রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪ অপরাহ্ন

যশোর বিমানবন্দরের টার্মিনাল খুলে দেওয়া হবে আগামী সোমবার

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩

যশোর বিমানবন্দরে ফ্লাইট, যাত্রী ও কার্গোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সেবা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছে বেবিচক।

এরই ধারাবাহিকতায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতি বছর গড়ে ১০ লাখ যাত্রী হ্যান্ডেলিং ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নান্দনিক ও মানসম্মত অভ্যন্তরীণ যাত্রী প্রান্তিক (বহির্গমন ভবন) নির্মাণ করেছে সংস্থাটি। দৃষ্টিনন্দন টার্মিনালটি যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে আগামী সোমবার।

এদিন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এই টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন বলে বেবিচক সূত্রে জানা গেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বেবিচকের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক সোহেল কামরুজ্জামান।

বেবিচক সূত্র জানায়, বর্তমানে যশোর বিমানবন্দরে প্রতিদিন গড়ে ১৬-১৮টি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান ওঠানামা করে। এ বিমানবন্দরে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৮.৯১ শতাংশ হারে যাত্রী ও কার্গোর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ হারে যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ২০৫০ সালে এ বিমানবন্দরে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করবে।

কিন্তু রানওয়েসহ নানা সীমাবদ্ধতার কারণে যাত্রী সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। এই সীমাবদ্ধতা দূর করে যশোর বিমানবন্দরের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে একাধিক প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে ফ্লাইট ও যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন তলাবিশিষ্ট টার্মিনালটি সংস্কার করে যাত্রীদের বসার জন্য ৩০০ চেয়ার, চেক ইন কাউন্টার ৮টি, ভিআইপি লাউঞ্জ, লাগেজ স্ক্যানিং মেশিন ৫টি, আর্চওয়ে ৫টি, কার পার্কিং এবং ভিআইপি কার পার্কিংসহ নানা সংস্কার করা হয়েছে। রানওয়ের লাইটিং সিস্টেমের উন্নয়ন, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন ও আবাসিক ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান প্রান্তিক ভবন নবরূপকরণ, কার্গো এয়ারক্রাফট পার্কিং, অ্যাপ্রোন সম্প্রসারণ এবং ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণ, পানি শোধনাগার নির্মাণ, জেনারেটর ও বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন আপগ্রেডেশন, যোগাযোগ যন্ত্রাবলী ও নিরাপত্তা যন্ত্রাবলী স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া যশোর বিমানবন্দর রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফল্ট কনক্রিট ওভালেকরণের মাধ্যমে শক্তি বৃদ্ধিকরণ, পুরোনো অ্যাপ্রোন পুনঃনির্মাণ, আইএলএস স্থাপন, নিরাপদ বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য নতুন লাইটিং সিস্টেম স্থাপন, বিমানবন্দরে আগমনী যাত্রীদের জন্য আগমনী হলের রেনোভেশনসহ কনভেয়ার বেল্ট স্থাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

বেবিচক জানায়, যশোর বিমানবন্দর হলো দেশের যশোর শহরে অবস্থিত একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। ১৯৪২ সালে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে যশোর বিমান ঘাঁটির নির্মাণকাজ শুরু করে। ছয় মাসের মধ্যে ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর উপযোগী একটি বিমানবন্দর চালু হয়। ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এই বিমান ঘাঁটি সচল ছিল। এরপর ভারত ভাগ হলে ১৯৫০ সালে যশোরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর ঘাঁটি স্থাপন করে ১৯৫৬ সালে যশোরে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেয়। তবে যশোরে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর চালু হয় ১৯৬০ সালে।

পিআইএ চট্টগ্রাম, যশোর ও ঈশ্বরদী থেকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। বর্তমানে বিমানবন্দরটি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এ বিমানবন্দরকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, যশোরের অংশ হিসাবে এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করে। বর্তমানে এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ রুটে যাতায়াত করা যায়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যশোর বিমানবন্দর ব্যবহার করছে। পাশাপাশি বিমানবাহিনীর এয়ারক্রাফট দেশে ফ্লাই করছে। বিগত প্রায় অর্ধশত বছরেরও অধিক সময় একটি পূর্ণ বিমানবন্দর হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, যশোর বিমানবন্দরে যাত্রী সেবা বাড়ানোর জন্য নানা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বহির্গমন ভবনে যাত্রীদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com