শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৪ অপরাহ্ন

লাখো গাছে সবুজ হবে মেঘনাপারের বন্দরনগরী

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩
উপজেলা পরিষদের মাঠজুড়ে সবুজ আর সবুজ। লাখো গাছের চারার সমারোহ। চার জাতের ঔষধি, সাত জাতের ফুল, পাঁচ জাতের বনজ ও ১২ জাতের ফলজ গাছ। কী নেই সেখানে! হরীতকী, বহেড়া, দেশি নিম, অর্জুন, কামিনী, হাস্নাহেনা, বেলি, গন্ধরাজ, টগর, এলমোরা, রঙ্গন, আকাশমণি, মেহগনি, চিত্তাস, কড়ই, আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, আমলকী, জলপাই, জাম্বুরা, আতা, ড্রাগন, তাল ও বরই।

গাছের চারাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে দেশের অন্তত সাত-আটটি জেলা থেকে। লাগানো হবে মেঘনা নদীর পারের বন্দরনগরী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। লাখো গাছে সবুজায়িত হবে মেঘনাপারের এ অঞ্চল। উপজেলার মোট ৭৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫৫ হাজার শিক্ষার্থীর বাড়ি, আশ্রয়ণ প্রকল্প, সরকারি দপ্তর, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এসব গাছের চারা লাগানো হবে।

মঙ্গলবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপজেলা প্রশাসনের এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু চারা বিতরণ করেন ও পরিষদের মাঠে গাছের চারা রোপণ করেন।

জেলা প্রশাসক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘অন্তত যদি ৮০ ভাগ চারাও বড় হয়ে ওঠে তাতেই আমাদের এ কর্মসূচি সফল হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সি, ভাইস চেয়ারম্যান মো. সেলিম পারভেজ, সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমীন।

উপস্থিত সুধীজনরা এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তারা মনে করছেন, পরিবেশ রক্ষায় একসঙ্গে এত গাছ লাগানোর উদ্যোগটি বেশ কাজে লাগবে। তবে গাছ বিতরণের পর যেন এর তদারকি করা হয়, সে বিষয়ে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৫ দফা দিকনির্দেশনা, সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, রূপকল্প ৪১ বাস্তব রূপায়ণের নিমিত্তে বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ কর্মসূচি ‘এটপি উচ্চ আয় দেশ গ্রামীণ উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য টেকসই কৃষিতে’ অবদান রাখবে। উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণে এ কর্মসূচি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠান শেষে গাছের চারা দেখতে থাকা তাসিফ ও তৌসিফ নামে দুই শিক্ষার্থীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা টেনে নেয় সানিয়া ও তাইবা নামে দুই শিক্ষার্থী। সানিয়া ও তাইবা বলে, ‘গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। সরকারিভাবে গাছ পেলে আমরা যত্ন নেব। তাসিফ ও তৌসিফ মাথা নেড়ে এ কথায় সায় দেয়। তারা সবাই উপজেলার যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

কথা হয় চরচারতলা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাদরাসার জন্যও গাছের চারা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উদ্যোগটি খুবই প্রশংসার দাবিদার। বিশেষ করে তালগাছ বিতরণ করায় বজ্রপাত নিরোধে বেশ কাজে লাগবে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শওকত আকবর খান বলেন, ‘মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কলেজের জন্য ৩০ হাজার এবং ৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২৫ হাজার গাছের চারা দেওয়া হচ্ছে। কোন বিদ্যালয়েরর শিক্ষার্থীরা কী ধরনের গাছ পাবে সে অনুযায়ী তালিকা ধরে বিতরণ করা হচ্ছে। স্কাউটস সদস্যরা এ কাজে সহায়তা করছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি জেলা থেকে এসব গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। দুই দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সবার মাঝে এসব গাছ পৌঁছে দেওয়া হবে।’ সবাই যেন গাছের যত্ন নেন সেই আহ্বান জানান তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com