস সালাম বলেন, আগের থেকে ভাড়া পাওয়া কমেছে। এক সময় প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ বাত আয় হয়তো। টেক্সি ক্যাব বেড়ে যাওয়ায় এখন ৮০০ থেকে ১০০০ বাত আয় হয়। আমি আগে ভাড়ায় চালাতাম। গত তিন বছর আগে নিজে কিনেছি টুকটুক। আমার পরিবারে আয়ের একমাত্র উৎস এই বাহন।